ছিল না বিষয়বুদ্ধি এতটুকু; তাই ঘর ঠিক
না করেই একপ্রস্থ আলখাল্লা পরে অর্ধাহারে,
অনাহারে বনের স্বর্গীয় মোষ গেলেন তাড়াতে।
ছিল না বিষয়জ্ঞান, তবু জ্ঞানকেই সাজালেন
প্রেমের আভায়। ডেরাছুট ঘুরেছেন পথে পথে
সহায় সম্বলহীন চরাচরে ঈশ্বরের ঘর
বানাবার কী তীব্র মোহন আকর্ষণে। জানি তিনি
রাজার অধিক রাজা, কিন্তু জোটে কাঁটার মূকুট।
যখন অনাথ শিশু শূন্য এনামেলের পাত্তর
মেলে ধরে পথচারীদের দিকে, তখন তাঁকেই
দেখি সেই শিশুর ভিতরে; কোনো শিল্পী নিঃসঙ্গতা
আর যন্ত্রণায় কান্না বয়ে বেড়ায় যখন, দেখি
তিনি ক্রূশকাঠ পিঠে নিয়ে চলেছেন হেঁটে একা।
ধর্ষিতা নারীর চোখে তাঁর চোখ, নিষ্ঠুর, গোঁয়ার
চাবুকের অন্ধ দাগ যে দাসের পিঠে জেগে থাকে,
তিনি সেই দাস হয়ে অত্যন্ত একাকী কষ্ট পান।
ছিল না বিষয়বুদ্ধি এতটুকু, বস্তুত বোকাই
বলা যায়। আত্মরক্ষা জরুরি জেনেও কোনোকালে
গড়েননি সশস্ত্র বাহিনী, মেষপালকের মতো
শুধু কতিপয় মেষ নিয়ে গাধায় সওয়ার হয়ে
কখনো, কখনো নগ্ন পদে যোজন যোজন পথ
হেঁটেছেন; একরত্তি সোনারূপ নয়, শুধু বাণী
ব্যাকুল ছড়িয়ে দিয়েছেন মরুভূমিতে, প্রান্তরে,
নদীতীরে বিনিময়ে দাগি চোর আর খুনেদের
সঙ্গে শতাব্দির কলঙ্কের মতো পেরেকে পেরেকে
হয়েছেন বিদ্ধ আর আজও এশিয়ার বুভুক্ষায়
জীবন্ত কংকাল হন, স্বৈরাচারী বুটের তলায়
হাতীর কিমতি দাঁতে তৈরি শিল্প সামগ্রীর মতো
পাঁজরের হাড় তার গুঁড়ো হয় দিকে দিকে, আর
বেদনার্ত আফ্রিকায় বেকসুর ঝোলেন ফাঁসিতে।