আজও মনে পড়ে
আজ আমি একাকী জীবন যাপন করছি মা। নেই কোন কোলাহল বা আমাকে ডাকার কোনো মানুষ। মা শুনছো তুমি? ভীষণ মনে পড়ছে তোমার কথা। “মায়া চা- টা নে, কিছু খাবি?” এখনো কথা গুলো মনে পড়ে। রাগ- অভিমান, ভালোবাসা -শ্রদ্ধা তোমাকে ঘিরেই ছিল। ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়ে তুমিই আমার পিতা-মাতার দায়িত্ব নিয়েছিলে। কত পরিশ্রম করেও আমার পরীক্ষার সময় কাছে বসে ঢুলতে, তবু শুতে না। আমি যেন রাত অবধি পড়তে পারি। ভোরবেলা তুলে দিতে আমায়। বাপ্টুনকে নিয়েও তোমার চিন্তার অন্ত ছিল না।- একমাত্র নাতি তোমার। জানো মা,ও এখন স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি বানিয়ে পুরস্কার আনে। কত সুন্দর চিত্রনাট্য লেখে।তোমার মনে আছে? বাপ্টুন ছেলেবেলায় ঢাকিদের সঙ্গে খড়দায় চলে গিয়েছিল ঘুরতে? কত খোঁজাখুঁজি বলো। শ্রীকান্ত আজও বাপ্টুনের বন্ধু।- দুজনেই পুজোর অপেক্ষা করে। এক বছর অন্তর ওদের দেখা হয়। সেদিন আমের আচার করতে গিয়ে তোমার কথা খুব মনে পড়ছিল মা। তোমার মত পারিনা। তবু তোমার বানানো জিনিস গুলো করে সবাইকে বলতে পারি আমার মা এগুলো খুব সুন্দর করত। সমস্ত পুজোতে তোমার মত নাড়ু করার চেষ্টা করি। আর শীতকালে পিঠেপুলি তোমার মতো করি। বাপ্টুন সৌমিতা খেতে খুব ভালোবাসে।মা, তুমি কেমন আছো ওপারে গিয়ে? সত্যি বল তো মা এপারের থেকে কি ওখানে বেশি শান্তি পাওয়া যায়?বাপ্টুন অভিমান করে কথা বলে না যখন, খুব কষ্ট পাই। ওর তৈরি সিনেমাগুলো ইউটিউবে বারবার দেখি।ওর গলার স্বর শুনি। ওরা বোঝে না মা কত ভালবাসে। তখন মনে হয় তোমার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে থাকি মা।-তোমার আমার সম্পর্ক তো এত দূরত্ব ছিল না মাগো। এত যন্ত্রণা বুকটা চিরে ফেলে দুঃখটাকে বের করে দিতে ইচ্ছা করে মা। তুমি আমায় ছেড়ে যেও না। রোজ স্বপ্নে এস। আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিও সেই আগের মত।