গান আমার জীবন
রনিতা ছেলেবেলা থেকে পড়াশোনায় খুব ভালো। খুব ভালো রেজাল্ট করে। তবে খুব শান্ত, সকাল থেকে হারমোনিয়ামটা বাজিয়ে চলে। গানের ম্যাডাম রয়েছেন, ও গিয়ে শিখে আসে। ক্রমে উঁচু ক্লাসে উঠে গেছে রনিতা। আগামী বছর২০১৭ মাধ্যমিক দেবে, তাই পড়াশোনাটা বেশি করে করছিল। গানের দিকটা অনেকটাই গাফিলতি হয়েছিল। গান ভালবাসে বলে ওর বাবা-মা বারবার ওকে গান প্র্যাকটিস করার কথা বলতো। ওর ভালো লাগে না এখন। সাবজেক্ট টিচার দের বাড়ি যেতে যেতে সময় পায়না। মাধ্যমিক ভালো করে দিতে হবে। লেটার মার্কস চাই। এসব দেখে ওর বাবা রেগে গিয়ে ওর হারমোনিয়ামটা বিক্রি করে দেয়। তখন ওর যন্ত্রণাটা বাবাকে বলতে থাকে। তুমি হারমোনিয়াম টা কি করে বিক্রি করলে বাবা। তোমার এতোটুকু কষ্ট হলো না? আমি তো এত বছর প্র্যাকটিস করেছি। মাধ্যমিকের জন্য কদিন বন্ধ।
-মাধ্যমিক দিয়ে দে, তারপর আবার কিনে দেবো বাবা আশ্বস্ত করলেন। রনিতা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল। মার কাছে অভিযোগ জানাল। বাবার কথা গুলোই মা চিৎকার করে বলতে লাগল। রনিতা মাথা নিচু করে পড়ার ঘরে চলে গেল। ভাবতে পারছে না ওর শখের হারমোনিয়ামটা আর নেই। কেনো বাবা এমন করল তার প্রশ্নের উত্তর পেল না। এরপর উচ্চমাধ্যমিক হয়ে গেলেও আর হারমোনিয়াম আসেনি। প্রতিনিয়ত মায়ের সঙ্গে যুদ্ধ। গান ও শিখবেই। বড় গুরুজীর কাছে তালিম নেবে। দুচোখ ভরা স্বপ্ন। এক বছর নানাভাবে চেষ্টা করে এক স্যারের খোঁজ পাওয়া গেল। তিনি বিখ্যাত সুরকার। তার কাছে শুরু করলো আবার গান। এইভাবে একদিকে পড়াশোনা অন্যদিকে তালিম। একটা হারমোনিয়াম তো দরকার। আন্টি পুরনো একটা হারমোনিয়াম এর ব্যবস্থা করে দিল। মনের আনন্দে চলছে ওর গান। মাঝে ওর গানের রেকর্ডিং হল। গানের গুরুজি শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি, ওকে যত্ন করে গানের সবকিছু সহযোগিতায় তিনি করছেন। ধীরে ধীরে ওর বাবা-মা হয়তো ওর গান করাটাকে সাপোর্ট করবেন। এখন রানিতা এগিয়ে চলেছে। গানই ওর ধ্যান জ্ঞান।