Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » যখন নামিবে আঁধার – মিসির আলি || Humayun Ahmed » Page 6

যখন নামিবে আঁধার – মিসির আলি || Humayun Ahmed

মল্লিক সাহেবের ছোট ছেলের স্ত্রী চম্পা এসেছে মিসির আলির কাছে। মল্লিক সাহেব এই ছেলের বউকেই ডাকতেন ছোট কুত্তি নামে।

মেয়েটি দেখতে কেমন মিসির আলি কিছুই বুঝলেন না। তার সারা শরীর গোলাপি রঙের বোরকায় ঢাকা। চোখ দেখা যাওয়ার কথা, তাও দেখা যাচ্ছে না। মশারির জালের আড়ালে চোখ। দুই হাতে কালো হাতমোজা। পায়ে টকটকে লাল লাল মোজা।

চাচাজি, আমার নাম চম্পা। আমি বক্কার স্ত্রী। আপনার কাছে বিশেষ প্রয়োজনে এসেছি।

যাকে দেখা যাচ্ছে না। তার সঙ্গে স্বস্তি নিয়ে কথা বলা যায় না। এই মেয়েটির সঙ্গে কথা বলা আর দূরের কারও সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলা একই জিনিস।

মিসির আলি বললেন, মা! তুমি বসো। প্রয়োজনটা কী বলো?

চম্পা বসল। মিসির আলি লক্ষ রাখলেন এই মেয়ে তার স্বামীর মতো পা নাচায় কি না। পা নাচাচ্ছে না।

মিসির আলি বললেন, তোমার কী জরুরি কথা বলো।

চম্পা বলল, আমার স্বামী আর ভাসুরকে হাজত থেকে ছাড়াবার ব্যবস্থা করে দেন। তারা সম্পূর্ণ নির্দোষ।

মিসির আলি বিব্রত গলায় বললেন, এরা দুজনই খুনের মামলার আসামি। খুনের কথা স্বীকার করেছে। পুলিশ এদের ছাড়বে না।

চম্পা বলল, খুন এরা করে নাই। এই দুই ভাই খুবই ভালো মানুষ। এরা পিঁপড়াও মারে না। খুন কি করবে! খুন আমি আর আমার বড় বোন পারুল আপা মিলে করেছি। উনার খাবারের সঙ্গে এন্টাসি মিশায়ে দিয়েছি।

নিজেকে সামলাতে মিসির আলির কিছুটা সময় লাগল। এই মেয়ে সহজ গলায় এইসব কী বলছে। মিসির আলি বললেন, এন্টাসি কী জিনিস?

ইঁদুর মারা বিষ। কোনো গন্ধ নাই। লেবুর শরবতের সঙ্গে মিশায়ে দিয়েছি। কয়েক চুমুক দিয়ে উনি চিৎ হয়ে পড়ে গেছেন। মৃত্যু হওয়ার আগেই দুই ভাই মিলে লাশ কুয়াতে ফেলেছে।

তোমরা দুই বোন পুলিশকে এই কথা বলতে চাও?

জি, চাচাজি।

তোমরা যে হত্যা-পরিকল্পনা করেছিলে এইটা কি ছক্কা-বক্কা জানত?

না। তাদের বলি নাই।

বিষ কে কিনে এনেছে?

ইঁদুর মারা বিষ ঘরে ছিল, কেউ কিনে নাই।

খুন করেছ কী জন্যে?

উনি খুব খারাপ লোক ছিলেন। সপ্তাহে একদিন উনার কাছে আমার কিংবা আমার বোনের যেতে হতো। রাতে থাকা লাগত। আমার বড়বোন কখনো থাকে নাই। আমি থেকেছি। কখনো বলেছি আমার নাম পারুল, কখনো বলেছি চম্পা। আমরা দুই বোন দেখতে একই রকম। উনি ধরতে পারেন নাই।

তোমার স্বামী বা ভাসুর এই ঘটনা জানে?

জি জানে।

মিসির আলি বললেন, তুমি আমাকে যা বলেছ। পুলিশকে কি তা বলতে পারবে?

পারব। ইনশাল্লাহ।

তোমাদের দু’বোনের কথা আমি পুলিশকে জানাতে পারি। তার আগে তোমার বড় বোন পারুলের সঙ্গে আমার কথা বলতে হবে।

আমি আপনাকে যা বলেছি। পারুল আপা সেই কথাই বলবে। আলাদা কিছু বলবে না।

তারপরেও তার সঙ্গে আমার কথা বলা প্রয়োজন।

চম্পা বলল, আমি চেষ্টা নিব উনাকে পাঠাতে। তবে চেষ্টায় কাজ হবে না। পারুল আপা কারও সঙ্গে কথা বলে না। চাচাজি, তাহলে আমি যাই। আসসালামু আলায়কুম।

মিসির আলি কিছু বললেন না। ঘটনা শুনে তিনি ধাক্কার মতো খেয়েছেন। ধাক্কা সামলাতে তার সময় লাগছে।

তিনি বড় বোন পারুলের অপেক্ষা করতে করতে সিগারেট ধরালেন। নিকোটিনের জট আলগা করার ক্ষমতা আছে। এই মুহুর্তে নিকোটিনের ধোঁয়া তার ওপর কাজ করছে না। জটি আলগা হচ্ছে না, বরং আরও পেঁচিয়ে যাচ্ছে।

পারুল এসেছে। ঠিক ছোটবোন চম্পার মতো বোরকা, মোজা, বোরকার রঙ কালো। পা এবং হাতের মোজার রঙও কালো। ছোটবোনের গা এবং বোরকা থেকে কোনো পারফিউমের গন্ধ আসে নি। বড়বোনের বোরকা থেকে হালকা পারফিউমের গন্ধ আসছে। লেবু ও চা-পাতার মিশ্র গন্ধের পারফিউম। ছোটবোনের গলা ঝনঝন করছিল। বড়বোনের গলা চাপা, কিছুটা খসখসে।

মিসির আলি বললেন, তোমার ছোটবোন আমাকে ভয়ংকর কিছু কথা শুনিয়েছে।

পারুল বলল, ভয়ংকর হলেও কথা সত্য। আপনার সঙ্গে যদি কোরান মজিদ থাকে, আমার হাতে দেন। আমি কোরান মজিদ মাথায় নিয়া বলব, ঘটনা সত্য।

তোমরা কি নিয়মিত নামাজ রোজা করো?

জি করি। আমরা দুই বোনই অনেক রাত জেগে ইবাদত বন্দেগি করি। তবে ইবাদত বন্দেগি শ্বশুরের আড়ালে করতে হয়। উনি পছন্দ করেন না। রাত তিনটা থেকে ফজরের ওয়াক্ত পর্যন্ত আমরা নামাজ পড়ি। রাত তিনটায় ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে রাখি।

মিসির আলির কাছে দুটা বিষয় স্পষ্ট হলো। রাত তিনটায় তাঁর নিজের ঘুম ভাঙার রহস্য তার একটি। চম্পা-পারুল এই দুই বোন স্কিজোফ্ৰেনিয়ার রোগী, তাও এখন স্পষ্ট। এই ধরনের রোগীদের প্রধান লক্ষণ হলো ধৰ্মকর্মে চূড়ান্ত আসক্তি।

মিসির আলি সিগারেট ধরাতে ধরাতে বললেন, শ্বশুরের সঙ্গে রাত্রি যাপনের কথাটাও কি সত্যি?

জি চাচাজি। তবে আমি কখনো উনার কাছে যাই নি। চম্পা গিয়েছে। কখনো চম্পা হিসেবে গেছে, কখনো পারুল হিসেবে। চম্পার গর্ভে উনার একটি ছেলেও হয়েছিল। নাম কিসমত। এই ছেলেটিই নিউমোনিয়ায় মারা গেছে।

মিসির আলি বললেন, আমি শুনেছিলাম ছেলেটি তোমার।

পারুল বলল, আমার কোনো ছেলেপুলে নাই। আমি নিঃসন্তান। চম্পার দু’বার যমজ সন্তান হয়েছে। একবার হলো এক সন্তান। কিসমত।

মিসির আলি বললেন, নিউমোনিয়ার চিকিৎসা কি হয়েছিল?

আসল চিকিৎসা হয় নাই। ছেলের বাপ অৰ্থাৎ আমার শ্বশুর সাহেব হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করেছেন। তার নিউমোনিয়া কীভাবে হয়েছিল জানতে চান?

বলো শুনি।

পারুল বলল, আমি আর চম্পা এই দুজনে শলাপরামর্শ করে কিসমতকে ছাদে খালি গায়ে দুই ঘণ্টা শুইয়ে রেখেছি, এতেই কাজ হয়েছে। পাপ বিদায়।

পারুল খিলখিল করে অনেকক্ষণ হাসল। তার হাসি থামার পর মিসির আলি শান্ত গলায় বললেন, তুমি পারুল না, তুমি চম্পা! পারুল সেজে দ্বিতীয়বার আমার কাছে এসেছ। গলা চেপে কথা বলছি। মাঝে মাঝে চেপে কথা বলার ব্যাপারটা ভুলে যাচ্ছ বলে মূল স্বর চলে আসছে। চম্পা! তুমি আমাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছ। কেন করছ জানি না। জানতে চাচ্ছি না। তুমি এখন বিদায় হও। তোমার আর কোনো গল্প শুনতে আমি রাজি না। আমার ধারণা, তোমরা দুই বোনই অসুস্থ। স্কিজোফ্রেনিয়ার রোগী। তোমাদের কোনো কথাই বিশ্বাসযোগ্য না।

চাচাজি, পারুল আপা কখনো কোথাও যায় না। কারও সঙ্গে কথাও বলে না। এই জন্যে বাধ্য হয়ে পারুল সেজে এসেছি। আপনি দয়া করে আমাদের একটু সাহায্য করুন।

মিসির আলি বললেন, আমার সাহায্যের তোমার প্রয়োজন নেই। আমাকে যা বলেছ পুলিশকে তা-ই বলবে। পুলিশ তদন্ত করে বের করবে। ঘটনা কী?

চাচাজি! আমি এখন আপনাকে একটা জরুরি কথা বলব।

মিসির আলি বললেন, আমি তোমার কোনো কথাই শুনব না।

তাহলে কিন্তু ছোট্ট একটা সমস্যা হবে।

বলো কী সমস্যা?

আপনি ভাড়াটে হিসেবে এখানে আর থাকতে পারবেন না। এখন সবকিছু চালাচ্ছে আমার বড়বোন পারুল।

মিসির আলি বললেন, সমস্যা নেই, আমি বাড়ি ছেড়ে দিব।

আজকেই ছাড়তে হবে। মিসির আলি হেসে ফেলে বললেন, পুরো মাসের ভাড়া আমার দেওয়া, তারপরেও আজ রাতেই বাড়ি ছেড়ে দেব।

মিসির আলির মনে হলো তিনি অতি বৃদ্ধ মানুষের মতো আচরণ করছেন। অতি বৃদ্ধরা অকারণে অভিমান করে। তিনিও তা-ই করছেন। চম্পা মেয়েটির ওপর অভিমান ঘটিত রাগ করেছেন। চট করে কারও ওপর রেগে যাওয়া তার স্বভাবেই ছিল না। এ রকম কেন হচ্ছে?

আজকের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে দিতে হলে নতুন বাসা খুঁজে বের করতে হবে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা শহরে বাড়ি খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

মিসির আলি অনেক খুঁজে পেতে মালিবাগের এক হোটেলে এসে উঠলেন। হোটেলের নাম ‘মুন হাউস’। হোটেলের মালিক কবীর সাহেবকে মিসির আলির কাছে যথেষ্টই ভদ্রলোক বলে মনে হলো। তিনি মিসির আলির বিছানা, বালিশ, সিঙ্গেল খাট, চেয়ার-টেবিল গুদামঘরে রাখার ব্যবস্থা করলেন। মিসির আলির বারো ইঞ্চি কালার টিভি তার ঘরেই লাগানোর ব্যবস্থা করলেন।

মুন হাউসে খাবারের ব্যবস্থা নেই। হোটেলের বয় টিফিন ক্যারিয়ারে করে বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসে। কবীর সাহেব মিসির আলিকে এই ঝামেলা থেকেও মুক্তি দিলেন। হোটেলের কর্মচারীদের জন্যে যে খাবার তৈরি হয়, তার সঙ্গে মিসির আলি এবং জসুও যুক্ত হয়ে গেল।

হোটেলে মিসির আলির রুম নম্বর ২১১ বি। ২১১-র দুটা ঘর আছে। একটা ২১১ এ, আরেকটা ২১১ বি। এ-বি দিয়ে রুম নম্বর দেওয়ার ব্যাপারটি তিনি বুঝতে পারলেন না। নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে। আমাদের এই জগৎ কার্যকারণের জগৎ। কাৰ্যকারণ ছাড়া এখানে কিছুই হয় না। প্রথমে Cause, তারপর effect। মিসির আলির ঘরটা বেশ বড়। ঘরে দুটা জানোলা। একটা পশ্চিমে আরেকটা পুবে। পশ্চিমের জানোলা খুললে প্ৰকাণ্ড এক কাঁঠালগাছ দেখা যায়। কাঁঠালগাছে কাক বাসা বেঁধেছে। জানালা দিয়ে তাকালে কাকের বাসায় চারটা ডিম দেখা যায়। কোকিলরা সন্তান বড় করার ঝামেলা এড়ানোর জন্যে কাকের বাসায় ডিম পাড়ে। এখানে কি কোনো কোকিলের ডিম আছে? মিসির আলি ঠিক করলেন, ডিম থেকে ছানা বের না হওয়া পর্যন্ত তিনি এই হোটেলেই থাকবেন। নতুন বাসা খুঁজে বেড়াবেন না।

রাত ন’টার দিকে হোটেলের মালিক নিজেই টিফিন ক্যারিয়ারে করে খাবার নিয়ে এলেন।

গরম ভাত
মুগের ডাল

পটল ভাজি
কৈ মাছের ঝোল।

কবীর সাহেব বললেন, আয়োজন খারাপ, কিন্তু খেয়ে আনন্দ পাবেন। বাবুর্চির রান্না খুবই ভালো। সে যদি কাঁঠাল পাতার ঝোল রাধে, সেই ঝোল খেয়েও বলবেন, অসাধারণ! এই বাবুর্চি আবার ভালো পা দাবাতে পারে। আপনার যে বয়স তাতে পা দাবালে শরীর ভালো থাকবে। তাকে বলে দেব সে প্রতি রাতে এসে কিছুক্ষণ আপনার পা দাবাবে।

মিসির আলি বললেন, আমার পা দাবাতে হবে না। শারীরিক এই আরাম আমি নেব না। আপনি আমার প্রতি যে বাড়তি মমতা দেখাচ্ছেন, তার কারণটা কী বলবেন?

কবীর সাহেব বললেন, বাড়তি মমতা দেখাচ্ছি না।

হোটেলের সব বোর্ডারের জন্যে আপনি নিশ্চয়ই খাবারের ব্যবস্থা করেন না, বা নিজে তার জন্যে টিফিন ক্যারিয়ারে করে খাবার আনেন না।

কবীর সাহেব বললেন, আপনার চেহারা, কথা বলার ভঙ্গি, হাঁটা সবই আমার বাবার মতো। আমি আপনাকে দেখে চমকে উঠেছিলাম।

আপনার বাবা কবে মারা গেছেন?

