Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : উত্তরাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 56

রামায়ণ : উত্তরাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

শ্রীরামেরে সম্ভাষিয়া যত দেবগণ।
সকলে চলিয়া গেল অমর-ভুবন।।
সৈন্য সহ রামচন্দ্র যান ততক্ষণ।
অগস্ত্যের বাটীতে দিলেন দরশন।।
অগস্ত্য-চরণ রাম করেন বন্দন।
পাদ্য অর্ঘ্য দিয়া দিল বসিতে আসন।।
যেই অলঙ্কার বিশ্বকর্ম্মার নির্ম্মাণ।
রত্ন-অলঙ্কার মুনি রামে দিলা দান।।
রাম বলেন শুন মুনি না হয় বিধান।
ক্ষত্র হয়ে নাহি লয় ব্রাহ্মণের দান।।
অগস্ত্য বলেন রাম শুন মোর বাণী।
অবধান কর কহি ইহার কাহিনী।।
সত্যযুগে বিধি এই ব্রাহ্মণের পূজা।
ব্রাহ্মণের পূজা করে যত ক্ষত্র-রাজা।।
স্বর্গে ইন্দ্ররাজ করে দেবের পালন।
পৃথিবীতে ক্ষত্র-রাজা পালেন ব্রাহ্মণ।।
লোকপাল স্থঅনে ক্ষত্র নামে ক্ষত্র-রাজা।
লয়ে গেল যত্ন করে ব্রাহ্মণের পূজা।।
ইন্দ্র রাজার পুরে ক্ষত্রিয়ে দিতে দান।
লোকপালের স্থানে রাম তুমি সে প্রধান।।
ক্ষত্রকুলে জন্ম তব বিষ্ণু-অবতার।
তোমারে করিতে দান উচিত আমার।।
তোমার শরীর-যোগ্য এই অলঙ্কার।
অলঙ্কার দিয়া মুনি কৈলা পুরস্কার।।
শ্রীরাম বলেন মুনি জিজ্ঞাসি কারণ।
কোথায় পাইলে তুমি এই আভরণ।।
হেন অলঙ্কার নাহি সংসার ভিতরে।
কোথা পেলে এই রত্ন কহিবে আমারে।।
অগস্ত্য বলেন তবে শুন রঘুবর।
সত্যযুগে তপ করি বনের ভিতর।।
একেশ্বর তপ করি হরিষ অন্তর।
অঘোর কাননে একা থাকি নিরন্তর।।
সে বনের গুণ কত কহিতে না পারি।
চারি ক্রোশ পথ যুড়ি আছে এক পুরী।।
পুরীখান দেখি তথা অতি মনোহর।
অনাহারে তপ আমি করি নিরন্তর।।
মনোহর সরোবর বনের ভিতরে।
নিত্য নিত্য স্নান করি সেই সরোবরে।।
এক দিন প্রত্যূষেতে করি গাত্রোত্থান।
সরোবর-তীরে যাই করিবারে স্নান।।
আশ্চর্য্য দেখিনু অতি গিয়া সেই ঘাটে।
শব এক পড়ে আছে সরোবর-তটে।।
মড়া হয়ে ক্ষয় নাহি অতি মনোহর।
বিষ্ণু-অধিষ্ঠান যেন পরম সুন্দর।।
চন্দ্রের কিরণ প্রায় সূর্য্য হেন জ্যোতি।
অতি মনোহর মড়া সুন্দর মূরতি।।
হেন জন নাহি তথা জিজ্ঞাসি কারণ।
মড়া-রূপ দেখিয়া বিস্ময় হৈল মন।।
সেই মড়া-রূপ আমি করি নিরীক্ষণ।
হেনকালে অমর আইল একজন।।
সুবর্ণের রথখান বহে রাজহংসে।
সাত শত দেবকণ্যা পুরুষের পাশে।।
কেহ নাচে কেহ গায় কেহ বাজায় বাঁশী।
