Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ম্যানহাটানে ম্যানহান্ট || Sujan Dasgupta » Page 5

ম্যানহাটানে ম্যানহান্ট || Sujan Dasgupta

পরদিন দুপুর নাগাদ সাহানিদের বাড়ি গেলাম। একেনবাবুর অবশ্য সাতসকালেই ওখানে যাবার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু আমার আর প্রমথর জন্য পেরে ওঠেননি! আসলে একেনবাবু এখনও এগুলো ঠিক বোঝেন না। এদেশে হুট করে কারুর বাড়িতে কেউ গিয়ে হাজির হয় না। যাবার আগে অন্তত একটা ফোন করে জেনে নেয় কখন গেলে সুবিধা হবে। অবশ্য মনে হবে, সেটা আবার কী হাতিঘোড়া ব্যাপার? ফোন তো যখন খুশি করা যায়! কিন্তু সেটাই ঠিক যায় না। আসলে শুক্র-শনিবার এখানে অনেকেই লেট নাইট করে শোয়। সুতরাং, আটটা-ন’টায় ফোন করা মানে ডেফিনেটলি তার কাঁচা ঘুম ভাঙানো! উইকেন্ডে তাই দশটা-এগারোটার আগে সাধারণত কেউ কাউকে ফোন করে না –নিতান্ত দায় না পড়লে।

যাক সে কথা। সাহানিদের বাড়িটা হল হোয়াইট প্লেইন্সের একেবারে নর্থ এন্ডে। উঁচু টিলার ওপরে একটা কাল-ডি-স্যাক, তারই একেবারে শেষের বাড়িটা হচ্ছে ওদের। বাড়ির ঠিক পেছন থেকেই শুরু হয়েছে ঢাল। জমিটা ওখানে এত ঢালু যে, পেছনের ডেকবারান্দাটাকে ঠ্যাকা দিতে হয়েছে উঁচু-উঁচু কাঠের গুঁড়ি দিয়ে। বাড়ির পেছন থেকে শুরু করে ঢালের নীচ পর্যন্ত পুরোটাই মেপেল, স্তুস, আর ডগউডের জঙ্গল। হরিণের পাল এসে প্রায়ই নাকি ওখানে খেলে বেড়ায়। মাঝে মাঝে ভালুকও দেখা যায়। একবার নাকি একটা ভালুক একবারে ডেকের ওপর উঠে এসেছিল। খবরটা অশোক দিলেন, আমাদের সবাইকে ডেকটা দেখাতে এনে। ডেকটা অবশ্য দেখারই মতো। যেমন বিশাল, তেমনই শক্তপোক্ত। তবে সুরক্ষিত বিশেষ নয়। হরিণ ইজ ওকে। কিন্তু চিড়িয়াখানার বাইরে ভালুকগুষ্টির সঙ্গে মোলাকাত করার ইচ্ছে আমার এতটুকু নেই! আমি ভাবছিলাম, পৃথিবীতে এত সুন্দর সুন্দর জায়গা থাকতেও লোকে খুঁজে খুঁজে এই ঝোঁপ-জঙ্গলের মধ্যে বাড়ি করে কেন?

এমন সময় প্রমথ ডেকের রেলিংটা ধরে ঝুঁকে আমাকে বলল, “বুঝলি এই বারান্দা থেকে কেউ যদি লাফিয়ে পড়ে, তাহলে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না! গড়াতে গড়াতে একদম ভ্যানিশ হয়ে যাবে!”

নিশ্চয়ই নির্দোষ উক্তি। কিন্তু কেন জানি না, আমার হঠাৎ গোভিন্দ জসনানির কথা মনে এল। এটা কী সম্ভব যে, উনি শোক সামলাতে না পেরে সেদিন এই ডেক থেকেই

নীচে ঝাঁপ দিয়েছিলেন?

আমার মনের কথাটা অরুণ টের পেলেন কিনা জানি না, হঠাৎ নিজের থেকেই বললেন,”পুলিশ এই জঙ্গলটা বেশ ভালো করে খুঁজেছে, যদি কোনো কারণে মিস্টার জসনানি সুইসাইড করে থাকেন, এই ভেবে।”

“ধরে নিচ্ছি স্যার, তারা কিছুই পায়নি,” একেনবাবু বললেন।

“না, কিচ্ছু না।” উত্তর দিলেন অরুণ।

এমন সময় একটা দমক হাওয়া এসে সবারই হাড় কাঁপিয়ে দিল।

“চলুন স্যার, ভেতরে যাওয়া যাক,” একেনবাবু বললেন। “বড্ড ঠান্ডা বাইরে।”

ভেতরে ঢুকে আমরা ফায়ার প্লেসের পাশে গিয়ে বসলাম। ডেকের সঙ্গে লাগোয়া এই ঘরটা হল সাহানিদের ফ্যামিলি রুম। খেয়াল করলাম, এই ঘরের কার্পেটের অবস্থাটা অন্যান্য ঘরের তুলনায় খানিকটা জরাজীর্ণ। অর্থাৎ আড্ডা দেবার জন্য এ ঘরটাই বোধহয় সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়। যদিও বসার ঘরের কোনো কমতি বাড়িটাতে নেই। একটা বিশাল লিভিং রুম তো আছেই, তার ওপর বেশ ভদ্র সাইজের একটা ডেন, এবং বেসমেন্টে একটা রিক্রিয়েশন রুম! আমার অ্যাপার্টমেন্টের লিভিং

কাম-কিচেন-কাম-ডাইনিং এর ব্যাপার এটা নয়! প্রমথটা অবশ্য হিংসুটে! এর ফাঁকেই ফিসফিস করে আমাকে বলল, “শুধু টাকা থাকলেই হয় না রে, টেস্ট থাকা চাই। দেয়ালের ছবিগুলো দেখেছিস, নো কালচার!”

প্রমথর কথাটা নির্দয় হলেও, অসত্য খুব একটা নয়। আমি ওদের এটিজারের দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে, ভারতবর্ষের হেন জায়গা নেই যেখানকার কোনো জিনিস ওখানে রাখা নেই। কিন্তু একের ওপর একটা জিনিস চাপিয়ে ঠাসাঠাসি করে জগাখিচুড়ি করা হয়েছে। আমাদের মধ্যে শুধু একেনবাবুই দেখলাম মুগ্ধ। বললেন, “কী কালেকশন স্যার আপনাদের, একেবারে অ্যামেজিং, সত্যিই স্যার, ডুলি অ্যামেজিং!”

এই স্তুতিবাক্যটার জন্যই বোধহয় চায়ের সঙ্গে বড় গুলাবজামুনগুলো উনিই পেলেন! এটা অবশ্য প্রমথর অবজার্ভেশন। আমি নিজে সাইজের কোনো তফাৎ ধরতে পারিনি! তবে এটা ঠিক যে, সাহানি ব্রাদার্স একেনবাবুকেই খাতিরটা বেশি করছিলেন। করবেন নাই-বা কে, বেন্টুমাসি আমার আর প্রমথর যে ইনট্রোডাকশনটা গতকাল দিয়েছেন, তাঁতে ওরা যে আমাদের খেতে দিচ্ছেন, সেটাই যথেষ্ট!

খাওয়া-দাওয়ার পর আমরা ওপরে গেস্ট রুমে গিয়ে মিস্টার জসনানির বাক্সপত্রগুলো ঘাঁটলাম। ইন্টারেস্টিং বলতে কিছুই পাওয়া গেল না। বেশ কিছু জামাকাপড়, সান ফ্রানসিস্কোতে ফিরে যাবার রিটার্ন টিকিট, কয়েকটা ম্যাগাজিন, পানবাহারের দু’টো কৌটো, আর একটা ডায়েরি। ডায়েরিটার পাতা উলটে দেখলাম তাতে ডেইলি এনট্রি বলতে প্রায় কিছুই নেই। থাকার মধ্যে অনেকগুলো লোকের ফোন নম্বর আছে। এরিয়া কোড দেখে বুঝলাম যে, সেই লোকগুলোর বেশিরভাগই বে-এরিয়া, মানে সান ফ্রানসিস্কো, বা তার আশেপাশে কোথাও থাকে। অরুণ জানালেন যে, এদের সকলের সঙ্গেই পুলিশ যোগাযোগ করেছে, কিন্তু কেউই মিস্টার জসনানির কোনো হদিশ দিতে পারেনি।

