Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » নির্মম স্বীকারোক্তি || Rana Chatterjee

নির্মম স্বীকারোক্তি || Rana Chatterjee

মেয়েদের সুরক্ষার জন্য
পৃথিবীর সবথেকে দুটো নিরাপদ স্থানের
                একটা হল মাতৃগর্ভ অন্যটি কবর!
না এটা কোনো প্রতিবাদী মহিলার গরম ভাষন
                বা দৃষ্টি আকর্ষণী বক্তব্য নয়,
চরম বিতৃষ্ণায় এই কথাটা সুইসাইড নোটে ,
উল্লেখ করে মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়েছিল
    সাধারণ পরিবারের কলেজ পড়ুয়া কন্যাটি।

দিনের-পর-দিন স্বপ্ন দেখানো চোখে,
প্রেমিকের যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া মেয়েটি, মৃত্যুর তিনদিন পর যখন হিমশীতল লাশ হয়ে বেরুলো
পুলিশি তৎপরতায় উদ্ধার হওয়া ইউজ এন্ড থ্রো কলমে লেখা সুইসাইড নোট পড়ে স্তম্ভিত আপনজন,
ততক্ষনে মেয়েটি ভোগ বিলাসের পন্য রূপে ব্যবহৃত হয়ে, নিজেকে আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলতে দেখেছে।
জীবনের ছোট্ট পরিসরে তার জীবিত অবস্থায় লেখা এই চরম আত্ম উপলদ্ধি আধুনিক সুসভ্য সমাজকে কি বার্তা দিতে চাইলো সে খেয়াল কি আছে কারুর!?

যে কন্যারা আজ  বাড়িতেই নিজের মানুষের কাছে সুরক্ষিত নয়,
সম্প্রতি সংবাদ শিরোনামে উঠে আসা এক লজ্জাজনক ঘটনা,
যেখানে বাবা নামক ভরসার বট বৃক্ষটির চরম কামনায় শিকার হয়েও ভয়ে কুঁকড়ে মুখ বুজে অবস্থান করতে বাধ্য হয়েছে কিশোরী,
সে জানে রাস্তাঘাট, বাজার,ট্রেন বাস সর্বত্র আরও সহস্রাধিক কামুকদের লোলুপতার চেয়ে ঘর পোড়া গরু হয়ে একজন পুরুষের শোষণ কখনো যেন বেশি নিরাপদ,
এতে যদি থাকে দুবেলা দুমুঠো অন্ন যোগান পাওয়ার ভরসা,পরিস্থিতি আর মৃত্যুভয়!
এভাবেই মুখ বুজে সহ্য করাটাই যেন কখন অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছে কেউ কেউ..
                    হায়রে ভাগ্যের পরিহাস!

এ তো গেলো সামান্য দুটো টাটকা উদাহরণ…
  এমনই প্রতিনিয়ত ঘটে চলা হাজারো ঘটনা দিব্যি লোকচক্ষুর অন্তরালে,
মাঝে মাঝে কখনো আগুনের ফুলকির মতো ঠিকরে বেরিয়ে আসে!
বেঁচে থাকার স্পৃহায় আঁকড়ে ধরতে চাওয়া খড়কুটো!

অন্যায়কারীর শাস্তি চাই পোস্টার প্ল্যাকার্ড, জ্বলন্ত  মোমবাতিতে জেগে ওঠে শহর,
আবার একই মুহূর্তে প্রজ্বলিত শিখার নিচে থাকা অন্ধকারে একটার পর একটা শিশু, ফুল পাপড়ির  ঝরে পড়া আর্তনাদ, রুখে দেওয়ার চেনা কাল প্রবাহ!

পুরুষদের স্বাবলম্বী হতে যেখানে লড়াই করতে হয়, মেয়েদের প্রতিনিয়ত লড়াই জারি সেখানে, বেঁচে থাকার, টিকে থাকার।
তাইতো চরম সত্যটা সকলের কাছে তুলে ধরে একমাত্র নিরাপদ স্থান মায়ের গর্ভ এবং
কবরকে দেখিয়ে সমাজের গালে কষে থাপ্পড় দিয়ে গেছে আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া মেয়েটি।

আর সেই গুণধর প্রেমিক, রাতের তারা গুনে স্বপ্ন দেখানো বীরপুঙ্গব, হ্যাঁ ধরা পড়েছে সে সহ  উল্লেখিত দ্বিতীয় পাশবিক ঘটনা ঘটানোর  ভিলেন বাবা,
এরাই সুস্থ সমাজকে ছ্যাঁকা  দিয়ে দগদগে ঘা  করে তবু নিজেদের কামনাকে লাগাম দিতে হয় ব্যর্থ,যার খেসারত দিতে হয় সভ্য সমাজকে।

 মাঝে মাঝে মনে হয় সৃষ্টিকর্তার কাছে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা ভঙ্গিতে বলি এই পৃথিবীর সেরা সৃষ্টি,
জগতের ধারক-বাহক,সংসারের আধার,
ফুলের মত সুন্দর তোমার সৃষ্টি নারী শরীরের মধ্যেই  কেন যে নির্মাণ করেছো তাদেরই ধ্বংসের চাবিকাঠি !
তাইতো প্রতিনিয়ত ভূমিকম্পের মতো কেঁপে ওঠে শহর,
কখনো শিরোনামে ছয় বছরের নাবালিকা,
কখনো কিশোরী, মহিলা কখনো সত্তর ঊর্ধ্ব বৃদ্ধা! সত্যিই আত্মহত্যাকারী কিশোরীর স্বল্প অভিজ্ঞতা অথচ সর্ববৃহৎ অনুভব  “কবর” ও “মাতৃগর্ভ” ছাড়া     
মেয়েরা সর্বত্রই অসুরক্ষিত।
মানতে খারাপ লাগলেও এটা চরম বাস্তব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *