অমরত্বের স্বাদ
মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে। যেতে চাই ইকারিয়া দ্বীপে এ’জীবনে।
গ্রিসের ছোট দ্বীপ ইকারিয়া।
পরিবেশ আর আবহাওয়ার কারণে এই দ্বীপের মানুষ দীর্ঘজীবি। স্তামাতিস মোরাইতিস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েও চিকিৎসা ছাড়াই ইকারিয়া দ্বীপে এসে দীর্ঘদিন বেঁচেছিলেন।
মা শুনে হেসে বললেন অমরত্বের রহস্য যে।
বললাম এই দ্বীপের মানুষের স্বাভাবিক গড় আয়ু ১০০ বছর।এই দ্বীপের বৃদ্ধরা ১০০ বছর বয়সেও লাঠিতে ভর দিয়ে চলেন না।
তুমি তো মা ৭০ বয়সেও লাঠিতে ভর দিয়ে হাঁটতে পার না।তোমার প্রয়োজন ওই দ্বীপে গিয়ে থাকা।
সেখানকার বৃদ্ধরা পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত গির্জার সিঁড়িও অনায়াসেই একাই ভেঙে উঠে যেতে পারেন। তুমিও সেখানে গেলে সুস্থ হয়ে
যাবে লাঠির আর দরকার হবে না।
আমার কোমড়ের জোর নেই সামনে ঝুঁকে পড়েছি
আর তুই বলছিস সেখানে গেলে আমি ১০০ বছর
বাঁঁচতে পারব?
জানা যায়, যে স্তামাতিস মোরাইতিস ১৯৫১ সালে ইকারিয়া ছেড়ে আমেরিকার ফ্লোরিডা শহরে নিজের স্ত্রী এবং সন্তানদের সঙ্গে বসবাস শুরু করেন। ১৯৭৬ সালে স্তামাতিস হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হন হাসপাতালে। চিকিৎসকরা তাকে জানান তিনি ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি আর মাত্র নয় মাস বেঁচে থাকবেন।
তখন স্তামাতিসের বয়স ছিল ৬০ বছর। তিনি জীবেনর শেষ সময় ইকারিয়ায় ছেলেবেলার বন্ধুদের সঙ্গে কাটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। স্ত্রীর সঙ্গে ইকারিয়ায় ফিরে আসেন।এরপরই জীবনের মোড় ঘুরে যায় তার। মাসখানেকের মধ্যে দেখা যায় তার শরীরের পরিবর্তন। ধীরে ধীরে সুস্থবোধ করতে থাকেন।
সুস্থ হলে একাই হাঁটাচলাশুরু করেন, চাষ করেন নিজের জমিতে। যার মাত্র নয় মাস বাঁচার কথা সেই তিনিই বেঁচেছিলেন ৯০ বছর পর্যন্ত।
এই দ্বীপের বাসিন্দারা বেশি পরিমাণে শাক-সবজি এবং ফল-মূল খায়। খাদ্য তালিকায় মাছ-মাংসের পরিমাণও কম ফাস্টফুড নেই।
ভূ-প্রকৃতির কারণে তাদের শরীরচর্চা করতে হয় না। স্থানীয় মদ খান পরিমিত পরিমানে দু’গ্লাস। রাতে ঘুমনোর আগে এক ধরণের হার্বাল চা পানের ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমায়।
তাই এই দ্বীপে গেলে মানুষ মৃত্যুকে ভুলে যায়, আর দীর্ঘ জীবন লাভ করে।
মা তুমি সেখানে গেলে আগেরমত হাঁটতে পারবে।
মা হেসে বলে, চল যাই।
অমরত্বের স্বাদ পেতে রওনা দেবো।