প্রেমের ফাঁদে
সিক্তা খুব বিরক্ত। কালকেই তিনমাসের জন্য পুরুলিয়া যেতে হবে ট্রেনিংয়ে। সেই মফঃস্বল, যা তার একদম পছন্দ নয়। ঠাম্মি বললেন, কেন মফঃস্বল খারাপ নাকি? মফঃস্বলে যদি তোমার বিয়ে হয় তখন কি করবে? সিক্তা বলে, রাজপুত্রুর হলেও মফঃস্বলের ছেলে বিয়ে করবোনা। কোলকাতার মেয়ে আমি ,ভুলেও যাবোনা মফঃস্বলে। পরদিন তল্পিতল্পা গুছিয়ে ট্রেনে চাপলো সিক্তা। ট্রেন লেট। বেশ রাত হয়েছে। সিক্তা চিন্তিত। পুরুলিয়ার কিছুই চেনেনা সে। বেশি রাতে গন্তব্যে পৌঁছাবে কি করে?
সামনের সিটের ছেলেটা মাঝে মাঝেই তাকাচ্ছে। চোখে চোখও পড়েছে সিক্তার। গ্ৰাম্য ছাপ থাকলেও দেখতে সুদর্শন। দুটো স্টেশন আগে উঠেছে। সিক্তার ভয় হলো, এভাবে দেখছে কেন?
একটু পরে ছেলেটা বললো, কোথায় যাবেন? সিক্ততা শুনেও উত্তর দিলোনা। ছেলেটি আবার বললো, এ গাড়ি রাঁচি যাবে; এত রাতে পুরুলিয়ায় নামবেন তাই জিজ্ঞাসা করছি।
পুরুলিয়ায় একটু রাত হলেই রাস্তাঘাট শুনসান হয়ে যায়। আমি পুরুলিয়ার ছেলে, রাঁচিতে যাচ্ছি।
এবার সিক্তা উত্তর দিলো, সে বেলকুঁড়ি যাবে। ছেলেটি বললো, আমার চেনা অটোচালক আছে তাকে ফোনে বলে দিচ্ছি, ওর গাড়িতে চলে যাবেন। দেখবেন, কমলা রঙের অটো। ও আপনাকে খুঁজে নেবে। ওর নাম ঝন্টু, আমি অতনু। ভরসা রাখতে পারেন। নাহলে অনেক মদ্যপ চালক থাকে রাতে। সিক্ততা রাজি হলো।
প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে ট্রেন চললো। ছেলেটি চলে গেলো হাত নাড়তে নাড়তে। সিক্ততাও হাত নাড়লো। মনের মাঝে ছেলেটির প্রতি ভালোলাগার অনুভূতি।
ট্রেনিং শেষে ফিরবার আগের দিন অযোধ্যা পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে আপার ড্যাম ব্রিজে অতনুর সাথে দেখা। অতনুই এসে কথা বললো। সিধু কানহু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর; ছাত্রদের নিয়ে এসেছ।
সিক্তার ভালোলাগা আরো বেড়ে গেল। পরিচিতির সঙ্গে ফোন নম্বর আদানপ্রদান। ক্রমে ঘনিষ্ঠতা। অবশেষে বিয়ে। শ্বশুরবাড়ি পুরুলিয়া। স্বামীর সাথে থাকার জন্য পুরুলিয়ায় ট্রান্সফারের আবেদন করলো অফিসে। এখন আবেদন মঞ্জুরের অপেক্ষায়।