“এদেশের ব্যাপার-স্যাপারই আলাদা স্যার। একজন অর্ডিনারি মিসিং ওল্ড ম্যানের জন্য পুলিশ কত খোঁজখবর করছে!” একেনবাবু মন্তব্য করলেন।

অশোক বললেন, “আসলে কেসটা এখন আর ঠিক অর্ডিনারি নয়। পুলিশ জানে যে, গোভিন্দ আঙ্কল প্রায় মিলিয়ন ডলার ক্যাশ নিয়ে অদৃশ্য হয়েছেন।”

“তাই নাকি স্যার! মিলিয়ন ডলারের কথাটা তো আগে শুনিনি?”

“কাল রাত্রেই আমরা পুলিশের কাছে শুনলাম। শ্যাম আঙ্কল যার সঙ্গে বিজনেস করতে এসেছিলেন, তাঁকে পুলিশ খুঁজে বার করেছে। তিনিই পুলিশকে টাকার অঙ্কটা বলেছেন।”

অরুণ যোগ করলেন, “আমি অবশ্য তাতে আশ্চর্য হইনি। দ্যাট ব্রিফকেস ওয়াস ফুল অফ ডলার বিপ্স!”

“মিলিয়ন ডলার্স! মানে তো প্রায় ছ’কোটি টাকা! অত টাকা ব্রিফকেসের মধ্যে? একেবারে আনবিলিভেবল স্যার!”

“কেন?” প্রমথ বলল। “এক মিলিয়ন ডলার মানে এক হাজার ডলারের এক হাজারটা নোট। বড় ব্রিফকেসও লাগবে না, একটা ছোট ব্রিফকেসেই দিব্যি এঁটে যাবে!”

“না, না, তা বলছি না। আসলে টাকার অঙ্কটা স্যার মাথা ঘুরিয়ে দেয়!”, বলে একেনবাবু সাহানি ব্রাদার্সকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “ভালো কথা স্যার, মিস্টার জসনানির কি কোনো ফটো আপনাদের কাছে আছে?”

“খুব রিসেন্ট ফটোই আছে। ক’দিন আগের তোলা।” বলে অরুণ পাশের ঘর থেকে ফটোম্যাটের একটা খাম নিয়ে এলেন। সেখান থেকে একটা ফটো বার করে আমার হাতে দিলেন।

চশমা-চোখে সৌম্য চেহারার এক ভদ্রলোক বসে-বসে বই পড়ছেন। চুলগুলো সব পাকা। ফটোতে অবশ্য বয়সটা সব সময় বোঝা যায় না। তাও আন্দাজ করলাম ষাটের কোঠায় প্রায় হবে।

“এই যে আরেকটা ফটো।”

এই ফটোটাতে মিস্টার জসনানি গাড়ির ড্রাইভার্স সিটে বসে আছেন। পাশে অশোক।

“গোভিন্দ আঙ্কল গাড়ি চালাতে খুব ভালোবাসতেন। আই মিন বাসেন। আই অ্যাম সরি, আই ডোন্ট নো হোয়াট আই অ্যাম সেইং!”

“তাতে কী হয়েছে স্যার। আমরা তো কেউই জানি না, উনি বেঁচে আছেন না নেই!”

হঠাৎ আমার মনে একটা সন্দেহ হল। আচ্ছা, মিস্টার জসনানি কি একটা ফলস পাসপোর্ট জোগাড় করে ইন্ডিয়াতে চলে যেতে পারেন? এরকম একটা সৌম্য চেহারার লোককে কে সন্দেহ করবে?

একেনবাবুর অ্যাটেনশন ইতিমধ্যে ছবি থেকে ক্যামেরায় চলে গেছে। অরুণের কী ক্যামেরা, তার কত দাম, কোথায় ভাল ক্যামেরা সস্তায় পাওয়া যায় ইত্যাদি অজস্র প্রশ্ন। উনিও বহুদিন ধরে একটা ক্যামেরার খোঁজ করছেন, কিন্তু আমি বা প্রমথ কেউই ও বিষয়ে কিছু জানি না। অরুণ বুঝলাম, ক্যামেরার একজন সমঝদার! সুতরাং একেনবাবুকে আর পায় কে! আমি আর প্রমথ বের হচ্ছি দেখে অশোক আমাদের নীচে বেসমেন্টে ওঁদের রিক্রিয়েশন, সংক্ষেপে রেকরুমে নিয়ে গেলেন।

রেক রুমটা ঠিক আলাদা নয়। ওপেন বেসমেন্টের কিছুটা অংশ কার্পেট দিয়ে ঢেকে, আর সাইড প্যানেল লাগিয়ে একটা আলাদা অস্তিত্ব দেওয়া হয়েছে। বেসমেন্টের অন্য দিকটা রেকরুম থেকে পরিষ্কার দেখা যায়। সেখানে সারা বাড়িতে গরম জল সাপ্লাই করার জন্য বিশাল ওয়াটার হিটার, সেন্ট্রাল হিটিংয়ের ফার্নেস। এছাড়া ওয়াশিং মেশিন, ড্রায়ার, ফ্রিজার, সব সারি সারি করে সাজানো। রেক রুমের একপাশে একটা বিলিয়ার্ড টেবিল, অন্য দিকে বসার জায়গা, আর একটা বইয়ের আলমারি।

প্রমথটা দুর্দান্ত বিলিয়ার্ড খেলে। ওঁর সঙ্গে খেলার কোনো অর্থ হয় না। আর কিছু না পেলে হয়তো খেলতেই হত, কিন্তু লাকিলি বুক শেলফে সময় কাটানোর কয়েকটা ভালো রসদ পেয়ে গেলাম। মডার্ন পেইন্টিংয়ের ওপর কতগুলো চমৎকার বই। প্রমথ আর অশোক এখন যত খুশি বিলিয়ার্ড খেলুক, আই ডোন্ট কেয়ার!

বইগুলো ফ্যাসিনেটিং, কিন্তু পাতা ওলটাবার বেশি সময় পেলাম না কারণ, খানিক বাদেই একেনবাবু নেমে এলেন। কিছুক্ষণ ঘুরঘুর করে ধপ করে আমার পাশে বসে বললেন, “দেখেছেন স্যার, ওঁদের ফ্রিজারটাও শ্যামলবাবুর বাড়ির মত।”

দেখছেন আমি বই পড়ছি, কিন্তু তাতে একেনবাবুর বকবকানি কিছু আটকাল না! আমি বই থেকে চোখ না সরিয়ে বললাম, “হ্যাঁ, দেখেছি।”

“ওয়াশিং মেশিনটা ডিফারেন্ট কোম্পানির স্যার, এটা হল হট পয়েন্টের তৈরি। শ্যামলবাবুদেরটা বোধহয় জি.ই–র, তাই না?”

হু কেয়ার্স! আমি মনে মনে ভাবলাম। কিন্তু মুখ ফসকে বলে ফেললাম, “জি.ই. আর হট পয়েন্ট একই কোম্পানির প্রোডাক্ট। শুধু লেবেলটাই আলাদা।”

“সেটা কী করে হয় স্যার? এক কোম্পানির জিনিস হলে দুটো আলাদা নাম কেন?”

“কেন হবে না,” আমি বললাম। “ক্যাডিলাক, বিউইক, শেভ্রলে –এই নামে তো হরেক রকমের গাড়ি রাস্তায় দেখতে পান। কিন্তু সবগুলোর পেরেন্ট কোম্পানি হচ্ছে। জেনারেল মোটরস, এটা জানেন না?”

একেনবাবু আমার দিকে এক পলক তাকিয়ে থেকে বললেন, “নাউ ইট মেকস সেন্স স্যার।”

“হোয়াট মেকস সেন্স?” আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম।

“কাল খবরে শুনছিলাম যে, জেনারেল মোটরস ইজ ইন ফাইনান্সিয়াল ট্রাবল। আর আমি বোকার মতো ভাবছিলাম, জেনারেল মোটরস আবার কোন গাড়ি বানায়! এই এখন জানলাম, ক্যাডিলাক, বিউইক, শেভ্রলে! মাই গুডনেস! যাই হোক স্যার, আমার কিন্তু একটা প্রশ্ন আছে।”

“কী প্রশ্ন?”

“গাড়ি নিয়ে নয় স্যার, ওয়াশিং মেশিন নিয়ে।”

এর পর কি আর কনসেনট্রেট করে কিছু পড়া যায়! আর যতসব ফালতু কোয়েশ্চেন! কী করে ওয়াশিং মেশিন কাজ করে, নর্মাল সাইকেল আর পার্মানেন্ট প্রেস সাইকেলের তফাত কী, চালাতে কত ইলেকট্রিসিটি খরচা হয় –এইসব! তারপরে ফ্রিজার নিয়ে প্রশ্ন। কী করে ভেতরটা এত ঠান্ডা হয়? কমপ্রেসার কী, ফ্রিয়ন কেন ব্যবহার করা হয়? সেখান থেকে চলে গেলেন গ্যাস ফার্নেসে। শুধু প্রশ্ন নয়, সেই সঙ্গে নেড়েচেড়ে সব দেখা! এটা ওঁর অত্যন্ত ব্যাড হ্যাবিট। নতুন কিছু দেখলেই হলো, তার নব ঘুরিয়ে, বোতাম টিপে, ডালা খুলে সব কিছু দেখা চাই! আর ইন দ্য প্রসেস একটা কিছু ঘোঁট পাকান। হ্যাপাটা পরে আমাদেরই সামলাতে হয়! সেইজন্য খুটখুট শুরু করলেই আমি কিংবা প্রমথ গিয়ে আটকাই। অবশ্য ভাগ্য ভালো আজ তেমন কোনো অঘটন ঘটল না। শুধু ফ্রিজারের ডালাটা পুরো বন্ধ না করেই দেখি উনি চলে গেছেন। ভাগ্যিস আমি পরে সব কিছু চেক করছিলাম! ঠিক করে বন্ধ করে দিলাম। ফ্রিজারটা চললেও লাকিলি ভেতরে কিছু ছিল না। সুতরাং নষ্ট হবার আর প্রশ্ন ওঠে না। তাও একেনবাবুকে ওঁর অপকর্মের কথাটা বলে লজ্জা দিলাম।

আমরা যখন ফিরছি, তখন দেখি অরুণ খুব যত্ন করে টেবিলে পড়ে থাকা এক্সট্রা খাবারগুলো প্যাক করে রেফ্রিজারেটরে ঢোকাচ্ছেন। আমরা অবশ্য চেটেপুটেই খেয়েছিলাম। সুতরাং বাকি বলতে বিশেষ কিছু ছিল না। বড়জোর এক-আধটুকরো মিষ্টি, একটা বা দুটো পুরি, তরকারির একটা সার্ভিং –তাও ছিল কিনা সন্দেহ! যাই হোক আমি বুঝিনি যে, প্রমথরও সেটা চোখে পড়েছে। গাড়িতে উঠেই ও বলল, “এই জন্যই আমরা কোনোদিন বড়লোক হতে পারব না। দেখলি তো খুদকুঁড়ো পর্যন্ত এরা ফেলে না!”

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *