Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » নীলবসনা সুন্দরী || Panchkari Dey » Page 48

নীলবসনা সুন্দরী || Panchkari Dey

পশ্চাৎ হইতে কে উত্তর করিল, কি আশ্চর্য্য! স্ত্রীলোকের কণ্ঠস্বর না? দেবেন্দ্রবিজয় ও মনিরুদ্দীন উভয়েই মহা বিস্মিত হইয়া মাথা তুলিয়া ফিরিয়া দেখিলেন, মুক্ত কক্ষদ্বারে দাঁড়াইয়া মুক্তকেশা দিলজান। তাহার কৃষ্ণচক্ষুঃ জ্বলিতেছে, -সুকৃষ্ণকেশপাশ আলুলায়িত-কতকগুলা চোখে মুখে আসিয়া পড়িয়াছে-কি এক তীব্র উত্তেজনায় তাহার আপাদমস্তক কম্পিত হইতেছে! তাহার দক্ষিণ হস্তে একখানি সুদীর্ঘ শাণিতা ছুরিকা-তাহাও ভয়ানক বেগে কাঁপিয়া কাঁপিয়া উঠিতেছে-দৃষ্টি উন্মাদের; কিন্তু স্বর অত্যন্ত কঠিন ও দৃঢ়-দৃঢ়স্বরেই দিলজান বলিল, “আর কেহ নহে, এই দিলজান নিজে। আমার জন্য একজন নির্দ্দোষীকে দণ্ডিত করিবার চেষ্টা করিয়ো না। আমি অন্তরালে থাকিয়া সমুদয় শুনিয়াছি-কাহারও কোন দোষ নাই-আমি শয়তানীই সকল অনর্থের মূল। তোমরা যে আমার অপরাধ একজন নির্দ্দোষীর উপরে ফেলিবে, তা’ আমি তোমাদের কথার ভাবে ফরিদপুরের সেই বাগানেই বুঝিতে পারিয়াছিলাম। যত শীঘ্র পারিয়াছি, এখানে চলিয়া আসিয়াছি। আরও শীঘ্র পৌঁছতে পারিলে ভাল হইত-মল্লিক সাহেবকে সকল কথা বলিয়া সাবধান করিয়া দিতে পারিতাম। ঠিক সময়ে আসিতে পারি নাই-যাহা মনে করিয়াছিলাম, তাহা হইল না। তাহা না হইলেও এখানে অসিয়া তোমাদের হাত হইতে এখন একজন নির্দ্দোষীকে যে রক্ষা করিতে পারিলাম, ইহাই আমার পক্ষে যথেষ্ট। কে আমার ভগিনীকে খুন করিয়াছে, শুনিতে চাও? আমি নিজে-নিজের হাতে নিজের ভগিনীকে খুন করিয়াছি-রোষে, দ্বেষে, প্রাণের জ্বালায়, দারুণ ঈর্ষায় উন্মাদিনী হইয়া ভগিনী ভগিনীর বুকে ছুরি বসাইতেও কুণ্ঠিত হয় নাই। সৃজান যেমন আমাকে অপেক্ষা করিতে বলিয়া বাড়ী হইতে বাহির হইল, আমিও তখনই গোপনে তাহার অনুসরণ করিলাম। সৃজান এখানে আসিলে আমি পথে গোপনে তাহার অপেক্ষা করিোতে লাগিলাম। এখান হইতে সে বাহির হইলে আবার আমি তাহার অনুসরণ করিয়া মেহেদীবাগানে তাহাকে ধরিলাম। সে কিছুতেই মল্লিক সাহেবকে ত্যাগ করিতে চাহিল না। আমি তাহাকে বুঝাইতে চেষ্টা করিলাম। সে না বুঝিয়া মর্ম্মভেদী কটুক্তি বর্ষণ করিয়া আমার রাগ বাড়াইয়া দিল। আমি আর সহিতে না পরিয়া এই ছুরিতে তাহাকে খুন করিলাম।” হস্তস্থিত রৌপ্যমণ্ডিত সুদীর্ঘ ছুরিকা দেবেন্দ্রবিজয়ের পায়ের কাছে সজোরে নিক্ষেপ করিল। শারীরিক ও মানষিক উভয়বিধ দারুণ উত্তেজনায় তখনই দিলজানের সংজ্ঞা লুপ্ত হইয়া গেল। সে সেইখানে মৃতবৎ লুটায়া পড়িল।
দেবেন্দ্রবিজয় ছুরিখানি তাড়াতাড়ি কুড়াইয়া লইলেন। এবং মনিরুদ্দীন স্তম্ভিতভাবে দাঁড়াইলেন। পরক্ষণে মনিরুদ্দীন ছুটিয়া গিয়া দিলজানের মাথার কাছে ভূলগ্নজানু হইয়া বসিয়া ব্যাকুলভাবে বলিলেন, “একি ভয়ানক ব্যাপার!”
দে। সত্য হইলে খুব ভয়ানক বৈ কি!
ম। আপনি কি বিশ্বাস করেন না?
দে। একটি বর্ণও না।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *