কথাটা অন্যভাবে বলবো বলে এড়িয়ে যেতে চাই যাকে
তাঁর দীর্ঘ ছায়া সর্বাঙ্গে গ্রাস করেছে আমাকে।
দিনরাত তাঁরই ছায়াতে থাকি
তাঁরই বকুল বিছানো পথে হাঁটি।
বেরিয়ে পড়লাম ফাঁক গলে অন্য গলিতে।
হাঁটছি হাঁটছি হাঁটছি
অন্য এক অজানা সেতুতে।
নিচে টলটল করছে জল।
এই কি সাহিত্যের আশ্রয়স্থল?
এক বাগানে ঢুকি কিছুটা হেঁটেই।
পথের ধারে ডান দিকে যে বাগানটা পরে যেতেই।
প্রতিটি ফুলের ওপর রঙিন পাখনা জুড়ে বসে আছে তিতলি।
কি অপূর্ব গান চারদিকে বাজছে মৈথিলী।
“ফুলে ফুলে ঢোলে ঢোলে বহে কিবা মৃদু বায়।”
একছুট্টে পালিয়ে গেলাম,
সামনে দীর্ঘ পথ।
ছুটতে শুরু করলাম।
আকাশকে ডেকে বললাম,
তুমিও কি তার অধীনে?
আকাশ হেসে বললো,
আমার ভিতরেই লুকিয়ে আছে
“আমার মুক্তি আলোয় আলোয়
এই আকাশে আমার মুক্তি।”
মুখ ঘুরিয়ে আবার ছুট।
এক মন্দির পেয়ে সেখানেই ছুটে গেলাম।
দেবতারে ডেকে আঁখির ভাষায় শুধালাম,
এর থেকে মুক্তি কোথায়?
“মুক্তি, ওরে মুক্তি কোথায় পাবি?
মুক্তি কোথায় আছে?
আপনি প্রভু সৃষ্টি বাঁধন
বাঁধা সবার কাছে।”
ছুটে পালালাম,
আবার ছুট।
তখন সুপারি গাছের মাথায় একফালি কুমারোর মতো চাঁদ।
আমি শুধালাম,
তুমিও কি তার অধীনে?
চাঁদ হাসে,
মিষ্টি সুরে গেয়ে বলে,
আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে আছে
দেখতে আমি পাইনি তারে।
আমাকে পাবে তার গানে এধারে ওধারে।
ছুটে চলে গেলাম গভীর অরণ্যে।
গাছে গাছে ফিসফিসানি।
“আমার যে সব দিতে হবে সে তো আমি জানি
আমার যত বিত্ত প্রভু আমার যত বাণী।”
ক্লান্ত দেহে বিষণ্ন চোখে ছুটে পালালাম দেশান্তরে।
রাশিয়া থেকে একে একে জার্মান , বিলেত হয়ে শেষমেষ চিনে।
তার গান বাজছে সবার অন্তরে।
হে অনন্ত ঋষি ,
তোমার ছায়াতে আরও মেখে নিও আমাকে।
এমনি করেই বেঁচে থাকো অনেক অনেক বছর
বাংলা ভাষাকে বাঁচাতে।