মায়ের ঘরে
আমি বাড়িতে একা অচৈতন্য মাকে নিয়ে অসুস্থ মায়ের ঘরে।বাইরে শব্দবাজীর শব্দে ঘুম নেই চোখে।নিঃশব্দে আমি আমার মায়ের ঘরে ঢুকে দেখি জ্ঞান ফিরতেই মা বিড়বিড় করে কার সঙ্গে কথা বলছে।যা না এখন।আমার মেয়ে এসেছে। শুনে আমি শিউরে উঠি।বললাম কেউ নেই। মা হাসলো আবার অজ্ঞান ।আমি ঘর থেকে বেরতে যাব, একটা পায়ের খসখস শব্দ। কে যেন আমায় ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢুকলো মনে হল।বাইরে দাঁড়িয়ে শুনছি মা আরও জোরে জোরে হাসছে আর বলছে সব মনে আছে।সেই সব দিন কষ্টের হলেও সুখের ছিল।আমার হাত ছাড়।আমি এখন যাব না।
তুই এত তাড়াতাড়ি কোথায় গেলি।আমার এখনও অনেক কাজ বাকি।ভাইয়ের মেয়েটাকে মানুষ করি। তুই এখন যা একটু ঘুমাই।একটা নূপুরের শব্দ স্পষ্ট কানে এলো। আমি
বাইরে দাঁড়িয়ে কুল কুল করে ঘামছি। পা কিছুতেই সরছে না।কে যেন ফিসফিস করে আমার কানে বলে গেল,এখনও এখানে দাঁড়িয়ে। অনেক রাত হয়েছে ঘুমাও।জানলাটা আপনি
বন্ধ হয়ে গেল।আমি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না,মনে হল কেউ আমার উপরে ভর করেছে।
সুইচ বোর্ড পাশেই ছিল। তাড়াতাড়ি আলো পাখা জ্বালিয়ে বসে পড়ি।জল খেয়ে স্বস্তি কিছুটা পেলাম কিন্ত আমার মায়ের ঘরে কিছুতেই ঢুকতে পারছি না।সেখান থেকে আবার বিকট শব্দ
আসছিল। ঘুমিয়ে মা কেমন আঁ আঁ শব্দ করছিল।
মায়ের ঘরে ঢুকতে যাব কে যেন দরজা আগলে দাঁড়িয়ে। ভেতরে ঢুকতেই পারি না। মাকে জোরে জোরে ডাকতে সে যেন সরে গেল।আমি জোর করে মায়ের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম।
মা চিৎকার করে উঠল,যা বেরো এক্ষুণি আমার ঘর থেকে।পায়ের খসখস শব্দে আমি আবারও শিউরে উঠি। মাকে নাড়া দিতে চোখ খুলে আমায় বলল।আমার গলাটা কে যেন টিপে ধরেছে। শরীরটা ভারী লাগছে উঠতে পারছি না। মাকে তুলে বসাতে গিয়ে নিজের শরীরে অস্বাভাবিক ভার অনুভব করলাম। বাইরে তখনও বাজি ফাটার শব্দ।কে যে মায়ের হাতটা আমার হাত থেকে ছাড়িয়ে নিল ঠিক বুঝলাম না। আমি ঘরে বসে পড়লাম ঘরের দরজা বন্ধ হয়ে গেল। আলোটাও,কাঁপতে কাঁপতে নিভে গেল। মায়ের
লাঠিটা পড়ে যাওয়ার শব্দে দেখি মা
মাটিতে পড়ে। বলছে কে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল।
দেখলাম খুব ঘেমে গেছে ভয়ে থরথর করে কাঁপছে।
তাকে তুলে ধরার ক্ষমতা তখন আর আমার ছিল না। আবারও আমার কানে ফিসফিসিয়ে বলে গেল খুব সাবধানে ধরে তোল।ঘরের দরজার ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ শুনেই ঘাড় ঘুড়িয়ে দেখি ধোঁয়া মতন একটা কিছু বাইরে বেড়িয়ে গেল।আর কিছু মনে নেই।