স্বপ্ন-জড়ানো অবাক কণ্ঠে
আঁধার পালালো
সাদা পালকের শারদ সকালে
নবজাতকের পদ্মচোখের
সহসা আড়াল
লাল উদয়ন নয়ন মেলালো
গন্ধ ছড়ানো
পুবের আকাশে রক্তের ছাপ
লাল প্রচ্ছদ নিপুণ তুলির
হলুদ ফড়িং
আমরা ক’জন আগামী দিনের
চক্রবর্তী, পৌরহিত
সবুজ ধানের ষোড়শী শীষের
নিরাপদ দূরে পাহারায় রত
শুয়েছি অনেক বন্ধ্যারাত:
পাইনি ফলের লোভন পরশ
একটুক্ষণ
অথচ গীতাই ভেবেছি সঠিক
‘মা ফুলেষু কদাচন…’
সকাল সন্ধ্যা বন্ধ্যাদিনের
বিফল বিলাপ স্পর্শ বিলালো
অক্ষমতায় ক্ষমতাচ্যুত
ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ডার
বিফল দর্পে বাত্রি যেমন
কাঁপায় নিত্য নিষ্ফলতায়,
জরা ও ব্যাধির মৃত্যুশ্বাসে
নিয়ত অধীর কান্নার স্রোত
আমার মায়ের নিকানো উঠান
ভিজিয়ে দিয়েছে ব্যর্থতায়
সচতুর স্বাস, বিবর্ণ ছায়া
ভূতের আঙুলে রক্ত মেখে
কালো পীচ দিয়ে এভিন্যুর পথে
কালো চক্ষুর ক্রন্দন ঢেকে
পথ চলে নির্লজ্জায়
আমার দেহের কোন ছায়া নেই
মাথার উপরে সূর্য এখনো
সজোরে রক্ত দিচ্ছে যদিও জ্বালিয়ে
তবু তো পারিনি হায়েনার মতো
লুটে নিতে কোনো জীবন সাধও,
তালা দেয়া দ্বার ভাঙতে পারিনি
হাতের মুঠোয় এলো না কখনো
নারীর বুকের গোপন চাঁদও
একটু আগেই ডাক দিয়ে গেছে
পাড়াগাঁর এক সুকান্ত-মুখ
গাঁয়ে চলে এসো
শাহরে মড়ক নরক যাতনা
নিত্য অসুখ চেতনার পাখি
শতাব্দীর
সভ্যতা হবে মাটি চাপা পড়ে
হাজরো বছর অঙ্গে মেখে
অক্ষমতার বুকের পাঁজর
সেদিনো হাসবে আজকের মতো
খোদাই পথরে ক্ষমতাসীনের
আদর দেখে
দেশের করুণ শিথিল বক্ষে
কান পেতে আছি
ঘুম পাব বলে শুয়ে থাকি রোজ
শুয়ে থেকে থেকে
ঘুম ভেঙে যায়
দেশের শীতল বক্ষ পারে না
দুঃখ ভোলাতে শব্দ ফেরাতে
নাপাম বোমার
দখিন-পূর্ব এশিয়াবসীর
বিস্ফোরণ
আমিও পারিনি ক্লেদ-জর্জর
রক্তের ছাপ বুভুক্ষার
স্বদেশের বুকে শেফালি পাতায়
রেখে দিয়ে যেতে সুনির্ভর
স্বপ্নের ধোঁয়া কুয়াশার মতো
পারিনি ছড়াতে আকাশময়
শাণিত-দিনের সোনারঙ বোদে
কখনও পারিন
সচ্ছল চাঁদে উড়তে।
ব্যস্ত স্বদেশ কার কিৎকার
কে শোনে কখন সবাই ব্যস্ত
নীল জোছনায় জোনাকির কাঁদা
সুভদ্রা-যৌবন
ফিরে ফিরে যায পাখালীর মত
ক্লান্তি এলেই নীড়ে
আমিই তখনো লুণ্ঠিত হই
অবগুণ্ঠন খুলে দেবতার
কিছ কাব্যে ও কিছু প্রশংসায়
ছত্রভঙ্গ জনতার মীড় মীড়ে
অন্নহীনের দর্শন কিছু নেই
সহজেই কাঁদে
চলচ্চিত্রের নায়িকার মতো
দুঃখেও হাসে সহজেই