Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » এলোমেলো হারানো স্বপ্নগুলো || Nitish Burman

এলোমেলো হারানো স্বপ্নগুলো || Nitish Burman

পৃথিবী জুড়ে সব মানুষ কী কাঁদছে?
পৃথিবী জুড়ে সব মানুষ কী জেগে আছে?
সূর্য ডোবার আগে ছেলের ঘরে ফেরার
খবর পৌঁছে দিতে কে আছ দাঁড়িয়ে?
কে আছ জেগে?
ঠাকুরের সামনে নৈবেদ্য সাজিয়ে মা সারারাত জেগে জেগে
ভোরের আবেশে স্বপ্ন দেখে
কোল আলো করে শুয়ে আছে দেবশিশু
মা ফের ভাত রাঁধবে উনুন জ্বালিয়ে
গরম ভাতের ধোঁয়ায় ভরে উঠবে বুক
শান্তিতে শুয়ে থাকা বরফের বিছানা থেকে কে
জাগাবে ওকে,কে আছ দাঁড়িয়ে ?
শরতের মুগ্ধ আকাশ হঠাৎ এক পশলা বৃষ্টি
ধারায় ধুইয়ে দেয় পথ
একা ছেলে কাদা মেখে নিথর নীরব
ওকে জাগিও না, ওকে ঘুমতে দাও
সহস্র রাত ওকে শান্তিতে ঘুমতে দাও
সহস্র রাত ওকে নীরবে ঘুমতে দাও
আমি একা পাহারায় জেগে র’ব,
আমার দৃষ্টি স্থির, কান্না থেমে গেছে
আমি দেখতে পাই আকাশের মাঝে
হাজার নক্ষত্রমালা সহস্র যোজন দূরে
দূর থেকে দূরে যেতে যেতে ওরা আজ মিলিয়ে যায়,
তোমারও কী যাবার কথা ছিল
সেই পথ, সেই অদৃষ্ট নীড়ের ঠিকানায় ?
এই ত সেদিন বললে পুজোয় দেখা হবে
একরাশ হাসি দূর আকাশের গায়
এখনো হয়ত খুঁজলে স্মৃতি মাখা
পান্ডুলিপির কাঁচা কালির দাগ হাতে লেগে ওঠে
এই ত সেদিন অশীতিপর মার কপালে
হাত রেখে বলেছিলে ভাল আছি
সমস্ত মায়া জাল চূর্ণ করে শেষ কথা না বলে
ক্লান্তিময় পৃথিবীর বুক থেকে
এভাবে নীরবে চলে যাওয়া,
অথচ তোমার কন্ঠস্বর শোনার জন্য
আমি কীরকম তৃষ্ণার্ত,
তোমাকে দেখার জন্য আমার চোখ
আকাশ, নক্ষত্র সব পেরিয়ে পৌঁছে
যেতে চায় আলোক বর্ষ দূরে
তোমাকে জড়িয়ে আছে আদিগন্ত নক্ষত্র মালা
তুমি ঝর্ণাস্নাত ঘাস ফুলের গন্ধ নাও
এ নিশীথে কী সব পাখি ওড়ে?
নিশাচর পাখিরা কী তোমায় দেখতে পায়?
আমি বাইরে দাঁড়িয়ে একাকী
আমার দুচোখে জল
বৃষ্টিতে ধুয়ে যায় পিচ রাস্তা..
আকাশে আবার চাঁদ ওঠে
দূরে কাশবন জ্যোৎস্না গায়ে মাখে
তোমাকে খুব কাছে মনে হয়
দু’হাতে রাত্রি ঠেলে তোমাকে ধরার চেষ্টা করি
তোমাকে ছোঁয়ার আগেই পিচ রাস্তা
গ’লে গ’লে পড়ে
আমার সমস্ত শরীর মিশে যায় হাওয়ায়,
এক শ্বেত পদ্ম হাতে নক্ষত্র স্নানের জল নিয়ে নিয়ে তুমি
ফিরে যাও
আমার বুকের পাথর সরাতে পারি না।
এক দীর্ঘ পথ চলে আমি ক্লান্ত
আমি ঘুমিয়ে পড়ি
আমি আধো ঘুমের মধ্যে জেগে উঠি
হামাগুড়ি দিয়ে চলতে চলতে উদ্দেশ্য বিহীন ভাবে
পৌঁছে যাই মৃত্যুর কাছাকাছি
শ্মশাণের কাঠ কয়লার ঘ্রাণ, চন্দন কাঠের ঘ্রাণ
আজ বুকের মধ্যে অজস্র জোনাকির কান্না
আমি তোমার কাছেই জোনাকি চিনেছিলাম,
চাঁদ ডুবে গেলে জোনাকির আলোয়
তোমায় খুঁজি,
তোমার হাতের স্পর্শ, ফাল্গুনী হাওয়ায়, মাধবীলতার
স্বপ্নকূলে হারিয়ে যায়,হারিয়ে যায় সব
প্রতিশ্রুতি, খোলা বারান্দায় দাঁড়িয়ে অশীতিপর বৃদ্ধা মা দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়ে,
আমি দেখতে পাই তোমার স্নেহ
প্রতিটি ঘাসের বুকে শিশিরের শীত সরলতা
আমার সমস্ত শরীর মন
সমস্ত অণু পরমাণু আজ ছুটে যাচ্ছে তোমার দিকে
আমার আকাশে আজ বাঁকা চাঁদ
বৃষ্টি নেই ঝলমল করছে সব
আজ এই রাতে আমার
সযত্নে পুষে রাখা সমস্ত ভালবাসা,সুখ – দুঃখ
ওড়াব আকাশে।
আমি বেশ বুঝতে পারছি ভীষণ ভাবে তুমি একা
নক্ষত্রের ধুলো ছড়ানো তোমার গায়ে
ধুলোর আস্তরণে ঢাকা সব পথ
তবু এলোমেলো হারানো স্বপ্নগুলো পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা
তোমার কাছে
শুধু তোমার কাছেই ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *