Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : উত্তরাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 57

রামায়ণ : উত্তরাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

বিদর্ভ-দেশের রাজা শ্বেত নরেশ্বর।
বনমধ্যে তপ রাজা করে নিরন্তর।।
সে বনেতে জন্তু নাই কিসের কারণ।
এমন আশ্চর্য্য বন শতেক যোজন।।
মুনি বলিলেন রাম তব পূর্ব্ব বংশে।
নল নামে রাজা ছিল বিদর্ভের দেশে।।
পৃথিবী-বিখ্যাত রাজা ধর্ম্মে রাজ্য করে।
তার পুত্র হইল ইক্ষ্বাকু নাম ধরে।।
ইক্ষ্বাকু হইতে সূর্য্যবংশের প্রচার।
পৃথিবী ভিতরে কারো নাহি অধিকার।।
সত্য করাইয়া রাজা পাত্রে রাজ্য দিল।
তপস্যা করিয়া রাজা স্বর্গবাসে গেল।।
ইক্ষাকু-কনিষ্ঠ ভ্রাতা নামে ঋষ্যদণ্ড।
ইক্ষ্বাকু জিনিয়া সেই নিল ছত্রদণ্ড।।
সূর্য্যবংশে জন্মিয়া যে করে অনাচার।
পরাস্ত হইয়া তারে দিল রাজ্যভার।।
ঋষ্যশৃঙ্গ পর্ব্বতে ভূপতি রাজ্য করে।
মধু নামে পুরী তথা বসায় নগরে।।
রচিয়া বিচিত্র পুরী দণ্ড নরেশ্বর।
ইন্দ্রের অধিক সুখ ভুঞ্জে নিরন্তর।।
সুখেতে থাকিতে তায় দেবতা পাষণ্ড।
শুক্রের বাটীতে এক দিন গেল দণ্ড।।
অব্জা নামে ছিল এক শুক্রের কুমারী।
পুষ্প তুলিবারে আইল পরমা সুন্দরী।।
রূপে আলো করে কন্যা সুখে তুলে ফুল।
কন্যারে দেখিয়া রাজা হইল ব্যাকুল।।
দেখিয়া কন্যার রূপ কামে অচেতন।
হস্তেতে ধরিয়া কহে মধুর বচন।।
কাহার যুবতী তুমি কন্যা বল কার।
অবশ্য কহিবে মোরে সত্য সমাচার।।
কন্যা বলে শুন রাজা নিবেদন করি।
শুক্র-মুনিকন্যা আমি, অব্জা নাম ধরি।।
মোর পিতা হয় তব কুল-পুরোহিত।
আমার সহিত রঙ্গ না হয় উচিত।।
রাজা বলে, তব রূপে প্রাণ নাহি ধরি।
প্রাণরক্ষা কর মোর শুন লো সুন্দরি।।
আমার রমণী হৈলে হব তব দাস।
তোমা বিনা আর নারী না লইব পাশ।।
শত শত রূপবতী করে দিব দাসী।
সর্ব্বনারী জিনি হবে আমার মহিষী।।
যদি নাহি শুন কন্যা আমার বচন।
বলে ধরি শৃঙ্গার করিব এইক্ষণ।।
রাজার বচন শুনি ক্রোধে বলে অব্জা।
মোরে বল করিলে মরিবে দণ্ডরাজা।।
মোরে বল করিলে পিতার মনস্তাপ।
সবংশে মরিবে রাজা পিতা দিলে শাপ।।
আমার পিতার কাছে লহ অনুমতি।
তবে আমি তব সঙ্গে করিব পিরীতি।।
রাজা বলে তব পিতা আসিবে কখন।
তদবধি ধৈর্য্য নাহি ধরে মোর মন।।
তোমা বিনা আর মোর মনে নাহি আন।
পায়ে ধরি কন্যা মোরে দেহ রতিদান।।
প্রাণ রক্ষা কর মোরে দিয়া আলিঙ্গন।
তব আলিঙ্গন বিনা না রহে জীবন।।
যোড়হাতে ভূপতি পড়িল কন্যা-পায়।
উত্তর না দেয় কন্যা, অশেষ বুঝায়।।
দৈবের নির্ব্বন্ধ, কন্যা রাজে দেয় গালি।
বলে ধরি শৃঙ্গায় করয়ে মহাবলী।।
হাত পা আছাড়ে কন্যা, আলুলিত চুল।
শৃঙ্গার সহিতে নারে করে গণ্ডগোল।।
শৃঙ্গারেতে শুক্রকন্যা কাতরা হইল।
এতেক দেখিয়া রাজা সত্বর ছাড়িল।।
শৃঙ্গার করিয়া দণ্ডরাজা গেল ঘর।
কোথা পিতা বলি কন্যা কান্দিল বিস্তর।।
আইলেন শুক্র-মুনি লয়ে শিষ্যগণ।
হেঁটমাথা করি কন্যা করিছে ক্রন্দন।।
কান্দিতেছে অব্জা কন্যা সম্মুখে দেখিল।
ধ্যানস্থ হইয়া মুনি সকলি জানিল।।
ক্রোধান্বিত হৈল মুনি যেন অগ্নিশিখা।
গুরুকন্যা হরে রাজা না করে অপেক্ষা।।
অভিশাপ দিল মুনি সহ শিষ্যগণে।
পুড়িয়া মরুক রাজা অগ্নি-বরিষণে।।
অগ্নিবৃষ্টি রাজ্যেতে হইল সাত রাতি।
সবংশে পুড়িয়া মরে দণ্ড-নরপতি।।
ঘোড়া হাতী পুড়ে সব অনেক ভাণ্ডার।
শতেক যোজন পুড়ে হইল অঙ্গার।।
সবংশেতে দণ্ডরাজা হইল বিনাশ।
শুক্রমুনি বসিলেন ছাড়িয়া নিঃশ্বাস।।
ব্রহ্মশাপে শত যোজন না হয় বসতি।
দণ্ডারণ্য বলিয়া সে বনের খেয়াতি।।
ব্রহ্মশাপে পশু পক্ষী নাহি মুনিগণ।
বনের বৃত্তান্ত শুন রাজীবলোচন।।
বেলা অবসান হৈল উপনীত সন্ধ্যা।
সেই স্থানে দুইজন করিলেক সন্ধ্যা।।
মিষ্টান্ন ভোজন মুনি করাইল রামে।
সেই দিন বঞ্চিলেন মুনির আশ্রমে।।
রজনী প্রভাতে রাম মাগিয়া মেলানি।
মুনিরে প্রণমি কহে সুমধুর বাণী।।
তোমা দরশনে মোর সফল জীবন।
আরবার দেখি যেন তোমার চরণ।।
মুনি বলে রাম তব মধুর বচন।
তোমার বচনে তুষ্ট যত দেবগণ।।
অনাথের নাথ তুমি ত্রিদশের পতি।
তোমা দরশনে বড় পাইলাম প্রীতি।।
মুনির চরণে রাম নমস্কার করি।
উপনীত হৈল গিয়া অযোধ্যা-নগরী।।
শুনিলে রামের গুণ সিদ্ধ অভিলাষ।
গাহিল উত্তরকাণ্ড কবি কৃত্তিবাস।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress