Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » পিকনিক || Maya Chowdhury

পিকনিক || Maya Chowdhury

পিকনিক

জিয়া, রিম্পা, অনন্যা, সংগীতা ও ঈশিকারা ঠিক করেছিল কোথাও পিকনিক করবে। বড়দের ছাড়া তো পিকনিক সম্ভব নয়, তাই সকলের মায়েদের সাথে ওরা যাবে। স্কুলে বসে জায়গা ঠিক করল, সঙ্গে খাবারের মেনু। ঠিক হয়েছিল বাসে করে যাবে। হঠাৎ স্কুলের নোটিশ বোর্ডে পিকনিকের কথা লেখা। ওরা আনন্দে নাচতে লাগলো। বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিকে যাওয়াএকটা আলাদা মজা। মায়েরা শাসন করেন, তাদের থেকে স্কুলের দিদিমনিরা অনেক ভালো। 23 শে ডিসেম্বর ওদের দিন ঠিক হয়েছিল, ঘটকপুরের এর কাছে একটা বাগান বাড়িতে। ওদের নানারকম প্ল্যান, কি পোশাক পরবে, কি খেলা খেলবে। সঙ্গীতা চিৎকার করে বলল, দিনটা এখনও এল না কেন? কবে যে যাওয়া হবে। রিম্পা ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল, হয়ে গেলে তো আনন্দ, চলে যাবে, আবার পড়া। অনন্যা পড়তে বেশি ভালোবাসে, তাই চাইছিল তাড়াতাড়ি পিকনিকটা হয়ে যাক। নির্ধারিত দিন উপস্থিত হল। কী মজা! আগের রাতে ঘুম নেই, ভোরবেলা উঠতে হবে। ভোরবেলা কম্বল ছেড়ে স্নানে যাওয়া খুব কষ্টের। স্কুল ড্রেসটা পরে নিয়ে ওরা স্কুলের দিকে দৌড়াল। স্কুলে লাইন করে বাসে যখন উঠলো, বন্ধুরা আনন্দে আত্মহারা। দিদিমণিদের সাথে আজ প্রচুর মজা করবে। রঙিন বেলুন বাসের জানালায় উড়ছে। বাসের মধ্যে ওরা চিৎকার , গান ,নাচ করছে। পাঁচটা বাস যাচ্ছে লাইন দিয়ে, খুব মজা। যত গান চলছে বক্সে আনন্দের মাত্রা তত বাড়ছে। কখনো বাস থামিয়ে মিষ্টি স্ন্যাক্স নিচ্ছেন টিচাররা। ওদের মধ্যে ভাগ করে দিচ্ছেন। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে পৌঁছে গেল বাগানবাড়িতে। রাস্তায় কত ভেড়ি, ফসলের ক্ষেত পড়ল। ওরা আগে ভেড়ি দেখেনি। এত জল, মাছ ধরার জন্য ঘর দেখে ওদের খুব চিৎকার। নানারকম দোলনা সাজানো ছিল ওখানে। ছুটোছুটি করতে লাগলো দোলনাতে উঠবে বলে। কয়েকটা গ্রুপ ব্যাডমিন্টন খেলতে ব্যস্ত হয়ে গেল। জিয়া ডাকতে লাগল, এদিকে ফুলবাগান দেখবি আয়। কত রংবে রঙের ফুল। ছোট ফুলগুলোকে ওরা ধরে আদর করতে লাগল। রিম্পা ফলের বাগানে ছুটল। এত্ত ফল গাছ। আপেল, আঙুর, সবেদা, কলা, কত কী ফল। সঙ্গীতা আর অনন্যা গেল আরেকটা বাগানে। সেখানে ছিল বেশি টাই মশলা। তেজপাতা, দারচিনি, ছোট এলাচ, বড় এলাচ , গোলমরিচের গাছ। তারপর সকলে গিয়ে ওই গাছগুলোর সঙ্গে পরিচিত হলো। কামরাঙা, স্ট্রবেরি, চেরি গাছ অনেক লাগানো ছিল। ওরা দিদিমণিদের সঙ্গে ওই গাছগুলো সম্বন্ধে জেনে নিল। একটা জলাশয় শালুক আর পদ্ম ফুটে ছিল, অনন্যা শালুক পদ্ম মিশিয়ে ফেলছিল। দিদিমণি ওকে বুঝিয়ে দিলেন কোনটা শালুক আর কোনটা পদ্ম ফুল। এই প্রথম ওরা পানি ফলের গাছ দেখলো। আগে এত সবজির গাছ চিনতো না। ক্যাপসিকাম দেখে আনন্দে আত্মহারা। অনন্যা তো ছবি আঁকতে বসে গেল। কিছুক্ষণ ছোটাছুটির পর লুচি ,আলুর দম, মিষ্টি আর কমলালেবু ব্রেকফাস্ট করল। এরপর কিছুক্ষন মজার গানের সঙ্গে নাচ। আজ দিদিমণিরা বন্ধু, কেউ বকবেন না। একেবারে স্বাধীন। কিছুক্ষণ দিদিমণিদের সাথে ব্যাডমিন্টন খেলল। বিশ্রামের ঘরগুলো মাটি দিয়ে তৈরি। আদিবাসীদের ঘরের মতো ফুল লতা পাতা আঁকা। ওরা এমন ঘর দেখে মহা খুশি। এরপর লাঞ্চের সময় হয়ে গেল। মাংস ,ভাত ,চাটনি দিয়ে দুপুরের খাবার শেষ হলো। বড়রা এবং দিদিমণিরা খাবার দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। তারপর ওদেরকে নিয়ে একটা প্রতিযোগিতা হল। বল ছুঁড়তে হবে। যার যত দূরে যাবে বল, সেইভাবে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় হবে। এ ব্যাপারে ঈশিকা পারদর্শী। সব প্রতিযোগীকে হারিয়ে ঈশিকা ফার্স্ট হল। পুরস্কার পেয়ে ওরা সবাই লাফালাফি করতে লাগলো। শীতের নরম আলো ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল। সারা দিনের শেষে বাসে করে আবার সকলে বাড়ি ফিরে এলো। দিনটা ওদের কাছে স্মরণীয় হয়ে রইল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress