কিছু ঝরে পড়া শুকনো পাতা জমিয়েছি
বুকের ভেতরে ।
গাল বেয়ে বয়ে শুকিয়ে যাওয়া চোখের জল তুলে
রেখেছি আলতো করে, তুলোতে মুড়ে ।
রেখেছি প্রথম একসঙ্গে পাশাপাশি বসে ঘুরতে যাওয়া বাসের টিকিট, বা,
প্রথম যখন চা খেয়েছিলাম, সেই ভাঁড়, সযতনে।
কয়েক মাস পরে বাবার পকেট থেকে টাকা চুরি করে দেখা সিনেমার টিকিটের ছোট্ট টুকরোটাও রাখা আছে ।
ইচ্ছে করে ফুচকায় বেশি ঝাল খেয়ে যে ভঙ্গি দেখেছিলাম, তা অবশ্য রাখতে পারিনি,
ছবি তুলতে পারিনি, মোবাইল কেনার ক্ষমতা ছিল না যে ! তবুও মনে আছে ।
প্রথমে রাগারাগি, পরে মেনেছিলে আমার বিড়ি খাওয়ার বাধ্যবাধকতা।
রোজ ঘুরে আসার পর খুচরো গুনতাম এক প্যাকেট বিড়ির চাহিদায়, দোকানদার যে ধার দেবে না , টাকা শোধ দেবার ক্ষমতা চাই তো !
সে আমার ছিল না , তাই মাঝেমধ্যেই আধপোড়া বিড়ি তুলে নিতাম এসট্টে থেকে ।
স্কুলের শিক্ষক নই, দিনদিন কমতে থাকা টিউশন বুকের ভেতরে কাঁপন ধরাত,
তবুও বুক বেঁধেছিলাম প্রতিশ্রুতির বন্যাতে স্নান করে ।
কায়িক পরিশ্রমে দক্ষ ছিলাম না, তাই মুটে হবার ইচ্ছেটা বুকেই থেকে গেল ,
নুন আনতে পান্তা ফুরোয় ।
পৈতৃক বাড়ি, এক টুকরো অংশ পেয়েছিলাম তাই রক্ষে, না হলে ?
যদিও বিদ্যুতের সংযোগ বহু আগেই বিদায় নিয়েছিল।
হঠাৎই দেখি , প্রতিশ্রুতির নদীতে কেউ বাঁধ দিয়েছে, নদীটা বড্ড অবুঝ ছিল বলে ।
স্রোত বন্ধ, উচ্ছলতার অপমৃত্যু,
এক লহমায় উচ্ছ্বাসে ফেটে যাওয়া নদীটার বয়স বেড়ে গেল ।
আর আমার চোখের নদীর জলে হল আমার চিতা সাজানো।