অন্য দূর্গা
কাল মহালয়…….মনে আছে মা ? তখন অনেক ছোটোবেলা….বাপি সেই ভোর বেলা রেডিওটা চালিয়ে দিত,ঘুম ভাঙতো না কিছুতেই,ঘুমের ঘোর কাটতে না কাটতেই,উঠে TV টা চালিয়ে দিতাম ….
জানো মা , সত্যি এখন অনেক বড় হয়ে গেছি,
বেড়েছে দায়িত্ব , তার সাথে কর্তব্য ,জীবিকার তাগিদ ছিঁড়েছে সম্পর্কের তার ,ভিটে মাটি ছেড়ে হয়েছি পরবাসী ।তবুও বাঙালী তো !বাঙালী হয়ে বাংলার শ্রেষ্ঠ পূজোকে ignore করা;Its next to impossible …
মহালয় দেখার পর আমরা বন্ধুরা ঠাকুর আনতে যেতাম;খুব miss করি ঐ দিনগুলো,,,,
কুমোরটুলিতে দেখতাম প্রায় প্রত্যেকটা ঘরেই
প্রতিমার ভিড়।হ্যাঁ, একটা কথা তোমায় বলা হয়নি মা,একটা ভারী অদ্ভূত স্বপ্ন দেখলাম আজ!
বন্ধুদের সাথে ঠাকুর আনতে গেছি;সামনে খুব ভিড়,অনেকটা পিছনে দাড়িয়ে আছি।প্রতিমার মুখটা অস্পষ্ট হলেও বেশ সুন্দর,কিন্তু মায়ের চোখে জল কেন?এ কি দেখছি….কি বিভৎস!মায়ের মুখের একদিকটা এইভাবে পুড়লো কিভাবে?যেন কেউ অ্যাসিড বাল্ব মেরেছে ||
মায়ের পরনের শাড়িটা এমনভাবে ছিঁড়লো কে?
ইশ মায়ের কাপড়ে রক্তের ছোপ কেন?চোখ নামাতেই দেখি মেঝেতে লোহার রড আর ভাঙা কাঁচের বোতোল।মায়ের নিম্নাংশ ভেসে যাচ্ছে রক্তে;
সেই সঙ্গে মায়ের করুণ আর্তনাদ ,আমি পারবোনা……..
মায়ের পাশে ছোট্ট সরস্বতী ,যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে ।
তার নিম্নাংশে প্রচন্ড ব্যথা ,শত সূচ বিদ্ধ ।সহস্র লেলিহান কামনা ,ওর ক্ষুদ্র যোনিকে ,বার বার করেছে ,ক্ষতবিক্ষত ||
মায়ের আর এক পাশে লক্ষী ,তার মুখটা যেন বড্ড ভার ।শ্বশুর বাড়ির পণের বোঝায় ,
তার ঝাঁপি হয়েছে খালি ।তাও সে ব্যর্থ পেতে সকলের মন ||
আচমকা ঘুমটা ভেঙে গেলো ।মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো ;যে দেশের মেয়েরা মায়েরা চরম লাঞ্ছিত ;সেই দেশেই কতো ধূমধাম করে মাতৃ আরাধনা !ভাবতে খুব অবাক লাগে ।।
এখন মনে হয় দেশ ছেড়ে দূরে আছি ;ভালোই আছি !প্যান্ডেলে মায়ের মূর্তির দিকে তাকালেই ,
ওই স্বপ্নের দৃশ্যগুলো ভেসে উঠবে ,ঘেন্না হবে নিজের ওপর !পুরুষ জাতির ওপর , যাদের কাছে নারী ভোগ্য পণ্যছাড়া কিছু নয় — সে সন্তান ,স্ত্রী বা মা যে রূপেই হোক না কেন……!