Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » কালো ছায়ার অভিশাপ || Pallav Sanyal

কালো ছায়ার অভিশাপ || Pallav Sanyal

সন্ধ্যা নেমে আসতেই বিজনপুরের অরণ্য যেন আরও রহস্যময় হয়ে ওঠে। চারদিকে কেবল ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক, আর গাছের পাতার ফিসফিস শব্দ। এই গভীর অরণ্যের মাঝে শতাব্দীপ্রাচীন এক পরিত্যক্ত মন্দির ছিল, যেখানে বহু বছর আগে এক মহাযজ্ঞে তিনজন তান্ত্রিক অভিশপ্ত হয়েছিল। কাহিনি বলে, তারা তন্ত্রসাধনার সময় এক ভয়ঙ্কর ভুল করেছিল, যার ফলে তারা কালো ছায়ার প্রাণী হয়ে চিরকাল এই অরণ্যের অভিশপ্ত আত্মা হয়ে রয়ে গেছে।

রাত দশটার দিকে, রাহুল, অভীক, ও সুমিত সাহসের পরীক্ষা নিতে মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের কাছে এল। তিনজনই ছিল শহুরে যুবক, ভূত-প্রেত বিশ্বাস করত না। কিন্তু বিজনপুরের মানুষদের সতর্কবার্তাকে অবজ্ঞা করেই তারা প্রবেশ করল গভীরে।

মন্দিরের কাছাকাছি পৌঁছাতেই চারপাশের বাতাস ভারী হয়ে উঠল। হঠাৎ করেই রাত আরও গাঢ় হয়ে গেল, যেন আকাশের সমস্ত তারা মুছে গেছে। তিন বন্ধু একসাথে টর্চ জ্বালিয়েও সামনের পথ দেখতে পাচ্ছিল না। ঠিক তখনই গাছের আড়াল থেকে তিনজোড়া জ্বলজ্বলে চোখ দেখা গেল—সেই কালো ছায়ার প্রাণীগুলো!

তিনটি কালো প্যান্থারের মতো অবয়ব, কিন্তু চোখের দৃষ্টি ছিল অলৌকিক, যেন তারা তাদের আত্মা শুষে নিতে পারে। মুহূর্তের মধ্যে চারপাশের গাছপালা দুলে উঠল, হাড় কাঁপানো গর্জন শোনা গেল।

অভীক চিৎকার করে ছুটতে শুরু করল, কিন্তু হঠাৎ করেই যেন তার পা শক্ত মাটির গভীরে ডুবে গেল। সে মরিয়া হয়ে সাহায্যের জন্য চেঁচাল, কিন্তু রাহুল ও সুমিত দেখল, কালো ছায়ার একটি প্রাণী অভীকের দিকে এগিয়ে এসে ধীরে ধীরে তার শরীরে মিশে যাচ্ছে! চোখের সামনে অভীককে গিলে ফেলল অন্ধকার!

রাহুল আর সুমিত তখনও জমে আছে ভয়ে। পায়ের নিচে মাটিও যেন কাঁপছে। কালো ছায়াগুলো তাদের চারপাশে ঘুরে আস্তে আস্তে এগিয়ে আসছে। রাহুলের মনে হল, তার শরীর ভারী হয়ে যাচ্ছে, যেন কেউ তার বুক চেপে ধরে রেখেছে।

বাঁচার আর কোনো উপায় না দেখে সুমিত দৌড়ে মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করল। সেখানে শিলালিপিতে লেখা ছিল—”যে কালো ছায়াকে দেখবে, সে আর মানুষ থাকবে না।”

এদিকে রাহুলের দেহ ধীরে ধীরে কালো হয়ে যাচ্ছিল। তার গলা দিয়ে অশরীরী গর্জন বের হচ্ছিল। সুমিত আতঙ্কিত হয়ে মন্দির থেকে পালানোর চেষ্টা করল, কিন্তু দরজা বন্ধ হয়ে গেল নিজে থেকেই!

ভোরের আলো ফুটতেই বিজনপুরের লোকেরা দেখল, পরিত্যক্ত মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে আছে তিনটি কালো প্যান্থার, চোখে জ্বলজ্বলে আলো—যেন নতুন শিকারের অপেক্ষায়…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *