আমার বাবা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ পুরুষ মানুষ। আমি
আমার বাবার স্নেহাদরে খুব ছোট থেকে বড় হয়ে উঠেছি।
আমার মায়ের অকাল মৃত্যু হয়,কর্কট রোগাক্রান্ত হয়ে।
সেই থেকে আমার বাবা আমার দুই দাদা আর আমাকে
পরম স্নেহে আগলে আগলে বড় করে তোলেন।
ছোট থেকে দেখেছি আমার বাবা কখনো তাঁর নিজের
কোনো রকম সুখ সুবিধার কথা কখনো ভাবেননি তিনি। সবসময় তিনি তাঁর তিনটি মাতৃহীন সন্তান কে সমস্ত রকম
সুখ,শান্তি, সুবিধা দিতে চেষ্টা করেছেন তার সামর্থ অনুযায়ী। তিনি এতটাই ধৈর্য্যশীল মানুষ যে, আমি অবাক
হয়ে এখন ভাবি কি জানি আমার মা থাকলে , তিনি কি
এতটা ধৈর্য্য সহকারে আমাদের লালন করতে পারতেন?
জানি না! তবে আমার মায়ের কথা ভেবে কক্ষনো কোনো
রকম কষ্ট বোধ হয় না।
কারণ আমার সাত বছর বয়সে আমার মা আমাদের ছেড়ে
না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। আর আমার বাবা আমার
যখন ছাব্বিশ বছর বয়স এবং আমি দুটি সন্তানের মা,
তখন তিনি ইহলোক ছেড়ে যান। আর সেই দিনটিই ছিল
আমার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন।
আমি এবং আমার দুই দাদা সেদিন একসাথে পিতৃমাতৃহীন
হয়ে যাই।
তবে যতদিন আমাদের বাবা আমাদের কাছে ছিলেন,তত
দিন আমরা ছিলাম পৃথিবীর সবচাইতে সুখী সন্তান।
আমি জানি না মায়েরা কি আমার বাবার থেকেও ভালো
মানুষ হন?——–
হয়ত হন,তবে আমার জানার কোনো আগ্রহ নেই , কারন
আমার বাবা, আমাদের তিন ভাইবোনের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ
মানুষ। তাঁর সংস্পর্শ পাইনা এখন ঠিকই তবুও অনুভব করি তিনি আমাদের মাথার উপর তাঁর আশির্বাদের হাতটি
রাখেন প্রতি মুহূর্তে। তিনি আমাদের বাবা । আমাদের
ভগবান।
এই পৃথিবীতে আমার বাবার মতো বাবা যেন প্রতিটি সন্তান পায়। আমি প্রতিনিয়ত আমার বাবার অস্তিত্ব
আজো উপলব্ধি করি।
এমন নির্লোভ, হৃদয়বান,আত্মত্যাগী মানুষকে আমি
বাবা হিসেবে পেয়েছিলাম ভেবে গর্বে বুক ভরে ওঠে।
তিনি শিক্ষকতা করতেন । আর তাঁর জীবনের সমস্ত
কিছু ছিল প্রকৃত শিক্ষায় মন্ডিত।
অতএব আমি আমৃত্যু জানব আমার বাবা আমার
জীবনের পরম পুরুষ এবং শ্রেষ্ঠতম পুরুষ মানুষ।।