কবে কোন সুদূর অতীতে, হয়তো বা,
শিপ্রানদীর তীরে , উজ্জয়িনী নগরে।
শুভক্ষণে শুভলগ্নে জন্মেছিলে কবি,
সরস্বতীর বরপুত্র ,তুমি কালিদাস।
ধ্রুপদী সংস্কৃত ভাষার, মধুময় ঝঙ্কার,
বাজিয়া উঠিল তব,সুললিত স্বর্ণবীণায়।
ঝঙ্কৃত হইলো তাহে ,ভারতের আকাশ বাতাস,
তোমার হৃদয় বীনার কাব্যময় মধুর ঝঙ্কারে।
অমরাবতীর অমৃতরসে ,সঞ্চার করিলে প্রাণ,
হে কবিকূলগুরু,সংস্কৃত ভাষার পরতে পরতে।
এবে উন্মোচন করিলে এক নতুন দিগন্তের। –
তব মধুময় কাব্য সুধা ,বিধৃত আছে কবি,
ঋতুসংহারে।বিরাজ করিছে তাহা, অবিরল
ফল্গুধারার মতো ,ষড়ঋতুর সরস বর্ণনে।
বিরাজিছে তাহা, ঘটনার বৈচিত্র্যময় অনুপম
রঘুবংশমে। মন্দাক্রান্তা ছন্দে মেঘদূত নামে,
সৃজন করিলে কবি, অবলুপ্ত ভারতের, এক
কেলিকাব্য কথা। প্রভুশাপে নির্বাসিত বিরহী
যক্ষ,বিরহিনী প্রিয়ার তরে,বার্তা প্রেরিবারে,
পূর্বমেঘের প্রতি কাতরতা তার, সবিনয়ে
নিবেদিল তারে। যেথা বিরহখিন্না প্রণয়িণী তার,
বিরাজিছে মনোদুখে, সেই অলকাপুরীতে।
উত্তরমেঘে তুমি বিরচিলে কবি, অলকাপুরীর
সেই অপূর্ব বর্ণন,” হে মেঘ শোনো এবে,
অলকার কথা বলি তোমায়, দীপ্তিময়ী
ললনারা যেথা , বিদ্যুৎসম ঝলকি যায়।
হে মেঘ, ইন্দ্রধনু তোমার সঙ্গে যেমন,
অলকার প্রাসাদে ,প্রাসাদে তেমন অনবদ্য
চিত্রণ।”-হে মহাকবি,বিরচিলে যাহা,
হীরকহারের ন্যায়, দ্যুতিময় তাহা।
পাশ্চাত্যের সাহিত্যাকাশে , যেমতি ভাতিছে,
হোমার, শেক্সপীয়ার, দান্তে,গ্যেটে,প্রমুখ
উজ্জ্বল নক্ষত্র, তেমতি উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক
সম ভাতিছ হে কবি,ভারতের উদার গগনে।
সহস্রকিরণ যেমতি তার পবিত্র কিরণে,
ভেদাভেদ নাহি মানি,আলোকিত করে সবে,
তেমতি প্রতিভা তব। যার পবিত্র কিরণে,
আলোকিত মোরা,আলোকিত বিশ্ববাসী।
দিগভ্রান্ত পথিকের,ধ্রুবতারা সম তুমি,
পথের দিশারী।তব পদাঙ্ক অনুসরণ করি,
বিরচিল কত কবি, কত প্রেমকাব্য -গাথা ।
আমি এক অতি দীন হীন অভাজন,
অগণিত প্রণতি তব শ্রীচরণে মোর,
আশীষ করহ মোরে ,যেনো তব পদে,
থাকে মম মতি , হে কবি,জনম জনম।