বিষধর
হরিপদ যখন মারা গেল সামান্য চাষের জমি আর বসতবাটি টুকুই ছিল সম্বল। বেঁচে থাকতে নিজের জমিটুকু চাষ করার সঙ্গে সঙ্গে সুবোধ মহাজনের খামারে মুনিষের কাজও করতো। খেয়ে পরে দুটো পয়সা জমাতে না পারলে তার এমন রাজেন্দ্রানীর মতো মেয়ের ভালো ঘরে বিয়ে দেবেই বা কী করে!
তা সেই মেয়ে আর তার মাকে ছেড়ে আচমকাই চলে গেল হরিপদ। মহাজনের খামারে সাপে কামড়ালো তাকে!
সত্যিই দেখার মতো বিভার রূপ! যে তার সামনে আসে বাক্যহারা হয়ে যায়। অসাধারণ সুন্দরী ঐ বিভা। হরিপদর বিধবা আর তার মেয়েকে বলতে গেলে একরকম আগলেই রেখেছিলেন সুবোধ মহাজনের স্ত্রী ভারতী দেবী।
হরিপদর মৃত্যুর বছর ঘোরার আগেই সাপের কামড়ে প্রাণ হারালেন ভারতী দেবী। নিন্দুকদের মুখে আগুন! এই ঘটনায় সুবোধ মহাজনের হাত দেখতে পেল তারা। সদ্য পত্নীহারা সুবোধ বিভাকে রাজরানী করার আশ্বাস দিলেও, বাপের বয়সী লোকটার সঙ্গে বিয়ে দিতে চাইলো না বিভার মা। এত বড়ো অপমান! সহ্য হয় কখনো।
ডাইনি অপবাদে বিভার মা ভিটেমাটি ছাড়া হয়ে বিভাকে নিয়ে ঠাঁই পেল গাঁয়ের শেষে যে ভূতুড়ে তালপুকুর আছে তার পাড়ে।
সুবোধ মহাজনের দয়ামায়া নেই একথা বলতে পারবে না কেউ। তিনি নিজে খোঁজ খবর নিতে যান বৈকি!আর সেটা নিয়মিত ভাবেই।