ইমামের বন্ধু ঈশ্বর
কাল খুশির ঈদ, ঈশ্বরের প্রিয় বন্ধু ইমামের বাড়িতে কাল ওর নেমন্তন্ন। সকালে মা’কে কথাটা বলতেই মা বললেন-
– ঈশ্বর ওদের আর আমাদের ধর্ম আলাদা, আমরা গোপাল পুজো করি, ওদের বাড়ি যাই না, তুমিও যাবে না।
ঈশ্বর ভাবে ধর্ম কি? আমাদের গোপাল? তাহলে ওদের ঠাকুর কে? ছোটো মাথায় ঈশ্বরের এ সব ঢোকে না।
ঈদের দিন ইমাম সকালে নতুন জামা পরে প্রিয় বন্ধুকে ডাকতে চলে এলো –
– কিরে আমাদের বাড়ি যাবি না?
– না রে আমাদের আর তোদের ধর্ম আলাদা তাই আমি যাবো না, আচ্ছা তোদের বাড়িতে গোপাল আছে?
– গোপাল কে রে?
– তুই গোপাল ঠাকুর কে জানিস না? কৃষ্ণ ঠাকুরতো!
– ও কৃষ্ণ ঠাকুর, হ্যাঁ, আমার বাবাবানায়তো, আমার বাবা তো ঠাকুর গড়ার কাজ করে পালবাড়িতে।
ঈশ্বরের মা পেছনে দাঁড়িয়ে ওদের সব কথা শুনছিলো,সামনে এসে ইমামকে বলল –
তুই একটু বোস ও এখুনি স্নান করে নতুন জামা পরে তোদের বাড়ি যাবে।
ঈশ্বরের মা ভাবে সত্যিই তো ধর্ম কি? এতো মানুষেরই সৃষ্টি, ইমামের বাবা যে ঠাকুর গড়েন সেই ঠাকুর হিন্দুর বাড়িতে পুজো হচ্ছে। তবে ঠাকুর যদি তার তৈরি সংসারকে ভালোবাসায় বেঁধে রাখতে পারেন তবে আমরা ক্ষুদ্র মানুষ কেনো এই ভেদাভেদ করি?
ঈশ্বর স্নান করে এলে ওর মা একটা নতুন জামা বের করে দিলেন। দুই বন্ধু আনন্দে হাত ধরাধরি করে এগিয়ে যাচ্ছে।ওদের এই ভালোবাসা দেখে মা ভাবলেন পৃথিবীতে সবাই যদি ভেদাভেদ ভুলে এই ভাবে একে অপরেকে ভালোবেসে কাছে টেনে নিতে পারতো পৃথিবীটা তাহলে ভালোবাসার নীড় হয়ে উঠতো। ঈশ্বরের মা তার ঈশ্বরের উদ্দ্যেশ্যে কপালে জোড় হাত ছোঁয়ালেন।