চাহিদা পূরণ – পর্ব ২৮
বসের কেবিন থেকে ফাইল নিয়ে বেরিয়ে এসে নিজের কাজ মেটাতে থাকে, সুমেধা। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে দুটো বেজে গেছে, তাড়াতাড়ি টিফিন খেয়ে নেয়। আধঘন্টা পর বস এসে দাঁড়ান,যে কাজগুলো দিয়েছিলাম কমপ্লিটতো? সুমেধা:হ্যাঁ , স্যার । বস: মিনিট দশেক পর বেরিয়ে পড়বো তবে,রেডি থাকবেন। অফিসের থেকে মিনিট পনেরো পর দুজনে কম্পানি ভিসিট করতে বেরিয়ে পড়ে। গাড়িতে বসে কিছু ইম্পর্টেন্ট পয়েন্ট আলোচনা করেন বস,গাড়ি যথারীতি জ্যামে পড়ে,বস হঠাৎ বলে ওঠেন জানেন কলেজের সময় বাসে জ্যামে পড়লে হাঁটতে হাঁটতে কলেজ পৌঁছে যেতাম, কখনো কখনো বাসের টিকিট না কাটা হলে, পয়সা বাঁচিয়ে রাখাও হতো,ক্লাসে সময়ে পৌঁছে যেতাম। জানেন অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করেছি, স্কলারশিপ নিয়ে higher education সম্পূর্ণ করেছি। তবু তখন অনেক বেশি সুখ ছিল, এখন অনেক বিলাস, বৈভব,সাচ্ছন্দ্যে বাস করছি, তবু বহুতল বাড়িতে মানুষগুলো বড়ো একা… পরিবারের নিজেদের মধ্যে দূরত্ব যেন কিসের অশান্তি মনে হয় মাঝে মাঝে। সুমেধা: আপনার মতো অনেকেরই একই মতামত স্যার, তবে আপনি কি চাইবেন আপনার সন্তান আপনার মতো কষ্ট করুক? পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে এগিয়ে চলতেই হয়।বস: তবু স্মৃতি বিজড়িত আবেগি হয়ে উঠি আমরা প্রত্যেকেই, অল্প হেসে কিন্তু এখন টাইমে পৌঁছে যাওয়া জরুরি, নতুবা আরো দেরি হয়ে যাবে।(গাড়ি আবার চলতে শুরু করে) ড্রাইভারকে বলেন একটু জোরে চালাও ভাই, সুমেধার দিকে তাকিয়ে বলেন আজ মিসেস ডাক্তারের কাছে গেছে আমি নিয়ে আসবো। সুমেধা: চিন্তা করবেন না স্যার , মনে হয় ঠিক সময়ে পৌঁছে যাবো। এইতো গাড়ি এগোচ্ছে। সুমেধা ছেলের টুকিটাকি গল্প করতে শুরু করে, মিনিট দশেক পর গাড়িটা একটা মোড়ে ঘোরার সময় হঠাৎ ব্রেক কষে, সামনে একজন বয়স্ক ভদ্রলোক রাস্তা পেরোচ্ছিল, গাড়িটা জোরে ঝাঁকুনি দেওয়ায় বসের চশমা খুলে পড়ে যায়, মাথায় একটু চোট হয়, সুমেধা হাত সিটে চেপে ধরায় হাত ঘষড়ে যায়।বস চেঁচিয়ে বলেন দেখে চালান, মরতে মরতে বেঁচেছি। চশমাটা তুলে সুমেধার দিকে তাকিয়ে বলেন হাতে খুব জোর চোট লাগলো?জল দেবেন? সুমেধার হাতের ভেতর যেন যন্ত্রণা অনুভব করে কিন্তু মুখে বলে না স্যার ঠিক আছি। ব্যাগে একটা ভলিনি ছিল হাতড়ে বার করে আস্তে আস্তে লাগায়,বস বলেন আমায় একটু দেবেন, সুমেধা বলে নিশ্চয়ই, এই নিন। কম্পানিতে পৌঁছে মিটিং জয়েন করতে পারে ঠিক সময়েই, কিন্তু একটু দেরি হয়ে যাওয়ায়,বস বলেন আপনাকে এগিয়ে দিচ্ছি চলুন, সুমেধা: আপনিতো ডাক্তারের চেম্বারে যাবেন, আমি ওলা বুক করে নিচ্ছি, অসুবিধা নেই।