Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » নিউটন ও ভ্যান গঘ || Sunil Gangopadhyay

নিউটন ও ভ্যান গঘ || Sunil Gangopadhyay

তিনটে দেবদারু গাছ আকাশের দিকে উঠে যাচ্ছে
আপেল চিনতেন নিউটন; সিকামোর, সাইপ্রেস দেখেননি?
এই দু’ লাইন লিখেই খটকা লাগে। বাংলা কবিতা যুক্তাক্ষর
দিয়ে লাইন শেষ করার তেমন রীতি নেই। তা ছাড়া ক্রিয়াপদ
‘যাচ্ছে’র সঙ্গে কীসের মিল? মিল দিতেই বা হবে কেন? একটু
ঘুরিয়ে প্রথম লাইনটা অনায়াসে এভাবে লেখা যেত, ‘তিনটে
দেবদারু গাছ উঠে যাচ্ছে আকাশের দিকে’। নাঃ, ভাল শোনায়
না, ‘উঠে যাচ্ছে’ই এখানে প্রধান।

প্রথম পর্বে, ‘তিনটে দেবদারু গাছ’ ঠিকই আছে, উচ্চারণ হবে
তিন্টে দেবদারু গাছ, পরিষ্কার আট মাত্রা। কিন্তু দ্বিতীয়
লাইনের ‘আপেল চিনতেন নিউটন’? যদি উচ্চারণ এ রকম হয়,
আপেল চিন্তেন নিউটন, তাতেও মাত্রা বেশি হয়ে যায়। হোক
না। বুদ্ধদেব বসু খুবই আপত্তি করতেন, হসন্ত নিয়ে তাঁর সঙ্গে
আমার মত পার্থক্য কোনো দিন মেটেনি।

দেবদারু গাছগুলি যেন সত্যিই দেবতাদের হাতছানি পেয়ে উঠে
যাচ্ছে ওপরে, মাত্রা ছাড়িয়ে, আরও ওপরে, পাহাড়ের শিখর ছাড়িয়ে, মেঘের
সঙ্গে জড়াজড়ি শেষ করে, মাধ্যাকর্ষণকে তুড়ি মেরে!

সেটাই তো কথা। নিউটন আপেল গাছ থেকে আপেল খসে
পড়তে দেখে…। কিছু কিছু মানুষ অন্য মানুষদের ছাড়িয়ে
যায়। কিছু কিছু গাছ আর সব গাছকে ছাড়িয়ে উঁচু হতে হতে,
আরও উঁচু হতে হতে…দেবদারুর সঙ্গে সাইপ্রেসের অনেকটা
মিল, এমনকি সিকামোর বা পপলার, যেমন পাহাড়ের পাশে
উদ্ধত তেজস্বী ঝাউ, ছায়া জয় করে রোদের দিকে যাবেই,
অনবরত মাথা উঁচু করে যাচ্ছে, ভূমি থেকে রসের স্রোত নাচতে
নাচতে উঠে যাচ্ছে ডগা পর্যন্ত, যেন নস্যাৎ করে দিচ্ছে
নিউটনের গণিত, মনে পড়ে আকাশজোড়া রাত্রির বৃক্ষ, ভ্যান
গঘের ছবি দুটি সাইপ্রেস নিউটনের আপেলের পাশে
প্রতিস্পর্ধীর মতন বিস্ময় হয়ে থাকে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *