রজনী একাদশী পোহায় ধীরে ধীরে, রঙিন মেঘমালা উষারে বাঁধে ঘিরে। আকাশে ক্ষীণ শশী আড়ালে যেতে চায়, দাঁড়ায়ে মাঝখানে কিনারা নাহি পায়। এ-হেন কালে যেন মায়ের পানে মেয়ে রয়েছে শুকতারা চাঁদের মুখে চেয়ে। কে তুমি মরি মরি একটুখানি প্রাণ। এনেছ কী না জানি করিতে ওরে দান। মহিমা যত ছিল উদয়-বেলাকার যতেক সুখসাথি এখনি যাবে যার, পুরানো সব গেল— নূতন তুমি একা বিদায়-কালে তারে হাসিয়া দিলে দেখা। ও চাঁদ যামিনীর হাসির অবশেষ, ও শুধু অতীতের সুখের স্মৃতিলেশ। তারারা দ্রুতপদে কোথায় গেছে সরে— পারে নি সাথে যেতে, পিছিয়ে আছে পড়ে। তাদেরই পানে ও যে নয়ন ছিল মেলি, তাদেরই পথে ও যে চরণ ছিল ফেলি, এমন সময়ে কে ডাকিলে পিছু-পানে একটি আলোকেরই একটু মৃদু গানে। গভীর রজনীর রিক্ত ভিখারিকে ভোরের বেলাকার কী লিপি দিলে লিখে। সোনার-আভা-মাখা কী নব আশাখানি শিশির-জলে ধুয়ে তাহারে দিলে আনি। অস্ত-উদয়ের মাঝেতে তুমি এসে প্রাচীন নবীনেরে টানিছ ভালোবেসে— বধূ ও বর-রূপে করিলে এক-হিয়া করুণ কিরণের গ্রন্থি বাঁধি দিয়া।