আমার বয়স যখন পাঁচ তখন।

মিসির আলি বললেন, পাঁচ বছর বয়সের কথা পরে মনে থাকে না। আপনার বাবার বিষয়ের খুব কম স্মৃতিই আপনার আছে। এই কারণেই অনেকের সঙ্গে আপনি আপনার বাবার চেহারার মিল পাবেন। আমার আগেও নিশ্চয়ই অনেকের সঙ্গে আপনি আপনার বাবার চেহারার মিল পেয়েছেন। তাই না?

জি।

মিসির আলি রাতের খাবার খেয়ে সত্যি সত্যি আনন্দ পেলেন। পটল ভজিকে তিনি এত দিন। অখাদ্যের পর্যায়ে রেখেছিলেন। আজ মনে হলো এই ভাজি খাদ্যতালিকায় রোজ থাকতে পারে।

খাওয়া শেষ হওয়ার পর কবীর সাহেব বললেন, পান খাওয়ার অভ্যাস কি আছে?

মিসির আলি বললেন, নাই। তবে আজ একটা পান খাব। তৃপ্তি করে খাবার খেলে কেন জানি না জর্দা দিয়ে পান খেতে ইচ্ছা করে।

পান ছাড়া আর কিছু কি লাগবে?

একটা বাইনোকুলার কি জোগাড় করে দিতে পারবেন?

বাইনোকুলার দিয়ে কী করবেন?

কাঁঠালগাছে একটা কাক বাসা বেঁধেছে। ডিম পেড়েছে। ডিমে তা দিচ্ছে। ডিম থেকে বাচ্চা বের হওয়ার দৃশ্যটা দেখব।

কবীর সাহেব বললেন, পান এনে দিচ্ছি। সকালবেলা বাইনোকুলার এনে দেব। চলবে না?

অবশ্যই চলবে। থ্যাংক য়্যু।

কবীর সাহেব হাসি হাসি মুখে তাকিয়ে আছেন। তার হাসি দেখে মিসির আলির ভালো লাগল।

হোটেল জসুর খুবই পছন্দ হয়েছে। হোটেলের সব কর্মচারী বড় একটা ঘরে থাকে। জসুর ব্যবস্থা হয়েছে সেখানে। বিনিময়ে বাবুর্চির ফুটফরমাশ খাটবে। জসুর মাথায় ঢুকেছে সে বাবুর্চি হবে। সে স্বপ্নে দেখেছে, বিশাল এক রেস্টুরেন্টের ক্যাশবাক্সে সে বসেছে। রেস্টুরেন্টের নাম ‘জসুর মোরগপোলাও’।

রাতে ঘুমুতে যাওয়ার আগে জসু মিসির আলির খোঁজ নিতে এল। মিসির আলি বললেন, জসু, তোমার বিষয়টা নিয়ে আমি এখন চিন্তাভাবনা শুরু করব।

জসু অবাক হয়ে বলল, আমার কোন বিষয়?

মিসির আলি বললেন, এক ভূতনি এসে তোমার পা চাটে ওই বিষয়। ভূতনিটার বয়স কত?

জসু বলল, তার বয়স কত ক্যামনে বলব? আমি তো তারে বয়স জিগাই নাই।

তাকে তো দেখেছ?

জি দেখছি।

দেখে বয়স কী রকম মনে হয়?

পারুল আপার বয়সী মনে হয়। চেহারাও উনার মতো। খুবই সৌন্দর্য।

মিসির আলি বললেন, পারুল আপা হলো ছক্কার স্ত্রী?

জি। এমন সুন্দর উনার চেহারা। দেখলে আপনি ফিট পড়বেন। রাইতের ঘুম হারাম হয়ে যাবে।

মিসির আলি ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেললেন। জসুর ভূতনি ফ্রয়েডিয়, এটা বোঝা যাচ্ছে। তবে ফ্রয়েডিয় ভূতানির সঙ্গে ‘হুড়বুড়ি’ নাম যাচ্ছে না।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *