Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : আরণ্যকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 5

রামায়ণ : আরণ্যকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

এরূপে রহেন পঞ্চবটী তিন জন।
হেনকালে ঘটে এক অপূর্ব্ব ঘটন।।
রাবণের ভগ্নী সেই নাম সূর্পণখা।
অকস্মাৎ রামের সম্মুখে দিল দেখা।।
ভ্রমিতে ভ্রমিতে গেল রামের সদনে।
শ্রীরামেরে দেখিয়া সে মাতিল মদনে।।
শত কাম জিনিয়া শ্রীরাম রূপবান।
সুখ হয়, যদি মিলে সমানে সমান।।
এত ভাবি মায়াবিনী দুষ্টা নিশাচরী।
নররূপ ধরে নিজ রূপ পরিহরি।।
জিতেন্দ্রিয় শ্রীরাম ধার্ম্মিক-শিরোমণি।
রামে ভুলাইবে কিসে অধর্ম্মাচারিণী।।
পর্ব্বত নাড়িতে চাহে হইয়া দুর্ব্বলা।
ভুলাইতে রামেরে পাতিল নানা ছলা।।
হাব ভাব আবির্ভাব করিয়া কামিনী।
রামেরে জিজ্ঞাসা করে সহাস্য বদনী।।
রাজপুত্র বট, কিন্তু তপস্বীর বেশ।
এমন কাননে কেন করিলে প্রবেশ।।
দণ্ডক-কাননে আছে দারুণ রাক্ষস।
হেন বনে ভ্রম তুমি, এ বড় সাহস।।
বহু দূর নহে, তারা আইল নিকটে।
হেন রূপবান তুমি পড়িলে সঙ্কটে।।
সঙ্গে দেখি চন্দ্রমুখী, ইনি কে তোমার।
এ পুরুষ কে তোমার সমান আকার।।
সরল হৃদয় রাম দেন পরিচয়।
মম পিতা দশরথ রাজা মহাশয়।।
ইনি ভ্রাতা লক্ষ্মণ, প্রেয়সী সীতা ইনি।
সত্য হেতু বনে ভ্রমি, শুন লো কামিনি।।
শুনিলে, আমারে দেহ নিজ পরিচয়।
কে বট আপনি, কোথা তোমার আলয়।।
পরমাসুন্দরী তুমি, রূপে নিরুপমা।
মেনকা ঊর্ব্বশী কি হইবে তিলোত্তমা।।
জিজ্ঞাসা করিল রাম সরল হৃদয়।
সূর্পণখা আপনার দেয় পরিচয়।।
লঙ্কাতে বসতি, আমি রাবণ-ভগিনী।
নানা দেশ ভ্রমি আমি হয়ে একাকিনী।।
দেশে দেশে ভ্রমি আমি, কারে নাহি ভয়।
তোমার বনিতা হই, হেন বাঞ্ছা হয়।।
লঙ্কাপুরে বৈসে ভাই দশানন রাজা।
নিদ্রা যায় কুম্ভকর্ণ ভ্রাতা মহাতেজা।।
অন্য ভ্রাতা সুশীল ধার্ম্মিক বিভীষণ।
ভাই খর দূষণ এখানে দুই জন।।
অতি আহ্লাদের আমি কনিষ্ঠা ভগিনী।
তোমার হইলে কৃপা, ধন্য করি মানি।।
সুমেরু পর্ব্বত আর কৈলাস মন্দর।
তোমা সহ বেড়াইব, দেখিব বিস্তর।।
তথা যাব, যথা নাই মনুষ্য-সঞ্চার।
তুমি আমি কৌতুকেতে করিব বিহার।।
মনঃসুখে বেড়াইব অন্তরীক্ষ গতি।
এত গুণ না ধরে তোমার সীতা সতী।।
প্রতিবাদী হয় যদি জানকী লক্ষ্মণ।
রাখিয়া নাহিক কার্য্য, করিব ভক্ষণ।।
আমার দেখহ রাম কেমন সুবেশ।
সীতার আমার রূপ অনেক বিশেষ।।
কুবেশ তোমার সীতা, বড়ই ঘৃণিত।
হেন ভার্য্যা সহ থাক মনে পেয়ে প্রীত।।
যখন যেখানে ইচ্ছা, সেখানে তখনি।
বিহার করিব গিয়া দিবস রজনী।।
শ্রীরাম বলেন, সীতা না করিহ ত্রাস।
রাক্ষসীর সহিত করিব পরিহাস।।
পরিহাস করেন শ্রীরাম সচতুর।
রাক্ষসীকে বাড়াইতে বলেন মধুর।।
আমার হইলে জায়া পাবে সে সতিনী।
লক্ষ্মণের ভার্য্যা হও, এই বড় গুণী।।
সুচারু লক্ষ্মণ ভাই মনোহর বেশ।
যৌবন সফল কর, কহি উপদেশ।।
লক্ষ্মণ কনকবর্ণ পরম সুন্দর।
লক্ষ্মণের ভার্য্যা নাই, তুমি কর বর।।
সত্য-জ্ঞানে নিশাচরী লক্ষ্মণেরে বলে।
আমা হেন রূপবতী পাবে কোন্ স্থলে।।
তুমি যুবা হইয়া একেলা বঞ্চ রাতি।
রসক্রীড়া ভুঞ্জ তুমি আমার সংহতি।।
লক্ষ্মণ বলেন, আমি শ্রীরামের দাস।
সেবকের প্রতি কেন কর অভিলাষ।।
ভুবনের সার রাম অযোধ্যার রাজা।
তুমি রাণী হইলে করিবে সবে পূজা।।
কি গুণ ধরেন সীতা তোমার গোচর।
তোমায় সীতায় দেখি অধিক অন্তর।।
শ্রীরামে ভজহ তুমি হৈয়া সাবধান।
মানুষী কি করিবেক তোমা বিদ্যমান।।
উপহাস না বুঝে, বচন মাত্রে ধায়।
লক্ষণেরে ছাড়িয়া রামের কাছে যায়।।
পুনর্ব্বার আইলাম রাম তব পাশে।
ঘুচাইব ব্যাঘাত সীতারে গিলি গ্রাসে।।
বদন মেলিয়া যায় সীতা গিলিবারে।
ত্রাসেতে বিকল সীতা রাক্ষসীর ডরে।।
ক্ষণে বামে ক্ষণেতে দক্ষিণে যান সীতা।
দেখিলেন রঘুনাথ সীতারে ব্যথিতা।।
যেই দিকে যান সীতা সে দিকে রাক্ষসী।
রাক্ষসীর ডরে কাঁপে জানকী রূপসী।।
শ্রীরাম বলেন, ভাই ছাড় উপহাস।
ইঙ্গিতে বলেন, কর ইহারে বিনাশ।।
ক্রোধেতে লক্ষ্মণ বীর মারিলেন বাণ।
এক বাণে তাহার কাটিল নাক কাণ।।
খান্দা নাকে ধান্দা লেগে রক্ত পড়ে স্রোতে।
ওষ্ঠাধর রাক্ষসীর ভিজিল শোণিতে।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress