চাহিদা পূরণ – পর্ব ৯
সকালে অ্যালার্মের আগেই ঘুম ভেঙে যায় সুমেধার , একটা পাখি যেন একই সুরে ডেকে চলেছে, বিছানায় বসে সুমেধা আনমনে পাখির ডাক শুনতে থাকে, মনে হয় আরেকটি পাখি যেন ডাকছে একইসাথে, আস্তে আস্তে বারান্দায় বেরিয়ে এসে দেখে একটা নীল রঙের পাখি,কি অদ্ভুত হলুদ ঠোঁট,সাথের পাখিটাও একইরকম সবুজ গাছের ছায়ায় ঘাড় ঘুরিয়ে ডেকে চলেছে। মৃদু হেসে সুমেধা বলে জুটি মানিয়েছে বেশ। ঠিক তখনই অ্যালার্মের শব্দ, সুমেধার মনে পড়ে যায় তাড়াতাড়ি অফিসে যেতে হবে, ঘরে এসে অ্যালার্ম বন্ধ করে। মোবাইলে নেট অন করতেই একতোড়া গোলাপের সঙ্গে লাভ শেপ কার্ড লেখা শুভেচ্ছা সুপ্রভাতের ম্যাডাম,আজ সাহস করে তোমায় দুচোখ ভরে দেখার ইচ্ছে, বহু জমানো গল্প করবার ইচ্ছে পূরণ হবে। সুমেধার মাথাটা গরম হয়ে যায়,লেখে সাইকোলজিস্ট দেখাও,আজ অফিসে আমার জরুরি কাজ আছে , অফিসে এসে দেখা করতে চাও যদি তবে কিছু মনে করো না সিকিউরিটি দিয়ে বাইরে করে দিতে বাধ্য হবো, তোমার আমার সব কথা যখন মনে আছে তখন আমার রাগের কথা নিশ্চিত মনে আছে আশা করি। ঠিক তখনই দেবাংশুর ফোন, সুমেধা একটু বিরক্তির সঙ্গে বলে আজ অফিসে মিটিং আছে, তাড়াতাড়ি যেতে হবে,বলো কি বলছো। দেবাংশু: আমার মিষ্টি বউটার মিষ্টি গলা শুনতে ফোন করেছিলাম কিন্তু কেমন যেন নিমপাতা স্বাদ পেলাম। সুমেধা: উফ্, সবসময় তোমার ঠাট্টার অভ্যাস,একা একা কি করে বেড়াচ্ছ কে জানে! দেবাংশু: তোমার ভয়ে কেউ আমার ধারে কাছে ঘেঁষে না,হা হা,শোনো আজ অনলাইনে কিছু ডকুমেন্ট আসবে, মাকে বলে রেখো। সুমেধা: ওকে বলে ফোনটা কেটে দেয়। নিজের মনে বলে আছে ভালো হুকুম করতে। স্নান সেরে জোজোকে স্কুলের জন্য রেডি করে, একইসঙ্গে নিজে রেডি হয়ে নেয়। শাশুড়ি মাকে বলে মা আমার আজ মিটিং আছে জোজোকে বাসে তুলে বেরিয়ে যাবো,ক্যান্টিনে খেয়ে নেবো, তোমার ছেলের একটা পারশেল আসবে নিয়ে রেখো। শাশুড়ি মা একটু দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন তোমরা কি সুন্দর অনলাইনে সংসার পেতেছ, ছেলে বাইরে তুমি অফিসে, মোবাইলে সব কথা হয়ে যায়!আমি শুধু ফাঁকা ফ্ল্যাটে বসে আছি, সুমেধা: তোমার নাতি তো দুপুরে ফিরে আসবে, কি করবো বলো চাকরিটাতো রাখতে হবে। শাশুড়ি মা বলেন অনেক হয়েছে মা, তোমার দেরি হয়ে যাবে, এসো দাদাভাইকে নিয়ে। সুমেধার জোজোকে নিয়ে বেরিয়ে আসে।