সুনির্মল নীলাকাশ কতদিন দেখিনাই বুঝি!
স্বাধীতার জন্য গুনে গেছি কতশত অতন্দ্র প্রহর
শুধু সেই শুভক্ষণ প্রার্থনা করেছে মন
সে প্রতীক্ষার নিরসন হল বুঝি আজ!
স্বাধীনতা, তুমি এলে রাতের আঁধারে, তবুও তো এলে।
তবু আজও অবাক মানি, কেনো এত হানাহানি
কেনো এত রক্তপাত সারা বিশ্বজুড়ে,
কংসের কারাগারে এ কোন প্রভাতে এলে!
দেশ কাল ভেদে দেখি, শাসকই শোষক হয় ক্ষমতাটা পেলে।
আলো বুঝি আলো নয়, অশনি সংকেত,
ধূপছায়া বৃষ্টির দুর্যোগ বুঝি,
ঝড় ঝঞ্ঝা পৃথিবীর করুণ আক্ষেপ!
ভূকম্পন, ধর্ষণ, অগ্নুৎপাত দাবানল নির্নিমেষে দেখি
দেখে যাই মহাবিশ্বে কত কলরব, অস্থির হয়েছে সমাজ,
যদুবংশ ধ্বংস হয়,পড়ে থাকে পৃথিবীর যুদ্ধ বিধ্বস্ত শব।
রাত বারটার পরে শাঁখ বেজেছিল ঘরেঘরে
স্বাধীনতা উদযাপন শুরু হল আজ।
জানিনা এবার থেকে কত স্বাধীনতা পাবে
সেই সব হতভাগ্য বঞ্চিত সমাজ ।
শাসন,শোষণ আর জাতপাতে দীর্ণবিদীর্ণ
যত অভাগার দল, শুধু করে কোলাহল—
নিজেদের অপাংক্তেয় ভাবে সব কাজে
কোনোমতে বেঁচে থাকা অভুক্তের দল।
স্বাধীনতা লুঠ করে লুঠেরার দল।
তুমি রাজা বড়, ওরা শুধু প্রজাদের দল,
ঘৃণা, লাথি অবহেলা এই শুধু ওদের সম্বল!
না পাবে তৃষ্ণার জল, না পাবে স্বাধীন ফল
অচ্ছুৎ অধম হয়ে গরীবের ঘরে জন্মবার ফল,
হাতে হাতে দিয়ে দেবে দালালের দল।
জলখাবে, দেবে ঢেলে কেরোসিন তেল,
ছোঁয়া ছুঁয়ি অপরাধে নয়তো মেরেই ফেলে
বড়ো জাত ভীষণ প্রবল।
অচ্ছুতের ছায়া যেন কিছুতেই পড়ে নাকো
সমাজের মাথাদের গায়।
আগে যাবে বড় জাত স্পর্ধিতের নিয়ে অহংকার,
ছোটজাত সাবধানে পিছে যায় ছায়া যেন না মাড়িয়ে ফেলে
পাপ হবে বলে, বড়ো জাত আগে আগে যায়।
দেবালয়ে ঠাঁই নেই, নেই কোনো পূজা অধিকার,
নিঃস্ব রিক্ত ক্লিন্ন ওই অস্থিচর্মসার
ঘরে বসে হাহুতাশ করে, কপালের দোষ দেয়
নিত্য ভাসে চোখের জলেতে অবিরল।
ওরা শুধু পিছে থাকে শুধু নীচে রেখে দেয় বাবুদের দল।
এই ভবিতব্য নিয়ে সারাটা জীবন গুণে
লাথি খেয়ে মরে যায় ওইসব মানুষের দল!
হে মোর দুর্ভাগা দেশ, এই বুঝি স্বাধীনতা সংগ্রামের ফল!
হায় স্বাধীনতা দেশ ভাগ চাইনিকো কোনো কাল,
চেয়েছি শাসন শোষণ মুক্ত অখণ্ড স্বাধীন ভারত ভূমি,
হে অখণ্ড ভারতমাতা তোমাকেই চেয়েছি কেবল!!