চির নতুনের দিয়েছ ডাক, হৃদয়ে শুধু তোমারই নাম,
পঁচিশে বৈশাখে এ প্রাতে লহ গুরু বিনম্র প্রণাম।
আজও অন্তরে রবীন্দ্রনাথ,পথে,পথে তোমারি গান,
অক্ষরশিল্পে সাজিয়ে প্রেম , তুমিই করেছিলে আহ্বান।
শতকোটি প্রনামান্তে তোমারে স্মরণ করি হে বিশ্বকবি-
বিশ্বমাঝে ক্ষমা আর ভ্রাতৃত্বের তুমিই এঁকেছিলে ছবি।
চলার পথ তোমার ছিল নাতো মসৃন, কত বিয়োগব্যথা-
কত আত্মজন এল,অকালেই গেল তুমি নিঃস্বপত্ন হেথা।
আনন্দধারা বহিবে ভুবনে তোমার ত্যাগ,তিতিক্ষা সন্ন্যাস জীবন-
শান্তিনিকেতন এক অমর সৃষ্টি তোমার মহানুভবতার ভুবন।
তুমি কবি,সাহিত্যিক,দার্শনিক তুমি সুর শ্রষ্ঠা,
তুমি প্রতিবাদী,সমাজসচেতক,তুমি যুগচেতনার দিকদ্রষ্টা।
জ্ঞান ও প্রেমের অসীম আধার দিয়েছ লেখনীর মাঝে-
তোমার গানে জুড়াইতে চাই এ মনপ্রাণ সকাল ,সাঁঝে।
তোমার গীতাঞ্জলিতে ধন্য ভারত আনলে নোবেল খানি-
সবে চমকিত ,আপ্লুত দেখে তোমার অমর লেখনী।
আর একবার ফিরে এসে ঘটাও নবযুগের উত্থান –
ওগো সংস্কারমুক্ত,সর্বগুণান্বিত ভারতের শ্রেষ্ঠ সন্তান।
হে কবি সারাটি জীবন খুঁজেছ মনের মানুষ তুমি সদা আনন্দময়,
এতোব্যথা বুকে বয়ে সদাই ছিলে হাস্যময়।
সাহিত্যের নবকলবর ,আধুনিক কাব্য,করেছিলে কতই চিত্রসৃষ্টি-
মহামিলনের দর্শনে করেছ তিনটি দেশের জাতিওসঙ্গীত সৃষ্টি।
মহাকবি তুমি ধর্মীও,সামাজিক গোঁড়ামির ধ্বংসে কলম ধরেছিলে,
জালিনওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডে নাইট উপাধিও ত্যাগ করেছিলে।
হে মহাজীবন আজ মনে হয় আমরা তোমার অযোগ্য উত্তরাধিকার –
তোমার বাণী রাখিনি মনে বুঝিনি তুমিই জাতির অহংকার।
দীর্ঘ আশি বছরের সমুজ্জ্বল পরিক্রমা তুমি অমলিন প্রতি প্রাঙ্গনে,
তোমার মহাপ্রয়ানে আজ মঙ্গল দ্বীপ জ্বালাই সকল শুভ্র অঙ্গনে।
স্নিগ্ধতনু,নিদ্রারসে ভরা কুপমণ্ডূক বাঙালি তুমি নও,
সমাজচেতনায়,মুক্তমনে,গণআন্দোলনে সদা তুমি রও।
চলে গেছে কবি তবু মনে হয় হৃদমাঝারে আজও বসে আছে ,
সদা তাঁরে অনুভব করি গানে,কবিতায় আমাদের কাছে,কাছে।
সকল দ্বন্দ্ব,বিরোধে আজও দেখি রবীন্দ্রনাথেই অবসান-
শুধু যাওয়া-আসা,শুধু ভালোবাসা আর মুক্তজীবনের আহ্বান।
তোমার প্রয়ান দিবসে তোমারি স্তবগানে ভাঙুক সকল ভুল ,
আজ ধূপের ধোঁয়ায়,ফুলমালায় ফুটুক রবীন্দ্র প্রভার ফুল।