আইলেন অবনীতে অমর-নিবাসী।।
সেই সরোবর-জলে অঙ্গ পাখালিল।
সুগন্ধি চন্দন দিয়া অঙ্গ শোভা কৈল।।
সেই মড়া লয়ে তিনি করিয়া ভক্ষণ।
হরষিতে গিয়া রথে কৈলা আরোহণ।।
রথে আরোহণ করি স্বর্গবাসে যায়।
হেনকালে যোড়হাতে জিজ্ঞাসিনু তায়।।
দেবরথে চড়ি আছ দেব-অবতার।
দেবতা হইয়া মড়া করিলে আহার।।
ইহার বৃত্তান্ত মোরে কহ দেখি শুনি।
কহিতে লাগিল মোরে করি যোড়পাণি।।
স্বর্গরাজার পুত্র আমি দৈত্য নাম ধরি।
পিতা বিদ্যমানে আমি স্বর্গে রাজ্য করি।।
পিতা স্বর্গবাসে গেল কতদিন পরে।
রাজ্যভার দিয়া আমি কনিষ্ঠ সোদরে।।
নিরাহারে তপ আমি করিনু বিস্তর।
স্বর্গপ্রাপ্তি হৈল মোর ত্যজি কলেবর।।
ক্ষুধা তৃষ্ণা হৈলে আমি সহিতে না পারি।
জিজ্ঞাসিনু বিরিঞ্চিরে করযোড় করি।।
স্বর্গপুরে আইলাম তপস্যার ফলে।
ক্ষুধানলে সতত আমার অঙ্গ জ্বলে।।
ব্রহ্মা বলিলেন ভুঙ্গ আপনার ফল।
ক্ষুধার্ত্তেরে তুমি নাহি দিলে অন্ন জল।।
যাহা দেয় তাহা পায় বেদের লিখন।
আপনি ভাবিয়া রাজা বুঝহ এখন।।
আপনা করিলে তুষ্ট ভোজনের আশে।
নিজ অঙ্গ খাও তুমি মনের হরিষে।।
না পচিবে না গলিবে মধুর সুস্বাদ।
সে শরীর খাইলে ঘুচিবে অবসাদ।।
ব্রহ্মার মুখেতে শুনি এতেক বচন।
এতেক দুর্গতি মোর খণ্ডন কারণ।।
কাতরে কহিনু ধরি ব্রহ্মার চরণে।
এই দুঃখ অবসান হবে কতদিনে।।
ব্রহ্মা বলিলেন কথা শুনহ রাজন।
যেমতে হইবে তব পাপ বিমোচন।।
তপ করিবারে যাবে অগস্ত্য মুনিবর।
নিদাঘেতে তপ করিবেন একেশ্বর।।
তোমার সহিত তাঁর হবে দরশন।
তাঁরে দান দিলে তব পাপ-বিমোচন।।
বহু তপ করিয়াছ না করিলে দান।
অগস্ত্যেরে দান দিলে পাবে পরিত্রাণ।।
সে অবধি মড়ার শরীর খাই আমি।
এ হেন পাপেতে যদি রক্ষা কর তুমি।।
চারি যুগ মড়া খাই বিধির বচনে।
আজি শুভদিন মম তব দরশনে।।
তোমা বিনা আমার নাহিক অন্য গতি।
তুমি ত্রাণ করিলে আমার অব্যাহতি।।
কৃপা কর মুনিবর করি পরিহার।
তুমি দান নিলে হয় আমার উদ্ধার।।
স্তুতিবশে দান আমি করিনু গ্রহণ।
অঙ্গ হৈতে খসাইয়া দিল আভরণ।।
তার দান লইলাম এই সে কারণ।
মৃতদেহ নষ্ট তার হইল তখন।।
অনাথের নাথ তুমি অগতির গতি।
তোমারে এ দান দিলে আমার মুকতি।।
মোরে দান দিয়া পাইয়াছে পরিত্রাণ।
মম পরিত্রাণ হয় তুমি নিলে দান।।
অগস্ত্যের কথা শুনি শ্রীরামের হাস।
কহ কহ বলি রাম করেন প্রকাশ।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress