জুতো খুলব কি খুলব না, এই দ্বিধায় গাড়ি থেকে
নেমে পড়লুম জলকাদার রাস্তায়
কৈশোর-ভাঙা বয়েসের কৌতুক ঝিলিক দিচ্ছে চতুর্দিকে
দু’পাশে ধান ক্ষেত, তার বাতাসের হিল্লোল নিয়ে কবিত্ব প্রথাসিদ্ধ
কুঁড়ো জাল নিয়ে যে লোকটি মাছ ধরছে আপনমনে
সে আমার মগ্ন চৈতন্যের কেউ নয়
প্রকৃতি পাঠ থেকে সরে গিয়ে চোখ অনেক ঘষামাজা হয়ে গেছে
কালভার্টের পাশে উবু হয়ে বসে আছে একটা নির্লজ্জ লোক
এ দৃশ্য কি দেখার মতন?
হাতঘড়িতে শহরের পিছুটান, তৃষ্ণায় গলা শুকিয়ে গেলেও
এখানকার এক বিন্দু জল খাওয়া চলবে না
একটু দূরে দুটি তালগাছ নন্দলাল বসুর ছবি, আর
বড় জোর মিনিট পাঁচেকের পথ
আমার সঙ্গীটি বলল, যারা নার্সিংহোমে জন্মায়
তারা কি সেখানে বারবার ফিরে যায়?
এবার বুক ঠেলে হাসি উঠে এল, এর মধ্যে বাস্তবতার
নামগন্ধ নেই
কাদায় যার পা ড়ুবে যাচ্ছে, সে অলীক, সে বেদান্তের ভ্রান্ত দর্শন
একটু আবেগ না দেখালে চলে? মাটি ছুঁয়ে প্রণাম করব নাকি?
এদিক ওদিক তাকিয়ে খুঁজব বাতাবি লেবুর গাছটি?
মাজা-ভাঙা অচেনা বৃদ্ধাটিকে ডেকে উঠব, প্রভা পিসিমা?
এ সব করলেও চলে নকল হাবভাবে, কেননা
আসল মানুষটি নেই এখানে
এখানে থাকলে সে নিজের কাছে কোনোদিনই মানুষ হত না!