Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » যখন নামিবে আঁধার – মিসির আলি || Humayun Ahmed » Page 10

যখন নামিবে আঁধার – মিসির আলি || Humayun Ahmed

মিসির আলি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি কিছু খেতে পারেন না। রাতে ঘুমুতেও পারেন না। যখন চোখে ঘুম নেমে আসে, তখনই লাল টেলিফোন বাজতে থাকে। তিনি লাফ দিয়ে বিছানায় উঠে বসেন।

মিসির আলি তাঁর অসুখের কারণ ধরতে পেরেছেন। মল্লিক পরিবারের রহস্য সমাধানে তার ব্যর্থতা। নিজেকে তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেছেন-ব্যর্থতা সফলতারই অংশ। দাবায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকেও কখনো কখনো হার মানতে হয়। যেখানে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদেরই এই অবস্থা, সেখানে তার অবস্থান কোথায়! সাইকোলজির খেলায় তিনি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন না। অনেক রহস্য তিনি ভেদ করেছেন, আবার অনেক রহস্যেরই কিনারা করতে পারেন নি। তার একটি খাতা আছে যার শিরোনাম ‘অমীমাংসিত রহস্য’। যেসব রহস্যের তিনি কিনারা করতে পারেন নি, তার প্রতিটি সেই খাতায় লেখা আছে। তবে সুযোগ পেলেই তিনি পুরনো রহস্যের মীমাংসা করতে চেষ্টা করেন।

মিসির আলি নিশ্চিত, তিনি মল্লিক সাহেবের রহস্য নিয়ে অনেক দিন ভাববেন। নির্ঘুম রজনী কাটাবেন।

হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তৃতীয় দিনে মিসির আলির সঙ্গে দেখা করতে এল বক্কা। দুই ভাই সবসময় একসঙ্গে চলাফেলা করে। আজ বক্কা একা।

বক্কা বলল, জসুর কাছে শুনেছি আপনি অসুস্থ। আপনাকে দেখতে এসেছি। আপনার জন্যে চারটা কচি ডাব এনেছি। ডাব বলকারক।

মিসির আলি বললেন, তোমার ভাই কোথায়?

বক্কা বলল, সে কুয়ার মুখ বন্ধ করছে। কুয়ার মুখ বন্ধ থাকা ভালো, তাহলে অ্যাকসিডেন্ট হয় না। আমার মা কুয়াতে ড়ুবে মারা গিয়েছিলেন, এটা কি আপনি জানেন?

জানি।

আমার মা’র নাম সুরমা। এটা জানেন?

জানি।

মা’র মনে অনেক কষ্ট ছিল তো, এইজন্যে তিনি কুয়ায় ঝাঁপ দিয়েছিলেন। অনেক কষ্ট থাকলে কুয়ায় ঝাঁপ দিতে হয়। ঠিক না চাচাজি?

হ্যাঁ ঠিক। আমি আর ভাইজান কী ঠিক করেছি জানেন? আমাদের মনে যদি অনেক কষ্ট হয় তাহলে কুয়ায় ঝাঁপ দিব। মনের কষ্ট দূর করার জন্যে বাবাকে মারা ঠিক না। বাবা হলো জন্মদাতা পিতা। চাচাজি, ডাব কেটে দিব? খাবেন?

এখন খাব না। পরে খাব।

বক্কা বলল, চাচাজি, এখন কাটি? আপনি ডাবের পানি খাবেন। আমি খাব শাঁস।

মিসির আলি বললেন, ঠিক আছে কাটো। ডাব কাটবে কীভাবে? দা লাগবে তো।

বক্কা বলল, দা নিয়ে এসেছি চাচাজি। দা খারাপ জিনিস। এইজন্যে রুমের বাইরে রেখেছি। ভালো করেছি না। চাচাজি?

হ্যাঁ, ভালো করেছ।

বক্কার ডাব কাটা দেখতে দেখতে মিসির আলি মল্লিক রহস্যের আংশিক সমাধান বের করলেন। এই সমাধানে ডাবের কোনো ভূমিকা নেই। কিছু মীমাংসা হঠাৎ করেই মাথায় আসে। বেশিরভাগ সময় স্বপ্নে আসে। কেকুলে বেনজিনের স্ট্রাকচার স্বপ্নে পেয়েছিলেন। মেন্ডেলিফ পিরিয়ডিক টেবিল স্বপ্নে পান। মিসির আলিও স্বপ্ন দেখছেন–জীবিত মল্লিক এবং মৃত মল্লিক একই। তাদের DNA তা-ই বলছে।

স্বপ্ন অনেককেই ইশারা দিয়েছে। তাকেও দিচ্ছে। কনশাস মস্তিষ্ক হিসাবনিকাশ করে আনকনশাস। মস্তিষ্ককে খবর দিচ্ছে। সেই খবর নিজেকে প্ৰকাশ করছে স্বপ্নে।

স্বপ্নে তিনি লাল টেলিফোন দেখছেন। এই টেলিফোন অবশ্যই তাঁকে ক্লু দিয়ে সাহায্য করবে।

বক্কা আগ্রহ নিয়ে ডাবের শাঁস খাচ্ছে। তৃপ্তিতে তার চোখ প্রায় বন্ধ। মিসির আলি বললেন, তোমাদের বাসার গেষ্টরুমে একটা লাল টেলিফোন আছে না?

বক্কা হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়ল।

এই টেলিফোনের নম্বর জানো?

বক্কা বলল, এই টেলিফোনের নম্বর শুধু বাবা জানে। আর কেউ জানে না। তোমার বাবা কি ওই ঘরেই থাকেন?

বক্কা বলল, না। মাঝে মাঝে থাকেন। বাকি সময় ওই ঘর তালাবন্ধ থাকে।

তালাবন্ধ থাকে কেন?

ওই ঘরে ভূত থাকে, এইজন্যে তালাবন্ধ থাকে।

কী রকম ভূত?

বক্কা বলল, চাচাজি, কী রকম ভূত আমি জানি না। আমি কখনো দেখি নাই।

কেউ কি দেখেছে? আমার স্ত্রী চম্পা দেখেছে। বড় ভাইজানের স্ত্রীও দেখেছে। চাচাজি, আরও চাইরটা ডাব কিনে নিয়ে আসি?

আর ডাব দিয়ে কী হবে?

বক্কা লজ্জিত গলায় বলল, দুটা মাত্র ডাবে শাঁস হয়েছে। তৃপ্তি করে খেতে পারি নাই।

মিসির আলি বললেন, এখানে ডাব না। এনে তুমি বরং ডাব কিনে বাড়িতে চলে যাও। পুরুষ্ট দেখে কেনো, যাতে ভেতরে শাস থাকে। তারপর দুই ভাই মিলে খাও।

বক্কার চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। যেন দিশেহারা নাবিক দিশা ফিরে পেয়েছে।

চাচাজি, দা-টা কি নিয়ে যাব, না রেখে যাব?

দা নিয়ে যাওয়াই ভালো।

বক্কা বিদায় হতেই মিসির আলি কাগজ-কলম নিয়ে বসলেন। একটা লিষ্ট করবেন। যাদের সঙ্গে তার দেখা হওয়া বিশেষ প্রয়োজন।

১. ‘এ মল্লিক কাচ্চি হাউস’-এর ম্যানেজার মবিনুদ্দিন। ইনি শুধু কাচ্চি হাউসের ম্যানেজারই না, মল্লিক সাহেবের ডানহাত। যারা নিজেদের ডানহাত প্ৰমাণ করে, তাদের কাছে অনেক গোপন তথ্য থাকে। সমস্যা একটাই, এরা মুনিবের প্রতি বিশ্বস্ততার কারণে কোনো তথ্যই প্ৰকাশ করে না।

২. মল্লিক সাহেবের মূল বাড়ির দারোয়ান আক্কাস মিয়া। এই লোক দীর্ঘ দিন ধরে দারোয়ানের কাজ করছে। সে নিশ্চয়ই অনেক কিছু জানে।

৩. পুলিশ ইন্সপেক্টর রকিব। তার সাহায্যে ছক্কা-বক্কা গ্রেফতার হওয়ার পর যে জবানবন্দি দিয়েছিল তার কপি আনতে হবে।

৪. চম্পা-পারুলের মা-বাবার একটা ইন্টারভ্যু দরকার। মল্লিক সাহেবের বাড়ির ভেতরের খবর নিশ্চয়ই দুই মেয়ে তার বাবা-মা’কে বলেছে।

৫. লাল টেলিফোনের নম্বর জানতে হবে। তারপর বের করতে হবে-এই টেলিফোন থেকে কাকে কাকে টেলিফোন করা হয় সেই তথ্য। মোবাইল ফোনে এই তথ্য সংরক্ষিত থাকে। ল্যান্ড টেলিফোনে থাকে কি না, তিনি জানেন না। চেষ্টা করতে দোষ নেই। মুন হোটেলের মালিক কবীর সাহেবের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। এই লোকের কানেকশান ভালো।

মিসির আলির শারীরিক অসুস্থতা মনে হয় সেরে গেছে। তিনি যথেষ্টই বল পাচ্ছেন।

মিসির আলি বিছানা থেকে নামলেন। তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ অর্ডার নিয়ে হোটেলে চলে যেতে হবে। হোটেল থেকে জিনিসপত্র নিয়ে উঠতে হবে মল্লিক সাহেবের ভাড়া বাসায়। তাঁকে হোটেলে থাকলে হবে না। থাকতে হবে মূল ঘটনার কাছাকাছি।

এ মল্লিক কাচ্চি হাউসের ম্যানেজার মবিনুদ্দিন এবং
মিসির আলির কথোপকথন

মিসির আলি কেমন আছেন?

মবিনুদ্দিন : আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি। আপনার দোয়া।

মিসির আলি : আপনি ভালো থাকুন। এমন দোয়া তো করি নাই।

মবিনুদ্দিন : আপনি আমাকে ডেকে পাঠিয়েছেন, এতে আমার প্রতি আপনার মুহব্বত প্রকাশিত। যে মানুষ আমাকে মুহব্বত করে, সে তার নিজের অজান্তেই আমার জন্যে দোয়া করে।

মিসির আলি আমি আপনার কাছে দু’একটি জিনিস জানতে চাচ্ছি। মল্লিক সাহেব বিষয়ে কিছু তথ্য আপনি কি বলবেন?

মবিনুদ্দিন : মুনিবের ক্ষতি হয় এমন কিছু আমি বলব না। আমি উনার নুন খাই। যার নুন খাই তার গুণ গাই—এটা আমার ধর্ম।

মিসির আলি : আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে, মল্লিক সাহেবের ক্ষতি হয়, এমন তথ্য আপনার কাছে আছে?

মবিনুদ্দিন : আমি আপনার সঙ্গে বাহাসে যাব না। আসসালামু আলায়কুম।

মিসির আলি : চলে যাচ্ছেন?

মবিনুদ্দিন : জি। আল্লাহ হাফেজ।

মল্লিক সাহেবের বাড়ির দারোয়ান আক্কাস মিয়া
এবং মিসির আলির কথোপকথন

আক্কাস মিয়া : স্যার, আমি কিছুই জানি না। আমি কিছুই দেখি নাই। আমার রাতকানা রোগ আছে। রাইতে খালি অন্ধাইরা দেখি। আর কিছু দেখি না।

মিসির আলি : দিনে তো দেখেন।

আক্কাস মিয়া : আমি দিনেও দেখি না।

মিসির আলি : দারোয়ানের চাকরি করেন, রাতেও দেখেন না, দিনেও দেখেন না?

আক্কাস মিয়া : জি-না।

মিসির আলি : রাতেও দেখেন না, দিনেও দেখেন না-এই তথ্য কি মল্লিক সাহেব জানেন?

আক্কাস মিয়া : উনাকে জানাই নাই। জানালে চাকরি চলে যাবে, এইজন্যে। স্যার, আমি এখন যাই। আসসালামু আলায়কুম।

মিসির আলি এবং সুরমা হোমিও হাসপাতালের নার্স
জাহানারা বেগমের সাক্ষাৎকার

মিসির আলি : আপনি কি জানেন যে, আমাকে মল্লিক সাহেবের বাড়ির একটা ঘরে ছয় দিন আটকে রাখা হয়েছিল?

জাহানারা বেগম : জি-না, জানি না। আমি অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকি। স্যারের বাড়ির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক আমার নাই। স্যারের কুলখানিতে আমাকে উনার বড় ছেলে দাওয়াত দিয়েছিল, সেখানেও যাই নাই।

মিসির আলি : মল্লিক সাহেবের দুই ছেলে ছক্কা-বক্কা দাবি করে যে তারা দুইজন মল্লিক দেখে। এই বিষয়ে কিছু জানেন?

জাহানারা বেগম : কিছু জানি না। তারা দুইজন বাবা দেখে না তিনজন দেখে, এটা তাদের বিষয়। আমার বিষয় না।

মিসির আলি : গত ছয় দিন ধরে মল্লিক সাহেবের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। উনি কোথায় জানেন?

জাহানারা : জানি না, উনি কাজকমের মানুষ। উনি কাজকর্ম নিয়া থাকেন।

মিসির আলি : আমি শুনেছি আপনি মাঝে মাঝে রাতে বাসায় যান না। দুই বেডের হাসপাতালে থেকে যান। এটা কি সত্যি?

জাহানারা বেগম : কাজকমের চাপ যখন বেশি থাকে, তখন বাধ্য হয়ে থাকতে হয়। রোগী ভর্তি হলে রাত জেগে তার সেবা-যত্ন করতে হয়, তখন থাকা লাগে।

মিসির আলি : মল্লিক সাহেবের এই হাসপাতালে কখনো কি রোগী ভর্তি হয়েছে?

জাহানারা আপনি উল্টা পাল্টা প্রশ্ন কেন করছেন? আপনি তো পুলিশের লোক না। পুলিশের লোক হলেও আমি ভয় পাই না। আপনাকে সত্যি কথা বলি-স্বামীর সঙ্গে আমার বনিবনা নাই। প্রায়ই ঝগড়া হয়। তখন এখানে থাকি। যাদের মনে পাপ, তারা এর মধ্যে পাপ দেখতে পারে, আমার মধ্যে কোনো পাপ নাই। আমি বুঝতে পেরেছি, কেউ আপনার কাছে কিছু লাগায়েছে। আপনাকে বলেছে যে, আমি যখন রাতে থেকে যাই, তখন মল্লিক স্যার আমার ঘরে থাকেন। ইহা সত্য না। মানুষের কথায় দয়া করে নাচবেন না। ক্লিয়ার?

মিসির আলি : জি ক্লিয়ার।

ইন্সপেক্টর রকিব এবং মিসির আলির কথোপকথন

মিসির আলি : আপনারা কি মল্লিক সাহেবের কেইসটা কোজ করে দিয়েছেন?

রকিব : জি-না। কেইস চালু আছে। গোপনে গোপনে তদন্ত চলছে। মাঝে মাঝে আমরা এ রকম করি। ভাব দেখাই যে মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে। তখন সাসপেক্টরা গা ছেড়ে দেয়। এতে আমাদের সুবিধা হয়।

মিসির আলি : আপনি বলছেন তদন্ত চলছে–তাহলে মল্লিক সাহেব এখন কোথায় বলতে পারবেন?

রকিব : বলতে পারব। তিনি আগামসি লেনের এক বাড়িতে আছেন। মাঝে মাঝে এই বাড়িতে থাকেন।

মিসির আলি : আমি যে ঘরে বন্দি ছিলাম, ওই ঘরে একটা লাল টেলিফোন আছে। টেলিফোনের নম্বরটা কি আমাকে জোগাড় করে দিতে পারবেন?

রকিব : স্যার, আপনার সঙ্গে যদি কাগজ-কলম থাকে তাহলে নম্বরটা লিখুন।

মিসির আলি : এই নম্বর তাহলে আপনারা জানেন?

রকিব : কেন জানিব না? বিস্ময়কর একটা ঘটনা ঘটেছে। একই মানুষএকজন জীবিত আরেকজন মৃত। আর আমরা ঠিকমতো তদন্ত করব না, তা কি হয়? আপনি দু’জনের DNA টেস্টের কথা বিশেষভাবে বলেছিলেন। আপনি শুনে খুশি হবেন যে, DNA টেস্ট হয়েছে। রেজাল্ট আমাদের কাছে আছে।

মিসির আলি : আমাকে কি DNA টেষ্টের রিপোর্টটা দেখানো যায় না?

রকিব (হাসতে হাসতে) আপনি বিখ্যাত মিসির আলি। আপনাকে কেন দেখাব না! ফটোকপি পাঠিয়ে দিচ্ছি।

মিসির আলি : আরেকটা ছোট্ট সাহায্য চাচ্ছি। আমি মল্লিক সাহেবের যে ঘরে বন্দি ছিলাম, সেখানে আরেক রাত থাকতে চাই।

রকিব : কেন?

মিসির আলি : আছে একটা বিষয়। তবে আমি ভয় পাচ্ছি, ওরা না আবার আমাকে আটকে ফেলে।

রকিব : আপনি কবে থাকতে চান বলবেন। সব ব্যবস্থা হবে। বাড়ির চারদিকে পুলিশ থাকবে। স্যার, এখন লাল টেলিফোনের নম্বরটা লিখুন।

মিসির আলি : নম্বর নিয়েই টেলিফোন করলেন। চারবার রিং হওয়ার পর তরুণীর গলা শোনা গেল, হ্যালো কে বলছেন?

মিসির আলি বললেন, চম্পা, আমি তোমার চাচাজি। মিসির আলি। তুমি ভালো আছ?

তরুণী জবাব দিল না। তবে সে টেলিফোন নামিয়েও রাখল না।

মিসির আলি বললেন, আগামী কাল রাতে আমি তোমাদের ওই ঘরে থাকব। ব্যবস্থা করতে পারবে?

তরুণী জবাব দিল না।

মিসির আলি বললেন, চম্পা, তুমি যে টেলিফোন কানে ধরে আছ তা আমি জানি। আগামীকাল রাত আটটার দিকে আমি চলে আসব। রাতে কি খাবারের ব্যবস্থা করতে পারবে?

তরুণী এইবার কথা বলল। প্রায় ফিসফিস করে বলল, কেন আসতে চাচ্ছেন?

মিসির আলি বললেন, স্মৃতি রোমন্থনের জন্যে। মাঝে মাঝে পুরনো স্মৃতি হাতড়াতে হয়। এটা স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *