১
ফুলগুলো সরিয়ে নাও,
আমার লাগছে।
মালা জমে জমে পাহাড় হয়
ফুল জমতে জমতে পাথর।
পাথরটা সরিয়ে নাও,
আমার লাগছে।
এখন আর
আমি সেই দশাসই জোয়ান নই।
রোদ না, জল না,হাওয়া না–
এ শরীরে আর
কিছুই সয় না।
মনে রেখো
এখন আমি মা-র আদুরে ছেলে–
একটুতেই গলে যাবো।
যাবো বলে
সেই কোন সকালে বেরিয়েছি–
উঠতে উঠতে সন্ধে হল।
রাস্তায় আর কেন আমায় দাঁড় করাও?
অনেকক্ষণ থেমে থাকার পর
গাড়ি এখন ঢিকিয়ে ঢিকিয়ে চলছে।
মোড়ে ফুলের দোকানে ভিড়।
লোকটা আজ কার মুখ দেখে উঠেছিল?
২
ঠিক যা ভেবেছিলাম
হুবহু মিলে গেল।
সেই ধূপ , সেই ধুনো, সেই মালা,সেই মিছিল–
রাত পোহালে
সভা-টভাও হবে।
( একমাত্র ফুলের গলা-জড়ানো কাগজে লেখা
নামগুলো বাদে)
সমস্তই হুবহু মিলে গেল।
মনগুলো এখন নরম–
এবং এই হচ্ছে সময়।
হাত একটু বাড়াতে পারলেই
ঘাট-খরচাটা উঠে আসবে।
এক কোনে ছেঁড়া জামা পরে
শুকনো চোখে
দাঁতে দাঁত দিয়ে
ছেলেটা আমার
পুঁটুলি পাকিয়ে ব’সে।
বোকা ছেলে আমার,
ছি ছি,এই তুই বীরপুরুষ?
শীতের তো সবে শুরু–
এখনই কি কাঁপলে আমাদের চলে?
ফুলগুলো সরিয়ে নাও,
আমার লাগছে।
মালা জমে জমে পাহাড় হয়
ফুল জমতে পাথর।
পাথরটা সরিয়ে নাও,
আমার লাগছে।
৩
ফুলকে দিয়ে
মানুষ বড় বেশি মিথ্যে বলায় বলেই
ফুলের ওপর কোনোদিনই আমার টান নেই।
তার চেয়ে আমার পছন্দ
আগুনের ফুলকি
যা দিয়ে কোনোদিন কারো মুখোশ হয় না।
ঠিক এমনটাই যে হবে,
আমি জানতাম।
ভালোবাসার ফেনাগুলো একদিন উথলে উঠবে
এ আমি জানতাম।
যে-বুকের
যে আধারেই ভরে রাখি না কেন
ভালোবাসাগুলো আমার
আমারই থাকবে।
রাতের পর রাত আমি জেগে থেকে দেখেছি
কতক্ষনে কিভাবে সকাল হয়;
আমার দিনমান গেছে
অন্ধকারের রহস্য ভেদ করতে।
আমি এক দিন , এক মুহূর্তের জন্যেও
থামি নি।
জীবন থেকে রস নিংড়ে নিয়ে
বুকের ঘটে ঘটে আমি ঢেলে রেখেছিলাম
আজ তা উথলে উঠল।
না।
আমি আর শুধু কথায় তুষ্ট নই;
যেখান থেকে সমস্ত কথা উঠে আসে
যেখানে যায়
কথার সেই উৎসে
নামের সেই পরিনামে,
জল-মাটি-হাওয়ায়
আমি নিজেকে মিশিয়ে দিতে চাই।
কাঁধ বদল করো।
এবার
স্তুপাকার কাঠ আমাকে নিক।
আগুনের একটি রমনীয় ফুলকি
আমাকে ফুলের সমস্ত ব্যথা
ভুলিয়ে দিক॥