ওর নাম ভিখারি ময়লা কাপড় নোংরা পুটুলি
মাথায় ঘোমটা,বয়স অনেক বেশি প্রায় ষাট
শুনেছি একটা ছেলেও আছে ওর,সে না কি কুলি
গরীব ব’লে আত্মীয়তার চুকিয়ে দিয়েছে পাঠ ।
পরিবার নিয়ে থাকে ঐ স্টেশন পাড়ার বস্তিতে
সারা পৃথিবীর বোঝা তুলে সংসার টেনে যায়
মদ খায় স্ফূর্তি করে দিন কাটে বেশ মস্তিতে
সবথেকে ভারী বোঝা “মা” পড়ে থাকে শুধু হায়!
লজ্জিত মুখে যখন এসে দাঁড়ায় দরজা গোড়ায়
খুঁটিয়ে দেখি মায়ের মুখটা কত যেন মায়াময়
বোঝাতে পারি না ওনার লজ্জা আমার চিত্ত পোড়ায়
হায় রে বিধাতা এ কোন সমাজ!জাগ্রত হয় ভয়।
স্বামী ছিল পুত্র ছিল কাটত কেমন ব্যস্ত দিন
শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা ছিল সঙ্গে স্কুলের ইউনিফ্রম
ছোট্ট ছেলে স্কুলে যেত সুখী তারা নয়তো দীন
মায়ের চোখে স্বপ্ন ছিল মরলো স্বামী কাটল ভ্রম।
বয়স ছিল কষ্ট ক’রে করল বড় পুত্রকে
কর্ম বলতে ঝিগিরি পরনে মলিন শাড়ী
এবার ছেলের বিয়ে দিল বৌ এল রাঙা টুকটুকে
পরিচয়টা পাল্টে গিয়ে মা হয়ে গেল ভিখারি।
মানুষ হল না ! মনুষ্যত্ব নিষ্ঠুর বড় বেশি
সকলের সাথে একান্তে থাকতে পারে না যেন
দুর্বল মা অবলা নারী শিথিল হয়েছে পেশী
জবাব আছে পুত্রের কাছে,মা আজ ভিখারি কেন?
সুন্দরী ছিল
বিয়ে দিয়েছিল মা
দারিদ্র্যতা ক্ষমা করেনি তাকে
শ্বশুরবাড়ির পণের চাহিদা ক্রমশঃ
নিঃশেষ করছিল তার বাপের বাড়িটাকে !
অত্যাচারী
স্বামী আর শ্বাশুড়ী
হঠাৎ একদিন জ্বালিয়ে দিল
পুত্র নিয়ে ঘুমিয়েছিল , নিশ্চিন্তে….
জ্বালাময় যন্ত্রণা ….
চিৎকারে জেগে উঠেছিল পাড়া
কিছু সজ্জন নিয়ে গেছিল হাসপাতালে…
সুস্থ হল দীর্ঘদিন পর ….
সুন্দর রূপ বীভৎসতায় ঢাকা
কান ব’লে কিছু নেই !
তবে পরিচয় এক আছে ,
ভিখারি !
ছোট ছেলের হাত ধরে প্রতিদিন ট্রেনে ভিক্ষা করে!
স্কুলে যাওয়ার পথে রোজ দেখি তাকে !