Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » প্রকৃত ভালোবাসা ভোগের চেয়ে ত‍্যাগের ইতিহাসকে স্বীকার করে || Sibani Gupta

প্রকৃত ভালোবাসা ভোগের চেয়ে ত‍্যাগের ইতিহাসকে স্বীকার করে || Sibani Gupta

প্রকৃত ভালোবাসা ভোগের চেয়ে ত‍্যাগের ইতিহাসকে স্বীকার করে

‘ ভালোবাসা ‘ এক স্বর্গীয় অনুভূতি।
স্বর্গের পারিজাত নির্যাসের মতোই ভালোবাসা পবিত্র ও স্নিগ্ধ।
প্রকৃত যে ভালোবাসা তাতে ভোগের চেয়ে ত‍্যাগের প্রাধান্য বেশী থাকে।
ভোগ হলো ,কেউ কাউকে ভালোবাসলে
তাকে ঘিরেই সংসার জীবন রচনা করা,বা কারো প্রতি সাময়িক দিনের মোহজনিত ভালোবাসার কারনে তাকে সম্ভোগ করা।এখানে মানুষের প্রকৃত ভালোবাসার কোন স্থান নেই।এটা সম্পূর্ণ ভোগবাদ।কারন,যেখানে কামনা,বাসনা ইত‍্যাদি ষড়রিপু বসতি করে,সেখানে পবিত্র ভালোবাসা থাকেনা ।তাই,সচরাচর দেখা যায়,মানুষ ভালোবেসে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় কিন্তু কিছুকাল পরে সংসারের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে অধিকাংশ মানুষের জীবনেই ভালোবাসা শব্দের ভালোটা নিশ্চিহ্ন হয়ে শুধু যাপিত পথে বাসাটাই সার ভেবে আঁকড়ে থাকে।
যতোই কেন না মর্ডানিজমে আকৃষ্ট হোক মানুষ প্রকৃত ভালোবাসার সংজ্ঞা কিন্তু আজো অবিকৃত রয়ে গেছে।যা বিকৃত তার ভোগবাদ সর্বস্ব বাসা।
সেই অনাদি কাল থেকে যুগের ধারা যতোই কেন বদলাক না,ভালোবাসা আজো অনুপম স্বর্গীয় ।
পুরাণ কাহিনী,রামায়ণ,মহাভারত ইত‍্যাদি যতোই পড়া যায় ভালোবাসার মাহাত্ম‍্য ততোটাই বেশী করে উপলব্ধ হয়। যদিও ,সেখানেও দেখা যায়, মানুষ ভালোবাসার মানুষটিকে পেতে ছলে,বলে,কৌশলে তাকে করায়ত্ত করতেই উন্মুখ।এজন‍্য ,অতীতেও কতো কতো যুদ্ধ,বিবাদ সংঘঠিত হয়েছে। তবে,শেষ পর্যন্ত প্রকৃত ভালোবাসার জয় হয়েছে।
অনেক মানুষকেই দেখা যায়,যে তারা ভালোবেসে বিয়ে করে সুখে স্বস্তিতে সংসার করছে,এর মূলে রয়েছে পরস্পরের প্রতি সমঝোতা ও মূল‍্যবোধ।এরা ভোগের স্রোতে ভেসে যায়নি, বরং সকলকে নিয়ে মিলেমিশে জীবন কাটাচ্ছে বা কাটিয়েছে ।এদের ভালোবাসাতে ত‍্যাগের অর্থাৎ আত্মকেন্দ্রিকতা নেই বলেই তাদের জীবনে সমস‍্যাও নেই।ভালোবাসার আরেকটি রূপ হলো ত‍্যাগের মাধ‍্যমেভালোবাসা ।এখানে দেখা যায়,ভালোবাসার মানুষটির কল‍্যাণের জন‍্য,তার পরিবার গত ,জাতিগত,ধর্মগত,শিক্ষাগত ইত‍্যাদি নানাবিধ কারনেই তারা পরস্পর ত‍্যাগের পথ বেছে নিয়েছে।।প্রকৃত ভাবে কেউ যখন কাউকে ভালোবাসে তার সুখের জন‍্য, পারিবারিক শান্তিরক্ষার জন‍্য নিজের ভালোবাসাকে আপন হৃদয়ের লুকিয়ে রেখে ভালোবাসার পাত্র বা পাত্রীকে জীবনের উন্নতির সোপানে এগিয়ে যেতে সাহায‍্য করে।
আমার দেখা এমন একটি ঘটনার কথা বলছি- এই শহরের সর্বজন পরিচিত মানুষ দুজনেই । একজন উচ্চকূলের ব্রাহ্মণ সন্তান,নামী ব‍্যবসায়ী,অতি সুদর্শন,মিষ্টভাষী,সদালাপী । অপরজন ,উচ্চশিক্ষিতা ,কায়স্থ ,শ্রীময়ী ও শিক্ষিকা। প্রচন্ড ভালোবাসতো পরস্পরকে।
পাত্রের পিতা-মাতা বংশ মর্যাদা খোয়াতে রাজী নন,তারা বিষ খাবেন,ছেলে যদি ওই মেয়েকে বিয়ে করে।কিছুতেই তাদের রাজী করানো গেলোনা ।মেয়েটি খুব বুদ্ধিমতি,সে পাত্রটিকে বহুবোঝাতে চেষ্টা করলো যাতে ,পিতা-মাতার নির্বাচিত মেয়েকেই সে বিয়ে করে।
ছেলের যেমন ধনুকভাঙ্গা পণ ,ওই মেয়ে ছাড়া বিয়েই করবেনা ,তেমনি ,মেয়ের বাড়ির চাপে মেয়েও তীব্র জেদে অটল,সে জীবনে বিয়েই করবেনা
কেটে গেলো বছরের পর বছর।বাড়ির অশান্তি দূর করতে তাদের মাঝে কথাবার্তা বন্ধ, দেখাসাক্ষাৎ অব্দি ।সময় স্রোতে তারা দু’জনেই যৌবনকাল থেকে একদিন বৃদ্ধ হলো তবু তাদের হৃদয়ে ভালোবাসা এতটুকু কমেনি।
এটাই হলো প্রকৃত ভালোবাসা। ভালোবাসা ত‍্যাগের মাঝেই চিরদিন তার মহিমা বজায় রেখেছে । যে ভালোবাসার কথা উচ্চারণ করতে মানুষ গর্বিত হয় ,সেটাই প্রকৃত ভালোবাসা,যা ভোগে নয়,ত‍্যাগেই উজ্জ্বল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *