মিহিরবাবু, কেমন আছেন
মিহিরবাবু, কেমন আছেন?
ও শবরবাবু। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ফাঁসির দড়ি থেকে যে আমি বেঁচে যাব তা ভাবিনি। আপনি এসে না পড়লে কপালে কষ্ট ছিল।
তা ছিল। সুব্রতবাবু স্টেটমেন্ট দিয়েছেন।
ওঁর কি ফাঁসি হবে শবরবাবু?
বোধহয় না। চৌদ্দো বছর মেয়াদ হতে পারে। প্যারোলট্যানোল বাদ দিয়ে বড়জোর দশ বছর ঘানি টানবেন। তবে আমেরিকান সিটিজেন বলে কিছু কনসিডারেশন হতে পারে। ওসব আইনকানুন আমার জানা নেই। আপনি কি সত্যিই অরুণিমা বকশির বিষয়সম্পত্তি কিছুই নেবেন না?
পাগল নাকি? ওসব আমি ছোঁবও না।
তা হলে সম্পত্তির গতি কী হবে?
যা খুশি হোক।
আপনি অদ্ভুত লোক কিন্তু।
না শবরবাবু, আমি ভিতু লোক। অনার্জিত সম্পদকে খুব ভয় পাই।
আচ্ছা, গুডবাই। ভাল থাকুন।
ধন্যবাদ।
.
আমি বলছি।
সব খবর পেয়েছেন?
খবরের কাগজে দেখেছি।
আপনার কি সন্দেহ ছিল খুনটা আমি করেও থাকতে পারি?
না, কখনও নয়। সন্দেহ থাকলে কি এত কথা বলি?
আমি লম্পট বলে প্রতীয়মান হলেও তা নই কিন্তু।
আপনি ভীষণ খারাপ।
কী করে আপনার কাছে ভাল লোক হওয়া যায় বলবেন?
শুধু আমার কাছে কেন, সকলের কাছে নয়?
আপাতত আমার একজনের জন্যই মাথাব্যথা। হাসছেন।
এত পাগল হওয়ার কী আছে?
আপনি যে আমাকে ভীষণ জ্বালাচ্ছেন।
ওঃ! তা হলে আর ফোন করব না।
কেন?
তাই তো বললেন!
তাই বললাম বুঝি! এই বুদ্ধি! আপনাকে আমি বুদ্ধিমতী ভেবেছিলাম।
ঝগড়া করার জন্য গলা চুলকোচ্ছেন, না?
আপনিও তো ঝগড়ুটে। এক বুঝতে আর এক বোঝেন।
বেশ তা হলে কথা না বললেই তো হয়।
না না, বরং ঝগড়াই হোক।
ঝগড়া হবে! ওমা, কেন?
এরকম ঝগড়া বেশ ভাল, মন ভাল হয়ে যায়।
তা হলে তো সারাজীবন ঝগড়াই করতে হবে আপনার সঙ্গে।
রাজি। হাসছেন কেন?
একটা পাগলের পাল্লায় পড়েছি বলে।
আমিও তো একটা পাগলির পাল্লায় পড়েছি। পাগলিকে এখন আমার ভীষণ দরকার।
কেন?
বোঝেন না? না বুঝে থাকলে আর বুঝে কাজ নেই। আমি পাগলির কাছে বসে এই জীবনটাকে বুঝে নিতে চাই। আপনার পাঠশালায় আমাকে ভরতি করে নেবেন?
ভেবে দেখি।
না, ভাবলে সব গুলিয়ে যাবে। নিন না ভরতি করে। নেবেন?
একটা দীর্ঘশ্বাস শোনা গেল। তারপর মেয়েটি বলল, না নিয়ে উপায় কী?