মানুষের হাহাকার – আট
আমরা কোথায় যাব বলতো?
দাঁড়াও না। ঠিক কোথাও যাব। ভালো করে ধরে রাখো।
রমা মুখটা অরুণের পিঠে লাগিয়ে বলল, খুব ভালো লাগছে! না!
অরুণ যতটা সম্ভব স্পিড তুলে প্রায় হাওয়ায় গা ভাসিয়ে দিল যেন। দু—পাশের বাড়িঘর মাঠ দ্রুত সরে যাচ্ছে। ভি—আই—পির এই রাস্তাটা অরুণের ভারি প্রিয়। নিশ্চিন্তে সোজা সিটে বসে থাকতে পারে। মনে হয় কখনও নিজে ঘোড়সওয়ার, কখনও মনে হয় সে পৃথ্বিরাজের মতো ঘোড়ায় ছুটে যাচ্ছে। পিছনে জয়রাজ দুহিতা সংযুক্তা। রাজার মেয়ে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।
অরুণ বলল, তোমার বাবার নাম ভুবন না হয়ে জয়রাজ হলে ভালো হত।
রমা চেঁচিয়ে বলল, বুঝতে পারছি না, কী বলছ!
আসলে হাওয়ায় পিছলে যাচ্ছে সব শব্দ। জোরে না বললে কিছুই স্পষ্ট হচ্ছে না। অরুণ বলল, বলছি, তুমি রাজার মেয়ে।
রাজার মেয়ে হতে যাব কোন দুঃখে?
তোমাকে কী যে করতে ইচ্ছে হচ্ছে না।
কী করতে ইচ্ছে হচ্ছে?
রাজার মেয়েকে কী করতে ইচ্ছে হয়?
যাও জানি না। তুমি ভারি অসভ্য কথা বলতে পার।
অরুণ জোরে হেসে উঠল।
এই কী হচ্ছে। একটা কিছু না ঘটিয়ে ছাড়বে না!
ভালোই তো! হলে মন্দ কী!
এই বুঝি ইচ্ছে।
আরও দু—চারটে গাড়ি অতিক্রম করে অরুণ হাওয়ার পিঠে ভর করে যেন চলে যাচ্ছে। ক্রমে উল্টোডাঙ্গা, লেকটাউন, এয়ারপোর্ট পার হতেই রাস্তাটা ফের সরু হয়ে গেল। তেমন নিশ্চিন্তে আর বাতাসে ভেসে যাওয়া যাবে না। সে স্পিড সামান্য কমিয়ে দিতেই একটা ঝাঁকুনি খেল রমা। তারপর স্পিড একেবারে কমিয়ে দিয়ে অরুণ বলল,—এসো, এখানে সুন্দর নিরিবিলি একটা চায়ের দোকান আছে। চা খাব।
রমা বলল, কোথায় যাবে বলতো?
একটা কথা যে কতবার বললে তুমি রমা! এখন একটু ঘুরব। সন্ধ্যায় চাঙোয়াতে খাব। বিকেলে একটা কিছু আজ হবে।
হতে দিচ্ছেটা কে!
রমার মুখের দিকে তাকাল অরুণ। হতে দিচ্ছেটা কে—বলে চোখ নামিয়ে নিয়েছে। কেমন চাপা লজ্জা চোখে মুখে ফুটে উঠেছে। এমন সব কথাবার্তা অরুণ আজকাল প্রায়ই বলে। আসলে শেষ পর্যন্ত কিছুই হয় না। রমার ভীতু মুখ দেখলে সেও শেষ পর্যন্ত কেমন হয়ে যায়। কাপুরুষের মতো মুখ করে রাখে। ছেলেমানুষের মতো শুধু বলা, আর পারছি না।
রমা তখন মজা পায়। বলে, কেন, ঘরে তো বউ আছে। দুঃখটা সেখানেই সারিয়ে নেবে।
অরুণ আর বেশি কিছু বলতে সাহস পায় না। ঘরে সত্যি অমলা রয়েছে। সবই জানা। কোনো রোমহর্ষক ঘটনা আর ঘটে না। ডাল ভাতের মতো অমলা ওকে শুধু খেতে দেয়। বললেই মাদুর পেতে দেবার মতো। অথবা মনে হয় ওটা পাতাই আছে যে—কোনো সময় গড়িয়ে নিলেই হল। আর এ—ভাবেই বুঝি অমলা দিন দিন শরীরের সব রহস্য নষ্ট করে ফেলেছে। কোনো আকর্ষণ বোধ করে না। এই যে ছুটির দিনে সে বের হয়ে পড়েছে দশটা কাজের অজুহাত দেখিয়ে অমলার তাতেও কোনো রাগ নেই। ক্ষুণ্ণ হয় না, বরং ছুটির দিনটা সে বাপের বাড়ি যেতে পারবে বলে খুশিই হয়।
চা দাও তো। দু—কাপ।
রমা বলল, গরম জলে ভালো করে ধুয়ে দেবে। ভাঙা ফাটা কাপে দেবে না।
রমার এটা বাতিক। কোথাও বাইরে গেলে, চা—টা খেলে এ কথাগুলো নির্ঘাত একবার বলবেই। এবং সে জানে রমা দু—এক চুমুক চা খেয়েই বলবে, কী বিশ্রী চা। খাওয়া যায়!
ঘোরার ফলে কিছু নির্দিষ্ট দোকানি রমারও চেনা হয়ে গেছে। এ—জায়গাটা নতুন। রমাকে নিয়ে সে এ—জায়গাটায় নতুন এসেছে। সে মাঝে মাঝে বারাসাত এরিয়াতে কাজ থাকলে স্কুটার থামিয়ে একবার না একবার যাবার আসবার পথে এখানে নেমেছে। দোকানির ছোকরা চাকরটা অরুণকে খুব ভালো না চিনলেও কিছুটা মুখ চেনার মতো! সে গরম জলে পরিপাটি করে কাপ প্লেট ধুলো। চা দেবার সময় বলল, আর কিছু দেব?
রমা বলল, না কিছু না।
অরুণের এখন সময় কাটানো দরকার। দুপুরের রোদ খুব একটা তেজি না যেন। হাওয়া দিচ্ছে। ওর ইচ্ছে ছিল, ফ্লাস্কে করে সামান্য চা আর চিপস সঙ্গে নেবে। অমলাকে বললেই সব করে দিত। কিন্তু রমাকে তোলার সময় কাঁধে চায়ের ফ্লাস্ক দেখলে সংশয় দেখা দিতে পারত ভুবনবাবুর। সবাই তার সঙ্গে যদিও আচরণে খুব মেহেরবান হয়ে যায়, তবু সে বুঝতে পারে তলে তলে রমাদের বাড়িতে খুব একটা সুনজরে কেউ তাকে দেখে না। কেবল মাসিমা খুব সরল মুখ করে রাখে। যেন স্কুটারে চড়ে হাওয়া খেতে যাচ্ছে। খুবই পবিত্র ঘটনা।
রমা বলল, দুপুরের রোদে এ—ভাবে ঘুরে বেড়ালে লোকে পাগল বলবে।
অরুণ চারপাশটা দেখল। খদ্দের খুবই কম। অন্য অনেকদিন সে দেখেছে, খদ্দের গিজগিজ করছে। একটা বড় অশ্বত্থ গাছের নিচে দোকানটা। বেশ একটা নিরিবিলি ছায়া আছে। টুল পাতা বাইরে। দুজন চাষী মতো মানুষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছে।
রমা সব চা—টাই খেল। বাড়ি থেকে সামান্য খেয়ে বের হয়েছে। এখানে চা, আরও দু—একবার চা হবে, তারপর অরুণ কোথায় যাবে সে জানে না। ঠা ঠা রোদ্দুরে ঘুরে বেড়াতে এত সুখ রমা আগে টের পেত না। কী শীতে কী বসন্তে এবং এই দাবদাহের ভেতরও যেন এক শান্ত সলিলা ভাব। কোনো কষ্টই কষ্ট মনে হয় না।
রমা এবারে ফিস ফিস গলায় বলল, খালি বাসাটা কি বারাসতে?
অরুণ পিছনে ফিরে দেখল। দুষ্টুমি হচ্ছে বোঝা যায়। রমা বিশ্বাসই করছে না বোধহয়, খালি বাসায় হাত পা ছড়িয়ে বসার সুযোগ কলকাতায় কোথাও থাকতে পারে! বড় হোটেলের ঘর পাওয়া যায়। রমা অবশ্য জানে এত সাহস অরুণের কোনোদিন হবে না। একটা পরিচয় তো দিতে হবে। আর তা ছাড়া কোথায় কোন ছলনা ওৎ পেতে আছে কে জানে! কাগজে কত সব কেলেঙ্কারির খবর থাকে। কেলেঙ্কারির ঠিক আগে বোধহয় ওরা এভাবেই একটা নীল স্কুটারে চড়ে বেড়ায়। বড় কোনো হোটেল ঘরের কথা এলেই সঙ্গে সঙ্গে পারিপার্শ্বিক দূষিত আবহাওয়ার কথা মনে হয়। অরুণ আর যাই করুক এতটা সাহস হবে না তার। সে বলল, কী কিছু বলছ না যে।
জায়গাটা তোমার খুব পছন্দ হবে রমা।
অরুণ এবার স্কুটারে চেপে হ্যান্ডেলটা সামান্য ঘুরিয়ে দিল। রমা বসল। আঁচল গুঁজে দিল কোমরে। ঘাম হচ্ছে খুব। রুমালে মুখ মুছল। চুল খোঁপা থেকে কিছু আলগা হয়ে গেছে। সেগুলো ফের খোঁপায় গুঁজে দিল। তারপর অরুণের পিঠের ওপর নিজেকে চেপে ধরল। প্রায় দুরন্ত বেগে স্কুটারটা সব মানুষজন, জ্যাম ভিড় কাটিয়ে দু—পাশে মাঠ ফেলে চলে যেতে থাকল। তারপর। এবং ক্রমে বিন্দুবৎ হয়ে ভেসে থাকল একটা আশ্চর্য সুখ। প্রকৃতির কূট খেলা তখন আরম্ভ হয়ে গেছে শরীরে।
মানু তখন হাঁটছিল। মানুষজন, গাড়ি বাড়ি, ট্রামের তার ফেলে সে একটা নির্জন জায়গার খোঁজে চলে এসেছে। চুপচাপ কোথাও বসে থাকতে ইচ্ছে হচ্ছে। মুখের ভেতর টিকিটের কাগজ দলা পাকানো। চুইংগামের মতো সে চিবিয়ে খাচ্ছে কেবল। জয়া সুন্দর শাড়ি পরেছিল আজ। পাশে বসে শো দেখার আরামটুকুও তাকে ওরা দিল না। সব ইচ্ছে কোথাকার দুটো কবি এসে গুঁড়িয়ে দিয়ে গেল। কিছুই ভালো লাগছিল না। কিছু ভিখিরি বসে আছে রেলিঙের ধারে। শুকনো রুটি রোদে আরও শুকিয়ে নিচ্ছে। একটা ওর বয়সি ছেলে কাক শালিক তাড়াচ্ছে। এবং বড় নিবিষ্ট চোখে পাহারা দিচ্ছে। খাওয়ার সুখ কত আরামের ওদের চোখ মুখ দেখলে টের পাওয়া যায়। মানুর বলতে ইচ্ছে হল তোমাদের মতো আমিও ভিখিরি। কাঙাল বলতে পারো। সে রেলিঙের ধারে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকল। শহরে কত কিছু ঘটে যাচ্ছে। ওই যে বুড়োটা, হাতে রেশন ব্যাগ নিয়ে ট্রামে উঠবে বলে দৌড়াচ্ছে, সে জানে না পাশেই আছে তার হাজার কিশিমের হতাশার ছবি।
এমন কী অহংকার, মেয়ে তোমার, অনায়াসে দুজন কবি আমার থেকে ছিনিয়ে নিতে পারে তোমাকে। মানুর ভেতরে ভেতরে জেদ বাড়ছিল। সে একটা ঢিল তুলে ছুঁড়ে দিল। এবং কত দূরে গিয়ে পড়ছে, আর এভাবে কত দূরে সে ঢিল ছুঁড়তে পারে তা দেখে নিচ্ছে। মানুষের মাথায়, গাড়ির জানলায় লাগলে কেলেঙ্কারি হবে সে জানত। তবু কেমন ভেতরের একগুঁয়ে একটা স্বভাব আছে তার। সে যা আশা করেছিল, যা সকাল থেকে তাকে স্বপ্নের ভেতর জমিয়ে রেখেছিল, কবি ছোঁড়া দুটো তছনছ করে দিয়ে গেল। সে কিছুই বলল না। এখন মনে হচ্ছে তার কিছু বলা উচিত ছিল। নিজের সঙ্গে কিছু কথাবার্তা আরম্ভ করে দিল এ—ভাবে।
তুমি একটা আহম্মক।
কী করব। জয়া এমনভাবে বলল,—
আরে মেয়েমানুষ তো, ধরে রাখতে হয়। সবই তোমাকে বলে দিতে হবে। বলতে পারলে না, রাখো কবিতা। বাড়াবাড়ি করলে চেঁচামেচি শুরু করে দেব।
কী ফল হত তাতে?
অনেক কিছু হত। ভয় পেত।
জয়া দুঃখ পাক আমি এটা চাই না?
তাহলে তুমি দুঃখ পাও এটা সে চায় কেন?
তা তো বলতে পারব না।
তুমি কাপুরুষ। কেউ এভাবে মুখের গ্রাস ছেড়ে দেয় না।
মানু কিছুক্ষণ তারপর অন্যমনস্কভাবে ফের হেঁটে গেল। আইসক্রিমের বাক্স টেনে টেনে নিয়ে যাচ্ছে একটা লোক। দুজন হাফ—যুবতী বালিকার মতো আইসক্রিম মুখে দাঁড়িয়ে আছে। ওকে দেখে ওরা হাসছিল। এবং সে তখনই বুঝতে পারল ওর হাতে একটা বড় ঢিল। এমন সুন্দর ছেলেটা ইঁটের টুকরো হাতে নিয়ে কোথায় যাচ্ছে! কার মাথা ফাটাতে যাচ্ছে! ওর মাথার গোলমাল আছে ভেবে হয়তো তারা হাসছে। সে গোপনে ঢিলটা হাত থেকে ফেলে দিল। হাত ঝাড়ল। একবার বলবে নাকি—এই মেয়েরা, তোমরা এখানে কেন! ঘরে ভালো লাগে না কেন! তোমাদের কেউ আসবে? আচ্ছা, তোমরা সেজেগুজে বের হয়েছ বেড়াতে, সত্যি বেড়াতে চাও তো না অন্যকিছু? চারপাশে সবুজ মাঠ, গাছপালা, এবং মনের ভেতরে কেবল দুষ্টুমি—সব বুঝি! জয়াটা যে কী করল আজ! গন্ধে গন্ধে ওর কবি বন্ধুরা ঠিক পিছনে হেঁটে যাচ্ছে। মেয়েদের গন্ধ পুরুষেরা এত পায়, পুরুষের গন্ধ মেয়েরা পায় কিনা একবার জিজ্ঞাসা করবে নাকি! পুরুষের গন্ধ পাও না! আমি যে হেঁটে যাচ্ছি, তোমাদের ভালো লাগছে না!
এবং সে দেখল সত্যি হাঁ করে ওদের দিকে সে তাকিয়ে আছে। আর ওরা মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে।
সে বলল, না আপনাদের আমি কিছু বলছি না।
বড় মেয়েটার চুল দু’বেণীর। ছোট মেয়েটার কোমর খুব সরু। গেঞ্জি পরেছে। বুক উঠছে নামছে নিশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে। বড়টা সামান্য লাজুক প্রকৃতির। মানুর দিকে সামান্য চোখ তুলেই নামিয়ে নিয়েছে। ছোটটা সাহসী। সে এগিয়ে এসে বলল, কিছু বলছেন?
আপনারা এখানে কতক্ষণ?
ঘড়ি দেখে বলল, বিশ মিনিটের ওপর।
তাহলে বলে লাভ নেই।
মানুর প্রতি যে—কোনো কারণেই ছোটটার কৌতূহল বেড়ে গেল। বোধহয় ওরা দুবোন। কিংবা বোধহয় দুজনেই কলেজের বান্ধবী। অথবা প্রতিবেশী। ঘরে ভালো লাগে না। হেঁটে হেঁটে চলে এসেছে ময়দানের এদিকটায়। এবং গাছপালায় ছায়ায় বসে আইসক্রিম খাচ্ছে। শহরের ঘরে ঘরে এই এখন ক’টা যুবতী আছে, ক’শো, ক’হাজার অথবা ক’লক্ষ, যেমন সে জানে তার দিদি, এবং জয়া, মন্দাকিনী বউদি সবাই কোথাও যেতে চায়। কোথাও যাওয়ার সুখ অথবা অসুখের ভিতর পড়ে গিয়ে নিদারুণ হয়ে উঠেছে। জয়াটা শুধু দু’জন কবির সঙ্গে চলে গেল। কবিতা পাঠ এত কী মধুর, অথচ অসুখের মতো ওটাও একটা সুখ কিনা কে জানে! তাকে ফেলে তো চলে গেল। কত বড় অসুখ হলে জয়া তাকে ফেলে যেতে পারে এতক্ষণে সে এটা টের পাচ্ছে। এবং টের পেলেই মনে হল মাথাটা দু’ফাঁক করে দিলে কী ক্ষতি ছিল! কবিতা বের হয়ে যেত সব ফাঁক করা খুলি দিয়ে।
ছোটটা আর কিছু বলছে না। অবোধ বালিকার মতো তাকে দেখছে। বোধ হয় দয়া হল। বলল, বলে লাভ নেই কেন!
ফিরে গেছে হয়তো!
সময়মতো আসেন না কেন?
দেরি হয়ে গেল। বাস ট্রামের যা অবস্থা।
বাড়ি থেকে আগে বের হতে হয়।
আপনারা বাড়ি থেকে আগে বের হয়েছেন?
অনেক আগে। আগে এলে তো দোষের হয় না!
তা হয় না।
বড় মেয়েটার চুল কোঁকড়ানো। চোখ টানা নাক একটু চাপা। বেশ উঁচু লম্বা। প্রায় দিদির মতো হবে। শাড়ি পেটের নীচেও খানিকটা নেমে গেছে। শাড়ির ফাঁকে নাভির নীচেও বেশ কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে। সে বলল, আপনাদের ওরা কখন আসবে?
এসে পড়বে। দশ মিনিট অ্যালাউন্স দেওয়া আছে।
মাত্র দশ মিনিট!
দশ মিনিট কতটা সময় আপনি জানেন না! ছোটটা খুক খুক করে হাসতে থাকল।
ওরা আসবে তো ঠিক?
এখনও সময় যায়নি।
একবার দেখুন না! বলে সে সেই ইঁটের টুকরোটা আবার কুড়িয়ে আনল।
ক্যাচ ধরতে পারেন?
মীনা তো প্রাকটিস করছে।
তবে আর কি। ওপরে ছুঁড়ে দিচ্ছি ক্যাচ লুফতে পারলে ওরা ঠিক আসবে।
কথাটা কতটা বিশ্বাসের বোঝা না গেলেও সময় কাটানোর পক্ষে মন্দ না। মীনা বলল, দিন দেখি।
সে বেশ উঁচু করে ছুঁড়ে দিল। মীনা খপ করে ধরতে গেলে সে দেখল তার বুক লাফিয়ে উঠল। শরীর ওর কাঁটা দিয়ে উঠল। সে ইচ্ছে করলে পাগলের মতো এখন সত্যি কিছু করে ফেলতে পারে। জাপটে ধরতে পারে। যে—কোনো যুবক এখন লম্পট হয়ে গেলেও দোষের না। ওর মাথা ঝিমঝিম করছিল। দিবালোকে একটা হত্যাকাণ্ডের জন্যে সে ক্রমে কেমন মরিয়া হয়ে উঠেছিল।