Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » গোপালের মা || Prabir Kumar Chowdhury

গোপালের মা || Prabir Kumar Chowdhury

জীবনের ছেঁড়া পাতা উল্টিয়ে দেখো-
আবর্জনার স্তুপে পরে আছে কত ত্যাগ ,কত আত্মবলিদান ।
যার রক্তাক্ত ফসল আজ –
আমরা আমোদে প্রমোদে করি আত্মসাৎ ।কেউ কথা রাখে নি –
কেউ ফেলেনি চোখের জল ,
দেউলিয়া মানবিকতার বৃথা শ্রম, বৃথা কর্মফল।

জীবনের সব কিছু হারিয়ে,দুই হাত বাড়িয়ে-
যে কজন সর্বস্বান্ত ,অস্তিত্বহীন, অসহায় –
যারা অবহেলিত হতে হতে আজ মৃত্যুর দিন গোনে,কে রাখে খবর তার ,?
অবজ্ঞার আড়ালে- শেষেরদিনের অপেক্ষায় ,শূন্য থালা হাতে –
বেদনার রাজপথে হেঁটে যায় ক্লান্ত পায় ।

গোপালের মা চোখে দেখে না –
আলোহীন চোখ ,রক্তাক্ত হৃদয় আকুল আর্তনাদে-
অন্ধকারে একাকী যার সুখ দুঃখ একাকার।
সবাইকে ভাবে তার প্রসব যন্ত্রণার ফসল কোলের গোপাল।
অন্ধকার জগতে , স্থবিরতার মাঝে –
যেন কার পদধবনিকে জাপটে ধরে কেটে যায় মৌনতার প্রহর ,
অপেক্ষায় অধীর-
শূন্যে দুইহাত মেলে আনন্দ বিহবল,বলে-
” ও মোর গুপাল , ঘরকে এলি …”?
খান খান হয় রাত্রি , গুমরে ওঠে বাতাস।
জীবহাটের বন্ধ দরজায় আছড়ে পড়ে দীর্ঘশ্বাস ।

অবাক পৃথিবীর দুঃসহ যন্ত্রনায় –
চোখের নোনা জলে স্নান করে বুড়ো বাপটা ,
এখন বয়স যার নব্বই ,
চোখের তারায় ছানির আচ্ছাদন,
খিদেয় খেয়েছে শরীর , বুক এখন যক্ষ্মার দখলে ।
সেই কেবল জানে গোপাল ফিরবে না আর কোনদিনও ,কোনখানে,
যাকে অভিশপ্ত তরঙ্গে দিয়েছে বিসর্জন ।

অবুঝ মাতৃত্ব ,দিনরাত যার অপেক্ষায় একাকার –
অন্ধ বিশ্বাস অবলম্বনে ।
বুকচাপা স্বপনরা এসে চুপি চুপি বলে –
গোপাল গেছে শহরে ,
বড় চাকুরি করে বড়লোক হয়ে –
সুখের বোঝা বয়ে এনে তুলে দেবে তোমাদের দুঃখের ঝাঁপিতে ।
জমি-বাড়ী বেচার টাকায়,অনেক সুখ-দুঃখ, চোখের জলের বিনিময়ে –
গোপাল অনেকগুলো পাশ দিয়েছে ……।
স্বপ্নের চাদরে মুরী দিয়ে –
আজও মৃত্যুকে কাছে ঘেষতে দেয়নি গোপালের মা ।
বারো বছর ধরে দুঃখের পৃথিবীটা যেন এক আনন্দ আশ্রম ।
অপেক্ষা এখনো কথা বলে অশক্ত বুকে,
ভগ্ন ঘরের জীর্ণ দেওয়াল ধরে হেঁটে যায় গোপন আশারা।

আর গোপালের অনাহার ক্লিষ্ট বাপটা-
জীবনের চোরাস্রোতে হাবুডুবু খেতে খেতে-
কখনও ডুবতে ডুবতে,
অভুক্ত দোমড়ান শরীরে যে নিজেকেই দুইবেলা অভিশাপ দেয় ,পাষানে মাথা কোটে ,
সেই একমাত্র জানে –
গোপাল ভুখা মানুষের স্বপ্ন আর অধিকার আনতে –
শহরে গিয়ে চক্রব্রুহে শহীদ হয়েছে।
শহরের রাজপথের শহীদ বেদিতে আজও ফুল পড়ে,
শতকন্ঠে স্লোগান ওঠে –
জীবনে মরনে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *