এ দেশ আমার গর্ব,
এ মাটি আমার কাছে সোনা |
এখানে মুক্তির লক্ষ্যে হয় মুকলিত
আমার সহস্র সাধ, সহস্র বাসনা |
এখানে আমার পাশে
হিমাচল,
কন্যাকুমারিকা |
অলঙ্ঘ্য প্রাচীর ঐক্য
প্রতিক্ষা পরিখা |
দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশ,
রক্তচক্ষু রাজার শাসন—
শকুনি বিশ্বস্ত বন্ধু,
মুঠোয় শিথিল সিংহাসন ;
সর্বাঙ্গে চিহ্নিত মৃত্যু
শবের গলিত গন্ধ ছোটে |
প্রজাপুঞ্জ ওঠে ;
আগুন লেগেছে ঘরে,
খরসূর্য মাথার উপরে |
ভাণ্ডারে উধাও খাদ্য,
শূন্য পেটে চাষবাস চুপ
কারখানায় পড়েছে কুলুপ |
দোকানে দ্বারস্থ অক্ষৌহিণী
পিছনে করুণমূর্তি পথের কাহিনী
গহন আরণ্য আরাকান ;
স্খলিত পায়ের ছন্দে
স্পন্দিত শ্মশান |
সর্বশান্ত চোখে পড়ে
বার বার হাতের শৃঙ্খল—
পলাতক প্রাণের সম্বল |
বিড়ম্বিত জীবনে আবার
কুরুক্ষেত্র করাঘাত করে
পালাবার নেই কোনো গোপন দুয়ার |
সম্মুখে প্রতীক্ষমাণ সবুজ প্রন্তরে
শায়িত বল্লম ;
পায়ে পায়ে রুদ্ধগতি বিদ্যুৎ কদম,
ঘুম ভাঙে সম্মিলিত মুঠি ;
অগ্নিবর্ণ চোখের ভ্রুকুটি
মুহূর্তে হারায় দম্ভ,
দর্প তার হয় কুটি কুটি |
গঙ্গার জোয়ারে এসে লাগে
ভল্ গার তীরের স্পর্শ
চোখে নব সূর্যোদয় জাগে
মুক্তি আজ বীরবাহু
শৃঙ্খল মেনেছে পরাভব ;
দিগন্তে দিগন্তে দেখি
বিস্ফোরিত আসন্ন বিপ্লব !
এখানে বিচিত্র স্রোত
মুক্তির একাগ্র লক্ষ্যে আসে ;
আজকের তুরঙ্গ ইতিহাসে
দেশপ্রেম বল্গা ধরে |
পদক্ষেপ কেবলি চঞ্চল |
গ্রামে গঞ্জে শহরে বাজারে
দুর্জয় সংকল্প নেয় হাজারে হাজারে |
মৃত্যুকীর্ণ পথে হই জড়ো ;
নতুন জন্মের ডঙ্কা বাজে,
বেদনায় পৃথ্বী থরো থরো |
এ দেশ আমার গর্ব
এ মাটি আমার চোখে সোনা |
আমি করি তারি জন্মবৃত্তান্ত ঘোষণা ||