Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 5

রামায়ণ : কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

শ্রীরাম বলেন, মিত্র বিনা প্রয়োজন।
কোনকালে হেন কথা কহে কোন্ জন।।
আপনি দেখিলে মিত্র আমার যে ক্লেশ।
অবশ্য করিবে তুমি সীতার উদ্দেশ।।
আমাতে তোমার যে হইবে প্রয়োজন।
অকপটে সেই কর্ম্ম করিব সাধন।।
সুগ্রীব বলেন, স্থির কর তুমি মন।
সম্প্রতি কহিব কিছু আত্ম-নিবেদন।।
বসিতে আসন রাজা দেখে চারিভিতে।
আনিলেক শালবৃক্ষ ফলের সহিতে।।
তদুপরি আনন্দে বসেন দুই জন।
চন্দনের ডাল ভাঙ্গি বসেন লক্ষ্মণ।।
সুগ্রীব বলেন, বালি বিক্রমে প্রধান।
রাজ্য জায়া হরিয়া করিল অপমান।।
এ পর্ব্বতে থাকি রাম না দেখি উপায়।
অনুকূল হয়ে বিধি তোমারে মিলায়।।
আশ্বাস করেন সুগ্রীবের রঘুবর।
বালিকে মারিয়া তব ঘুচাইব ডর।।
মম ভার্য্যা, তব রাজ্য, যেন জন হরে।
অবিলম্বে তাহারে পাঠাব যমঘরে।।
উভয় ভ্রাতার কেন হইল বিবাদ।
বিশেষ শুনিতে চাহি, কার অপরাধ।।
সুগ্রীব বলেন আমি বিবাদ না জানি।
অশেষ করিয়া কহি শুন রঘুমণি।।
ছিলেন অক্ষয় নামে রাজা মহামতি।
আমরা উভয় ভ্রাতা তাহার সন্ততি।।
কিছুকাল পরে পিতা পাইলেন স্বর্গ।
রাজ্য দিতে উভয়ে আইল পাত্রবর্গ।।
জ্যেষ্ঠ ভাই বালিরাজা বিক্রম-সাগর।
ধর্ম্মে কর্ম্মে সদা রত, সমরে তৎপর।।
মন্ত্রিগণ তাঁহারে দিলেন রাজ্যভার।
পরে বালি দিল মোরে রাজ্য-অধিকার।।
পরস্পর পরম সৌহৃদ্যে করি বাস।
না জানি বিরোধ, সদা হাস্য হরিহাস।।
বিধির নির্ব্বন্ধ কভু না হয় খণ্ডন।
বিবাদের কথা শুন কমললোচন।।
প্রীতিরূপে দোঁহে করিলাম রাজ্যভোগ।
হেনকালে করিলেন বিধাতা দুর্য্যোগ।।
মায়াবী দুন্দুভি নামে দুই সহোদর।
পাইয়া ব্রহ্মার বর দানব দুর্দ্ধর।।
দুই ভাই মায়ার মহিষরূপ ধরে।
মায়াবী নিশিথে আসে জিনিতে তাহারে।।
যুঝিবারে যায় বালি সবার নিষেধে।
পশ্চাতে গেলাম আমি ভাই-অনুরোধে।।
পলাইল দানব দেখিয়া দুই জনে।
আমরা ভ্রমণ করি তার অন্বেষণে।।
চন্দ্র আলো করিয়াছে যাই দেখাদেখি।
সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে দানব পাতকী।।
বালি বলে, থাক ভাই সুড়ঙ্গের দ্বারে।
যাবৎ দানব মারি নাহি আসি ফিরে।।
আমি কহিলাম, দৈত্য হৈল নিরুদ্দেশ।
সংশয় স্থানেতে তুমি না কর প্রবেশ।।
পায়ে পড়ি বলিলাম, তবু নাহি মানে।
সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে দানব যেখানে।।
বারে বারে নিষেধিলাম না শুনে বচন।
প্রবেশ করিল গিয়া পাতাল ভুবন।।
দৈত্য-অন্বেষণে ভ্রমে সে এক বৎসর।
সাক্ষাৎ হইলে পরে বাধিল সমর।।
মহাবীর দানব সে করিল আঘাত।
আমি ভাবি বালিরাজা হইল নিপাত।।
বালিকে মারিয়া দৈত্য পাছে মোরে মারে।
দিলাম পাথর এক সুড়ঙ্গের দ্বারে।।
সম্বৎসর না দেখিয়া হইল সংশয়।
সবে বলে, বালির যে মরণ নিশ্চয়।।
কান্দিলাম ভ্রাতৃশোকে আপনি বিস্তর।
কোথা গেল বালিরাজা জ্যেষ্ঠ গুণধর।।
অন্তঃক্রিয়া করিলাম তাহার বিধানে।
আমারে করিল রাজা সব পাত্রগণে।।
তারপর দৈত্য মারি ঘরে আইল বালি।
মোরে রাজা দেখিয়া করিল গালাগালি।।
পাত্র মিত্র বন্ধুগণে ডাকে সবাকারে।
সবার সম্মুখে গালি দিলেন আমারে।।
দানব মারিতে আমি গেলাম পাতালে।
রাখিয়া সুড়ঙ্গদ্বারে সুগ্রীব চণ্ডালে।।
সুগ্রীব পাথর দিয়া তার দ্বার রোধে।
রাজ্য মহাদেবী হরে শৃঙ্গারের সাধে।।
ছত্রদণ্ড নিল মোর, নিল মহাদেবী।
হেন পাতকীর ভার ধরিল পৃথিবী।।
বৎসরেক দৈত্য মারি দেশে আসিবারে।
সুগ্রীব বলিয়া ডাকি সুড়ঙ্গের-পাথর।।
সহোদর ভাই হয়ে করিল অন্যায়।
মাথা কাটি ইহার তবে ত দুঃখ যায়।।
দূর হ রে অধর্ম্মিষ্ঠ দুষ্ট দুরাচার।
এ জীবনে তোর মুখ না দেখিব আর।।
পায়ে পড়ি করিলাম বহু স্তুতিবাদ।
সেবক হইয়া থাকি, ক্ষম অপরাধ।।
আমার না ছিল ইচ্ছা হই আমি রাজা।
মন্ত্রিগণ করিলেক পালিবারে প্রজা।।
বহু স্তব করিলাম না শুনে বচন।
বলিল আমার লাগি বহু পাত্রগণ।।
পায়ে পড়ি যত বলি, বালি নাহি শুনে।
ক্রোধে বলে যা রে দুষ্ট যেখানে সেখানে।।
বারে বারে বলি, তবু না শুনিস্ কথা।
একটা চাপডে ভাঙ্গি আয় তোর মাথা।।
দেখিয়া বালির কোপ ভীত হয়ে মনে।
পলাইয়া আইলাম এই অপমানে।।
এই অপরাধে রাম আমি অপরাধী।
বনে বনে ফিরি দুঃখে আমি তদবধি।।
বলিল সুগ্রীব পূর্ব্ব বিবাদ কথন।
একচিত্তে শুনিলেন শ্রীরাম লক্ষ্মণ।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress