হৃদয়ের বাটি ভরে অশ্রু ধরেছি,
সবটুকু পেরেছি কি রাখতে ?
বাষ্প হয়ে উড়ে গিয়ে মিশেছে বিষন্ন মেঘে।
তারপর কোনো একদিন বৃষ্টি হয়ে ঝরে যাবে গভীর অরণ্যে।
কিছুটা চলকে গেছে,
তারা ছুটে গ্যাছে সমুদ্রের বুকে।
তাইতো সমুদ্র এখন
এত নুনে ভরা?
অভিমানগুলো জমতে জমতে পাহাড় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে
বন থেকে বনভূমির প্রান্তরে প্রান্তরে।
তুমি এসেছিলে যবে আমার জীবনে
তখন সবে শেষের সকাল।
দুপুর এসেছে বহুকাল পরে।
আমার জীবন তখন শুধু প্রকৃতিতে ঘেরা
এক ছোটো হ্রদ।
আমার শরীরের রক্ত
তখন ছুটন্ত নদ।
তোমার বাঁশিতে হ্রদের চারধার জুড়ে শুধু পাখিদের নাচ।
নীরবে শুনেও মেতে উঠতো সন্ধ্যার আঁধারে
বনানীর সব গাছ।
এখন সন্ধ্যে নেমেছে,
গোধূলি আলোয় তোমার চোখের নদী শুকিয়েছে বহুকাল।
গাছেরা মিছিল করে
কেটে যায় ঘুঙুরের সব তাল।
পাখিরা বাড়িতে ফেরেনা,
ভুল পথে চলে যায় তারা উড়ে।
অনন্ত জীবনটা এখন শুধুই
ধু ধু বলিতে গড়াগড়ি করে।
তুমি তাকালেই তখন তোমার চোখের তারায় সব দ্বীপ
হয়ে যেতো ব-দ্বীপ।
এখন তোমার চাওনিতে জ্বলে না তো কোনো দীপ।
চরাচর জুড়ে জ্যোৎস্না ফুঁটলে নিয়ে যেতে নির্জনে
ছাদের প্রান্তরে,
চাদর পেতে
শেখাতে ধরে ধরে শরীরের নামতা পাঠ।
এখন জ্যোৎস্নায়, নির্জনে
শুধু ক্রন্দন হা-হুতাশ ভরা মাঠ।
বাইরে বৃষ্টি নামলে
তোমাকে ডেকে নিয়ে যেত গাছেরা,
শুরু করতো কি অসীম নাচ।
সিক্ত শরীরে, অলকের জল চুঁইয়ে চুঁইয়ে
কি আগুন জ্বালাতে শরীরে।
লাখো লাখো শিল্পীর ভীড় জমে যেত,
কে কিভাবে বন্দি করবে
প্রকৃতিকে তার কোন ইজেলে।
আজ সেই ভাবনায়, কল্পনায়
হেঁটে হেঁটে যায় শত শত পিঁপড়ের সারি।
আমি কি করতে পারি?
সারাদিন বুকের মাঝে
কারা যেন লম্বা ঝাঁটা নিয়ে
ঝাড় দেয় আমার মনোভূমি।
জীর্ণ পাতা যারা পরে আছে সারাদিন ধরে
তাদের সযত্নে তোলে, হৃদয়কে চুমি।
মাঝরাতে কারা সব জীর্ণ পাতাগুলোতে আগুন জ্বালায়,
ধোঁয়া ওঠে, কটু গন্ধ ছাড়ে।
আমার হতাশা গুলো চিড়বিড় করে পোড়ে।
আমার হ্রদেতে কারা যেন তালা ঝুলিয়েছে,
বাজনাও বাজতে দেয়না।
এক এক করে মরে গেলো সব ফুল,
বাকি ছিলো হাস্নুহানা।
তবু আমি,
একটা সূর্যমুখী ফুলের চারা পুতেছি।
যদি কোনোদিন সে পূব দিকে মুখ করে ফুঁটে ওঠে।
বেলা শেষ__
সূর্যমুখী এখনো পশ্চিমে হেলে আছে।