ধোঁয়া উঠা ভোরে রাজপথে গলিপথে
মুষ্ঠিবদ্ধ হাতের ক্রমপ্রসারিত মিছিলে
জাগে সুরের গর্জন
হেনরীর হাতুড়ির সুর–হো হো হো হো– হেনরীর
হাতুড়ির সুর
সহসা চমক ভাঙ্গে
‘নাম তার ছিলো হেনরী’ শুনে
মহান মে দিবসের জয়ধ্বনি
একি! ভুলে গেছি আমি?
কি করে মনে রাখি বল
যখন আট থেকে বারো বছরের শিশুদের
পথের ধারের গুমটি ঘর গুলোতে দেখি
আমার এঁটো সাফ করে
কাক ডাকা ভোর থেকে
নিঝুম রাত অবধি
দেখি যখন ক্লান্ত শ্রমিক
রোদে পোড়া ঘামে ভেজা চটচটে দেহে
বড় বড় অট্টালিকা আর টাওয়ারের
ভাঁজে ভাঁজে
পেটোয়ার নিশান ওড়ানো আস্তানায়
খিস্তির বাতাসে আকাশটা তাদের
তেলচিটে ধোঁয়াটে ঝাপসা
নিংড়ে নেয় শক্তি
শুষে নেয় মহাজন
হোঁচট খায় দিনরাত
আমার মতো বহুজন
পেয়েছে কী আট ঘন্টা শ্রমের
সঠিক মূল্যায়ন?
শ্রমের মজুরী কী সমান?
মসনদে বসা রাজা আর দরিদ্র শ্রমিকের
দীর্ঘশ্বাস আর কোনমতে বেঁচে থাকা
কবরের দিকে পা ফেলে এক এক করে….
মহান বিপ্লবের শূন্যে মুঠি তোলা লাল রঙ
আজ মিথ্যার প্রতিভাষন
বিপ্লবের সেই বীজমন্ত্র
‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’
অবরুদ্ধ আধুনিক সভ্যতার কারাগারে
ভুলে গেছি অগস্ট স্পীজের
শেষের সেই দিনের কথা
আমি তুমি আমরা সবাই আজ নির্বিকার
আজ মহান মে দিবস
সাধারণ এক ছুটির দিন যেন
হুল্লোড়ে মাতা আর ফাঁকা মাঠে
সভা সমাবেশের আয়োজন
ভোরে উঠে সেই যে বহু দূর দূর থেকে
তোমার আমার সবার বাড়ি
আসে যে মেয়েটি
দেবো কী তাকে ছুটি?
প্রশ্ন শুধুই প্রশ্ন…
দিতে কে পারে আমার সব প্রশ্নের উত্তর?
তুমি বলবে এই নোনা জলের পাঁকে
তুমিও আছো
সত্যিই তো নেই আমার কাছেও
কোন উত্তর
নেই নেই নেই….
অকপট হৃদয় বলে গান্ধারীই বেশ ছিলো
হস্তিনাপুরে অন্ধ রাজার দেশে সবাই ছিলো অন্ধ….