Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ফিরে আয় সোনা || Samarpita Raha

ফিরে আয় সোনা || Samarpita Raha

সরুন সরুন জায়গাটা ছাড়ুন।
কে নামালো বডি!
পুলিশের বিষ্ময়কর আচরণ।
কে বলতে!
আমি নামিয়েছি
নামিয়েছেন বলতে!
নামিয়েছি!কারণ আমি ওই ছেলেটার বাবা!যদি প্রাণ থাকে!
পুলিশ গম্ভীর ভাবে বলেন কি দেখলেন!
যা দেখছেন আপনি, সবাই!
আমি একজন ডাক্তার।
তা কেন করল!
বকাবকি করেছিলেন!
প্রেম ছিল!
পরীক্ষায় রসগোল্লা পেয়েছিল!বাইক চাইছিল।
আপনি যা ইচ্ছা ভেবে নিন।যার একমাত্র ছেলে এই সতেরো বছর বয়সে চলে যায়, তাদের মানসিক অবস্থা আপনি বুঝবেন কি করে!
মা চুপ করে ছেলের মৃতদেহ আগলে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।একটাই কারণ এখনকার প্রজন্ম পিতা মাতা কাউকে পরোয়া করে না।যেটা ভাববে সেটা করবে।
না করতে দিলে অনশন।
ব্ল্যাকমেল , আমি পড়ব না।
মা লুকিয়ে প্রশ্রয় দেয়,যাতে ছেলে পড়াশোনার ক্ষতি না হয়।
বাবা জানতে পারলে বাবা ও মায়ের মধ্যে চরম অশান্তি শুরু হয়। ছেলে নিজের কানে তার গুঁজে গান শোনে , না হলে সিরিজ দেখে।
যেন কিছুই হয় নি!
এরকম অশান্তি প্রায় ঘরে ঘরে চলছে। পড়াশোনায় মন নেই, মোবাইলে গেম।
বাচাল পুলিশের মুখে অনর্গল বকবক।
আপনারা ভাবছেন আমি পাষণ্ড! আমাদের সবার ঘরে ছেলে মেয়ে আছে!
এই বাস্তব ঘটনা চারদিকে ঘটছে।তা সত্ত্বেও আমরা আপনারা শুধু কাজ কাজ করে মরি।যদিও ওদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে চব্বিশ ঘন্টা কঠোর পরিশ্রম করি।নব প্রজন্ম তাই বাইরে সুখ খোঁজে।ড্রাগ নিচ্ছে।যখন সব শেষ তখন টনক নড়ে।
পুলিশ চোখ মুছে বলেন।এক ঘটনা গতবছর আমার ঘরেও…।মেয়েটা অভিমান করে চলে গেছে।একটা দামী মোবাইল চেয়েছিল। বলেছিলাম নিজে উপার্জন করে কেনো!
জেঠু বললেন রাজু পড়াশোনায় বেশ ভালো ছিল। বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছিল।আর কোনো প্রেমঘটিত সমস্যা নেই। তবে ইদানিং বাইকের বায়না করছিল। বুঝিয়ে বলাতে সব বন্ধ।
এই নিয়ে মা বলেছিল টিউশনি করে কিনিস।আর তেমন কিছু হয় নি।ওর সব বন্ধুদের বাইক ছিল। সেটাই হয়তো ওর মনে…।
পুলিশ বলে আসলে এটা উপলক্ষ্য মাত্র।
বাবা ও মা নিজেরা সাংসারিক কাজে এমন ব্যস্ত হয়ে পড়ি, ঠিকমতো সময় দিই না।তার ফলে ওদের মন বাইরে ছুটে যায়। তাছাড়া বয়ঃসন্ধিকালে ঘরের চেয়ে বাইরের লোক আপন বেশি হয়।
দশটা পাঁচটা ডিউটি বেশ ভালো। ধরাবাঁধা সময়। তারপর পরিবার দেখো।
নতুন প্রজন্ম বড্ড স্বার্থপর। অকালে চলে গিয়ে কি হলো,তোর সারাটা জীবন পড়ে ছিল।কয়েক বছরে নিজ জীবন গড়ে যেতো।কারর কাছে হাত পাততে হতো না।
হঠাৎ বাবা বললেন সবাই ঠিক বলছেন। কিন্তু আমরা সন্তানহারা হয়ে গেলাম।ওকে ছাড়া কি করে বাঁচব।
এমন স্বার্থপর হলি বাবা , আমাদের জন্য ভাবলি না।বয়স হলে সব তো পেতিস।
বাবা ও মা ছেলের শোক ভুলতে সিলিকনের হুবহু মানুষ গড়বার কথা ভাবছেন।
শূন্য ঘরে শুধু সতেরো বছরের স্মৃতি হাহাকার করে।আর মায়ের কান্নার শব্দ শোনা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *