নমামি বিলাতি অগ্নি দেশলাইরূপী,
গেহখানি চাঁচা ছোলা, শিরে বাঁধা টুপি!
যেমন ডেপুটি বাবু একহারা চেহারা,
মাথায় শালের বেড় — রাগে দেহ ভরা।
নমামি গন্ধকবন্ধ মুণ্ডটি গোল লো,
সর্ব্বজাতি প্রিয় দেব গৃহ কর আলো,
শান্ত সভ্য অতি ধীর — চাপে যতক্ষণ,
ধাপে উঠে চটে লাল — গৌরাঙ্গ যেমন!
নমামি সর্ব্বত্রগামী দারু অবতার,
চৌর্য্য বিঘ্ন-বিনাশন কুটুম্ব টীকার!
নিদ্রিতের গুপ্তচর, পাচিকার প্রাণ,
লম্বাদাড়ি কাবুলীর শিরে যার স্থান!
নমামি [ খদ্যোৎশিখা ] নয়নরঞ্জন,
লালেতে নীলের আভা দিব্য দরশন!
পোয়াতির প্রিয়সখা বালকের অরি,
বিরাজ হে কাষ্ঠদেব কত রূপ ধরি!
প্রণমামি [ জ্বালামুখ ] শুভ্র দেশলাই,
সাহেব গোলাম তব কি কব বাদসাই!
সোণা টিন্ রূপা তামা গায়ে বাঁধা ফিতে,
লাটের পকেটে ওঠো লেডীর ঝাঁপিতে!
নমামি সহজদাহ্য বরষাদমন,
আঁচড়ে কিরণ ধর [ সখের জ্বলন! ]
আখা জ্বলে বিনা ফুঁয়ে বিনা চক্ষে জল,
কাঁদিয়া কাটিয়া তোর গুণে মাগীরা পাগল।
নমামি কলির কীর্ত্তি কাষ্ঠের চকমকি,
তোমার চমকে বিশ্বকর্ম্মা গেছে ঠকি!
বিল, খাল, বন, জল, যেখানেই যাই,
শিরে ভাঁটা সাদা শলা দেখি সেই ঠাঁই।
নমামি নমামি দেব [ পাইন নন্দন, ]
তোমার প্রসাদে হয় সাগরে রন্ধন,
সভ্য জগতের তুমি সোহাগের বাতি,
চুরুট ভক্তের মোক্ষ পদার্থ বিলাতি!
নমামি [ ফর্ফর ] শব্দ নাসিকা পীড়ন,
ধনীর নিকটে তুচ্ছ, কাঙালের ধন!
সন্ধ্যার সোণার কাটি, জোছনার ছবি,
ব্রহ্মার পঞ্চম মুখ, [ ব্রাইয়ন্টে রবি! ]
নমামি [ কিরণদণ্ড ] কোপন-স্বভাব,
রাজগৃহ চালাঘরে সমান প্রভাব!
সিন্ধুজলে, পথে, মাঠে, গাড়ি, ঘোড়া, রেলে,
সকলে তোমায় পূজে সূর্য্য শশী ফেলে!
ভিখারী কুটীরে সুখী, ভীরুতে সাহসী,
তব বলে খোঁড়া খাড়া, বুড়ীরা ষোড়শী!
বাঞ্ছাকল্পতরু তুমি সাহস-তারণ,
দীনবন্ধু তবগুণ কে করে কীর্ত্তন॥
প্রণমামি খর্ব্বদেহ অন্ধকারহারি!
নমামি অশেষরূপ অবনি-বিহারি!
নমামি মোমের ডাঁটি “ফস্ফয়ে”তে মলা!
উনবিংশ শতাব্দীর অনলের শলা!
তবগুণে, গুপ্ততাপ, তৃপ্ত জগজন।
প্রণমামি দেশলাই দেবের ইন্ধন!