ঠাকুর্দা আমাকে বসুমতী সংস্করণ উপনিষদ
উপহার দিয়েছিলেন
ভালো করে পড়িনি, কবেই সে বই ভেসে গেছে বন্যায়
বাবা দিয়েছিলেন নেসফিল্ডের গ্রামার
আর টেনিসনের কাব্য
সে সবের পাতা ছিঁড়ে চানাচুরওয়ালারা ঠোঙা বানিয়েছে
চানাচুর বিষয়েই আমি বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছি বলা যায়
জানি, নুন কেমন করে ধরে রাখে আর্দ্রতা, তেলে কতটুকু
ভেজাল
বিয়েবাড়িতে কেন পাঞ্জাবি পরতে হয়
চাকরির ইন্টারভিউতে কেন কোট টাই..
কৈশোরের দু’গালে থাপ্পড় মেরেছে দুই বিপরীত সভ্যতা
তাই রক্তাভ মুখ নিয়ে আমি গেছি পড়ন্ত বেলার মিছিলে
নগরের আকাশ রেখার অন্ধকার হাতছানি দিয়ে ডেকেছে
কতবার
পাশের মানুষটির সঙ্গে পা-মেলানো কম শক্ত নয়
পায়ে পায়ে অনেক জটিলতা
অথচ একলা সরে দাঁড়ালেই সবাই ছি ছি করে
দেশপ্রেমের গান গাইতে গাইতে দেখেছি
চোরাবালির মধ্যে ড়ুবে যাচ্ছে দেশ
আন্তর্জাতিক হয়ে গলা জড়াজড়ি করতে গেছি যার সঙ্গে
সে তুলে দিয়েছে সীমান্তের কাঁটাতার
তবু যেখানে নদীর পাড় ভাঙছে, সেখানে গিয়ে বসে থেকেছি
চাবুকের মতন ঝলসে উঠেছে বিদ্যুৎ, ফণা তুলেছে জলস্রোত
আবার ভোরের স্বর্ণাভ আলোয় সব শান্ত, মানুষের জন্য
মন কেমন করে
ফেরার পথ খুঁজে পাই না, চেনাশুনো কারুকে দেখিনা
বিংশ শতাব্দীর শেষ বেলায় গোটা পৃথিবীটাই পথভ্রান্ত?
উত্তরকালের জন্য রেখে যাব দু’চার ফোঁটা চোখের জল…
ওসব কথার কথা, কবিতা ছাড়া আর কোথাও
কান্না নেই!