Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » একটি হাট করা দরজা || Shamsur Rahman

একটি হাট করা দরজা || Shamsur Rahman

দরজাটা হাট-করা। ওর চারপাশে গিজগিজে ভিড়,
ভেতরে যাওয়ার জন্যে সবার কী হুটোপুটি। এ ওকে কনুই দিয়ে
ধাক্কা দিচ্ছে, কেউবা পাশের লোকটিকে আচমকা মারছে ল্যাঙ।
কেউ কেউ ক্রোধে চুল্লীর আগুন, কারও কারও ইতর বুলি শুনে কানে
দু’হাত চেপে ধরতে ইচ্ছে করে আমার। গুঁতোগুঁতির ভয়ানক এক প্রতিযোগিতায়
ক্লান্ত সবাই, কিন্তু প্রত্যেকেই দরজা পেরুতে
নাকাম। এই হট্ররোলের মধ্যে লক্ষ করি, একটি অজগর কারুকাজময়
দরজা আগলে দাঁড়ানো। দরজার সামনে গিয়ে প্রচণ্ড
আঁৎকে ওঠে লোকগুলো, পড়িমরি করে পিছিয়ে আসে।

আস্তে-সুস্থে এগিয়ে যাচ্ছিলাম ভিড় এড়িয়ে। খানিক
এগুতেই চোখে পড়ে দরজার পাশে দুলছে অনুপম রমণীয়
দুটি হাত, যেন আমাকে বরণ করে নেয়ার চাওয়া দশটি
সরু আঙ্গুলে আঙ্কিত। অজগরটিকে দেখতে পাচ্ছি না,
কোথাও যেন কোনও যদুবলে হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে নিমেষে।
প্রতিবন্ধকহীন প্রবেশ করি ভেতরের দরজা পেরিয়ে; ভেতরকার
দৃশ্য বর্ণনা করার ভাষা আমার অজ্ঞাত। মুগ্ধতা আমাকে
মূক করে ফেলে এক লহমায়। অপরূপ সৌন্দর্যের এমন
প্রকাশ ইতিপূর্বে বাস্তবে কি স্বপ্নে চোখ মেলে আমার দেখা
হয়নি। কী করে এক হর্ম্য, এক উদ্যান পেরিয়ে এলাম তা জড়ানো
থাক রহস্যময়তায়, এই শব্দগুচ্ছ কে যেন আমার কানে
আতরের তুলোর মতো গুঁজে দেয়। সেই শব্দরাজির নির্দেশ
অমান্য করা আমার সাধ্যাতীত।

কী করে সেই বন, সেই কাঁটা-বিছানো পথ, হাট-করা সেই
দরজা, হর্ম্য, উদ্যান থেকে ফিরে এলাম আপন ঘরে, বলতে
পারবো না। তবে ঘরে ফিরে আসতেই আমার হাতের
তিন আঙুলে বিদ্যুচ্চমক, পাহাড়ি ঝর্ণার গান। বহু দিন ধরে
বন্ধ্যা পড়ে-থাকা আমার খাতা গুঞ্জরিত হয়ে ওঠে অজস্র
রঙধনুরূপী শব্দের মিছিলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *