বড়দিনের রাত
বড়দিনের রাত। শীতের ঝলমলে চাদর জড়িয়ে কুয়াশার আবরণ মেখে শহর উৎসবে মাতোয়ারা। চারিদিকে আলোয় আলোকিত, পথ চলায় কতো মানুষ জন, কতো কোলাহল, গান বাজনা, খানাপিনা,পরিপূর্ণতায় ভরপুর! কোথাও যেন অভাব নেই এতোটুকুও। কাঁচের শোকেসে থরে থরে সাজানো রয়েছে নানাবিধ লোভনীয় মিষ্টান্ন, রঙবেরঙের কেক বিস্কিট, কাজুবাদাম আরো কতো কিছুই।
দাঁড়িয়ে আছে দয়িতা, কেক কিনবে বলে। এমন সময় লাল জামা গায়ে একটি ছোট্ট মেয়ে এলো বাবার হাত ধরে, তার খুব বায়না একটা চকোলেট কেক সে কিনবেই। আজ যে তার জন্মদিন। কেকের দাম শুনেই হতবাক ! অনেক্ষণ গুম হয়ে রইলেন।সবচেয়ে ছোট চকোলেট কেকটির দাম ৪০০ টাকা…! মেয়েটির বাবা করুন সুরে মনমরা হয়ে আবারও একই কথা জানতে চাইলে দোকানদার উঠলেন রেগে। একদিকে মেয়ের ছলছল চোখ,আর একদিকে ,কেক কিনি দিতে না পারা অসহায় এক বাবা। একটুক্ষন পর ৫০ টাকা দিয়ে সাধারণ একটি ছোট কেক মেয়ের হাতে তুলে দিলেন। অবুঝ ছোট্ট মেয়েরটির আবারও বায়না দাও না বাবা আমায় একটি চকোলেট কেক কিনে? এবার তো হলো না মা, পরের বার ঠিক দেবো কিনে।
কান্না কান্না চোখে ছোট মেয়েটি বাবার হাত ধরে চলে যেতেই, খুব মন কেমন দয়িতার , তার খুব ইচ্ছে করছে মেয়েটিকে একটি চকোলেট কেক কিনে দিই। কিন্তু ঠিক হবে কি! মেয়েটির বাবা কি ভাববেন! তক্ষুনি কি মনে হতেই ছুটে গিয়ে মেয়েটির হাতে একটি চকোলেট দিতেই মেয়েটির দু চোখে তখন খুশির আলো, মুখে সারল্যে ভরা হাসি। মিষ্টি করে বললো , সান্টা কেমন করে জানলো আমি এই চকোলেটই খুশী। একটু হেসে দয়িতা বললো, আজ যে তোমার জন্মদিন। সান্টাক্লজ তো এমনিতেই সব জানতে পেরে যায়। তাই তো তার ঝোলায় থাকে হরেক রকম জিনিস। মন থেকে চাইলে,সান্টা তাকে সেটা ঠিক পাইয়ে দেয়!
যেতে যেতে ছোট্ট মেয়েটি পিছন ফিরে চাইলো দয়িতার দিকে। ওদের চলে যাওয়া দেখতে দেখতে কখন যেন দয়িতার চোখের পাতায় শীতের শিশিরে নোনা জল জমে উঠলো নিজের অজান্তেই!!