ভোরের খামে
রবিঠাকু্রের ডাকটিকিট লাগানো
সূর্যের চিঠি এলো
বৈশাখ নাকি রবিঠাকু্রের
পূনর্জন্ম দিয়েছে
ক্ষয়িষ্ণু সভ্যতার কালশিটে আঁধারে
যেখানে পর্দা জুড়ে অন্তহীন নীরবতা
সব এলোমেলো
এই তালি-তাপ্পা দেওয়া পৃথিবীতে
আজ তোমার খুব প্রয়োজন
তোমাকে পেলে
কে চায় ময়ূর সিংহাসন?
বিজ্ঞাপনের সাইনবোর্ডগুলোর
সব মুছে দিয়ে লিখে দাও
তোমার সাধন–সুধামৃত
শাশ্বত মহাজাগতিক বাণী
আধুনিকতার শাপগ্ৰস্ত
অন্ধ হাওয়ায়
চৈতন্যের সম্প্রসারণে
অন্তরাত্মাকে কর নির্মল
কর পরিশুদ্ধ
সীমিত ‘আমি’ কে বিরাট ‘আমি’বেদীমূলে
চিরসমর্পণের দীক্ষা দাও
প্রথম ঊষার রেণুতে জারিত
মহামানবতার কল্যানে
ধ্বনিত হোক তোমার ঋক্ ধ্বনি
বিশ্বব্যাপী বিচ্ছিন্নতা–তমসা
নিরাশার নিকষ কালো মুছে দাও
সেদিনের মতো গর্জে উঠুক
তোমার ‘মৃণাল’
সরব প্রতিবাদ এবং স্পষ্ট ভাষায়
আন্দোলনের পুরোভাগে থেকো তুমি
এ পতাকার ভার তুমিই বহন কোরো
শরৎবাবুকে আবার একটা উপন্যাসে
নারী চরিত্র আঁকতে বলো
যে জয়ী হবে সব সাধারণের হয়ে
যেখানে সমাজ মেয়ে আর মানুষ
আলাদা করে দেখে
সুযোগ পেলে সে ইচ্ছা মাটির উপর
বিশ্বজয়ে সদর্পে পা ফেলে চলে
আবার আঁকো ‘বিদায় অভিশাপে’র
দেবযানীকে নূতন রূপে
হবে না যে অবহেলিতা
প্রণয়নের ভিক্ষার্থী
গাণ্ডীব ধন্যা চিত্রাঙ্গদার
নারী স্বাতন্ত্র্যকে এমনই রেখো
বাংলা মায়ের “আমার সোনার বাংলা”র
শেষটা লিখে যাও তোমার সোনার কলমে
ওপারের সাথে ফেলে আসা
সেতু তুমি– রবীন্দ্রনাথ
তোমার গভীর গোপন যাদুর ছোঁয়ায়
পেয়ে যাই আলোর হদিশ
আমি যখন একা, যখন ভীড়ের মাঝে
তখনও তোমার শব্দ, তোমার সুর।
তুমি বন্ধু, অভিবাবক
কখনো হয়তো বা আমারই কোন সত্ত্বা
লিঙ্গসমতা, মানবাধিকার,
ধর্মীয় সহিষ্ণুতা, রাজনীতির উঠা-নামা
সময়ের ঘেরাটোপ পেরিয়ে
সমসাময়িক হয়ে উঠে তোমাতে
অস্তিত্ব যেমন প্রশ্নহীন,
জীবনেও রবীন্দ্রনাথ
একইরকম অমোঘ–অনিবার্য।