যতীন্দ্রমোহন বাগচী (Jatindramohan Bagchi)

যতীন্দ্রমোহন বাগচী একজন অন্যতম বাঙালি সাহিত্যিক ছিলেন। তিনি ২৭ সে, নভেম্বর ১৮৭৮ সালে নদিয়া জেলার জমশেরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি কর্মজীবনে তিনি একজন সম্পাদক হিসাবে অনেকটা সময় ধরে কাজ করেছেন। তার লেখার মধ্যে রবীন্দ্র সাহিত্যের একটা প্রভাব সবসময় খুঁজে পাওয়া গেছে। লেখা, রেখা, অপরাজিতা, বন্ধুর দান, জাগরণী ইত্যাদি তার কিছু বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। কাজলাদিদি, শ্রিকল, অন্ধ বধু, হাট তার কিছু অন্যতম কবিতা। এবং পথের সাথী তার একটি অন্যতম উপন্যাস। তিনি ১লা ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
শৈশব
যতীন্দ্রমোহন নদিয়া জেলার জমশেরপুরে জমিদার পরিবারে (বর্তমান বাগচী জমশেরপুর) জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস বলাগড় গ্রাম, হুগলি। তিনি তার প্রথম ডিগ্রি কলকাতার ডাফ কলেজ (বর্তমান স্কটিশ চার্চ কলেজ) থেকে নিয়েছিলেন।
কর্মজীবন
যতীন্দ্রমোহন সারদাচরণ মিত্রের ব্যক্তিগত সচিবরূপে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে কলকাতা কর্পোরেশনে নাটোর মহারাজের ব্যক্তিগত সচিব ও জমিদারির সুপারিনটেন্ডেন্ট পদে এবং কর কোম্পানি ও এফ.এন গুপ্ত কোম্পানির ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন।
সাহিত্য জীবন
যতীন্দ্রমোহন বহু সাহিত্যিক পত্রিকায় গঠনমূলক অবদান রেখেছেন। ১৯০৯ থেকে ১৯১৩ পর্যন্ত মানসী পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। ১৯২১ এবং ১৯২২ সালে তিনি যমুনা পত্রিকার যুগ্ন সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৮ পূর্বাচল পত্রিকার মালিক এবং সম্পাদক ছিলেন। তার রচনায় তার সমকালীন রবীন্দ্র সাহিত্যের প্রভাব লক্ষ্য করে যায়। তাকে রবীন্দ্র পরবর্তী বাংলা সাহিত্যের একজন প্রধান সাহিত্যিক হিসেবে বিবেচনা করে হয়। বাগচি ১৯৪৮ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।
পল্লী-প্রীতি যতীন্দ্রমোহন বাগচীর কবিমানসের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। “পথের পাঁচালী”র বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কবি জীবনানন্দ দাশের মত তার কাব্যবস্তু নিসর্গ-সৌন্দর্যে চিত্ররূপময়। গ্রাম বাঙলার শ্যামল স্নিগ্ধ রূপ উন্মোচনে তিনি প্রয়াসী হয়েছেন। গ্রাম জীবনের অতি সাধারণ বিষয় ও সুখ-দুঃখ তিনি সহজ সরল ভাষায় সহৃদয়তার সংগে তাৎপর্যমণ্ডিত করে প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ
তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হলো : লেখা (১৯০৬), রেখা (১৯১০), অপরাজিতা (১৯১৫), নাগকেশর (১৯১৭), জাগরণী (১৯২২), নীহারিকা (১৯২৭), মহাভারতী (১৯৩৬) ইত্যাদি। রবীন্দ্রনাথ ও যুগসাহিত্য তাঁর একটি বিশেষ গদ্যগ্রন্থ। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান।
মৃত্যু
১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৮, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
Source : wikipedia