এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি
ডঃ স্বপন সরকার ও তাঁর স্ত্রী প্রণতি সরকারের দুই মেয়ে । বড় মেয়ে সুমি যখন নবম শ্রেণিতে পড়ে তখন ছোট বোন শর্মি জন্মায়। বড় মেয়ে বাবার নয়নমনি আর ছোট মেয়ে মায়ের নয়নমনি।
বড় মেয়ে সুমি ব্রাহ্ম গার্লসের পড়াশুনায় ভাল মেয়েই ছিল। বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজ থেকে বি.এস,সি পড়ার পর ডি এন দে কলেজে হোমিওপ্যাথি নিয়ে পড়াশুনা শুরু করে। পড়তে গিয়ে সহপাঠী বন্ধু অরুনকে পছন্দ করে,ছেলেটা ভালই ,বাবা মায়ের একটিই সন্তান। অরুনের পরিবার মিষ্টি সুমিকে খুবই পছন্দ করত। সুমির গলাটা এত মিষ্টি,সবাই কে আকৃষ্ট করত।
সুমির মা ভয়ংকর রাগী। কিছু বুঝতে পারছিল,তাই এক ইঞ্জিনিয়ার ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করে। সুমির ঠাকমা বৌমাকে বুঝিয়েছিলেন সুমির মতামত ছাড়া বিয়ে কেন ঠিক করছ।
প্রণতি যা বলে তাই করে। আশির্বাদ ও হয়।সুমি ও অরুন তো এখনো পড়া শেষ হয় নি।তাও ওরা ,পালিয়ে গিয়ে নিজেরায় বইয়ে করে । শ্বশুর ছেলে ও বৌমার পড়াশুনার দায়িত্ব নেয়। বিয়ে করে বাপের বাড়ি যায়।মা মেরে বাড়ির থেকে বার করে দেয়। আর বলেন আজ থেকে আমার একটাই মেয়ে। বাবা মেয়ের সাথে চুপ করে দেখা করত॥
পড়াশুনা চলছে ,এখনো ওরা পাশ করে নি।এর মধ্যে সুমি প্রেগন্যান্ট হয়। ও চুপ করে স্বামীর মতামত নিয়ে বাচ্চা নষ্ট করে আসে।এক সপ্তাহ বাদে প্রচন্ড পেটে ব্যথা।নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়।ইউ.এস.জি করে দেখা যায়,এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি, বাইরে ফেলোপাইন টিউবে আটকে আছে। আসলে যমজ ভ্রুণ ছিল,একটা টিউব থেকে বেড়িয়ে ছিল যেটা আগেই পরিষ্কার করা হয়েছে।আর একটি ভ্রুণ,টিউব থেকে বার হতে না পেরে প্রচুর রক্তপাতের পরে শরীরের অন্য অঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ডাক্তার বাঁচার আশা নেই বলে দেয়।
সুমির মা শুনেও আসে নি।এমন কি বর কে দিব্যি দেন।বাবা মা বোন মৃত্যুর সময় কেউ আসে নি।আসলে মা ভেবেছিল এটা শ্বশুরবাড়ির চাল।
এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হয়ত এক মিলিয়ন পেসেন্টের মধ্যে একজনের দেখা যায়। হলে বাঁচান খুব মুশকিলের হয়। সেটা ভ্রুণ কত সপ্তাহের তার উপর নির্ভর করে।
সুমির অকাল মৃত্যুতে সুমির বাবার মাস ছয়েকের মধ্যে স্ট্রোকে মারা যান। আসলে বড় মেয়েকে খুব ভালবাসতেন।
পাষাণী মা ছোট মেয়েকে নিয়ে আছেন।এখন আধুনিকা ছোট মেয়ের অত্যাচারে জেরবার অবস্হা।বড় মেয়ে শান্ত ছিল কিন্তু ছোট মেয়ে খুবই অশান্ত।ছোট ।